কবিতার কালিমাটি ১৪১ |
বুদবুদ
রোজ ভ্রান্তির কবলে পড়ি
আর ক্রমশ ডুবে যেতে থাকি
কতদূর ডুবে যাই? জীবিত না মৃত?
কিছুই বুঝি না আমি, শুধু বুদবুদ
ওঠে
তোমরা কেউ বুদবুদ দেখতে পাও?
যে হাতে সরাও জল, জলে জ্যোৎস্না
লাগে
হয়তো বুদবুদগুলি ফুল হবে তোমার
ছোঁয়া পেলে
অবিরাম স্নানের দৃশ্য মুদ্রিত করে
চলে যায় দিন
সময়ের অ্যালবামে তোলা থাকে শৈল্পিক
বিভাস
তুমি তার ক্রিয়া বোঝ, চুম্বনের
পরমার্ধে সেসব রঙিন
এই জল বহুদূর, তরঙ্গ উত্তাল করে
সমস্ত প্রত্যয়
প্রার্থনার সমূহ সংগীত ভেসে যায়
ভ্রান্তির কলরোলে ভাষাহীন শব্দহীন
হলে
শুধুই বুদবুদ ওঠে একান্ত নিভৃতে...
অপমান
রক্ত হিম হইতে লাগিল
দলে দলে অপমান আসিতেছে
আত্মরক্ষার কৌশলেরা সবাই পলায়ন
করিয়াছে
একা আবর্জনার স্তূপে দাঁড়াইয়া
আছি
মাথার উপর প্রখর তাপ পতিত হইতেছে
তৃষ্ণা পাইলেও জল চাহিবার কেহই
নাই
অপমানদিগকে কী বলিয়া সম্বোধন করিব?
তাহাদের সহিত আমার কী সম্বন্ধ?
ভাবিতে ভাবিতে ঘর্মাক্ত হইয়া পড়িয়াছি
আমার বিবেক বিষ লইয়া অপেক্ষা করিতেছে
আমার চেতনা নিরন্তর ক্রন্দন করিতেছে
আমার হৃদয় বিগলিত হইয়া ঝরিতেছে
আমার চিত্ত নির্বাক হইয়া প্রহর
গুনিতেছে
অপমানেরা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জ্বালাময়
ছুরি আনিবে
অপমানেরা বিষমাখা তির আনিবে
অপমানেরা অগ্নিস্ফুলিঙ্গের বাণী
আনিবে
আমি মনে মনে বিমূঢ়কে ডাকিতেছি
অস্বস্তি আসিয়া গলা ধরিয়া ঝুলিতেছে
আহা আমার কণ্ঠরোধ হইতে লাগিল
বুঝিতে পারিলাম দীর্ঘশ্বাস বাহির
হইয়া ছুটিতেছে
স্মৃতিদের কথা
স্মৃতিরা সবাই ফিরে আসে
পুরনো ঘরদোর জানালা কপাট
রংচটা যৌবনের রক্তরাগ
পাখি উড়ে যাওয়া শুকনো ডাল
সব আছে— মৃত ও জীবিত বসন্তরাও
শুধু সম্মোহন নেই কোথাও আর
ভরা কলসির ছলাৎ ছলাৎ
শ্রাবণের জোনাকির বাঁশবন
নতুন ছিপের মাছ তড়াপ তড়াপ
কালি পড়া লন্ঠনের কাচ
উঠোনে হাওয়ায় গল্প জমে
গল্পে গল্পে সারারাত নাচ
প্রথম তাম্বুলে মুখ লাল
প্রথম চুম্বনে বুক ধড়ফড়
জ্যোৎস্না নিধি, জ্যোৎস্না নিধি
প্রথম রাতজাগা প্রহর
তারপর স্বপ্নে কেঁপে ওঠা, কেঁপে
কেঁপে ওঠা
আজ আর আলো নেই স্মৃতির কঙ্কালে...
অভাবনীয় লিখেছেন কবি।
উত্তরমুছুন