কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / ষষ্ঠ সংখ্যা / ১২৬

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / ষষ্ঠ সংখ্যা / ১২৬

মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২৫

শান্তম

 

শুদ্ধ ধূসরতা থেকে নিঃসারিত আলোয় আলোকিত কবিতা



অপ্রাপ্য বোধিং / তপজা মিত্র / বইওয়ালা প্রকাশন / প্রচ্ছদশিল্পী / বিনিময় মূল্য ১০০ টাকা

শুদ্ধ ধূসরতা থেকে নিঃসরিত আলোয় আলোকিত কবিতার স্রষ্টা কবি তপজা মিত্র। আশ্চর্য কবিতায় কালী লিখেন ‘রামকৃষ্ণ কবিতা’। খেয়াঘাটে এসে থামে তোতাপুরীর নৌকো।

কবি তো সন্ন্যাসী তাই কবির উচ্চারণে প্রকৃতি শুদ্ধ হয় নদীর হাতে উঠে আছে পদ্ম, সে হয়ে ওঠে পুণ্যতোয়া। তাঁর কবিতায় মানুষ ও প্রকৃতি এবং মানুষ ও দেবতা অভিন্ন।

সত্য এই যে তপজা মিত্র-র কবিতা পড়লে অন্তর শুদ্ধ হয়। কবির ‘অপ্রাপ্য বোধিং’ কাব্যে ৪০টি কবিতা অত্যন্ত মুন্সিয়ানার সঙ্গে সজ্জিত হয়েছে। কোনও কবিতা কাব্যগ্রন্থটির সার থেকে বিচ্যুত হয়নি।

কবির আনন্দ-বিষাদ পবিত্র হয়ে ওঠে জীবনের মগ্ন সন্ধানে। সে জীবন খুঁজে বেড়ায় আনন্দময় উদার ‘আসমানী সকাল’।

‘অলকানন্দার জলে শিশুপাহাড়ের ছায়া’ দেখে কবি যতখানি বিস্মিত হন, তার চেয়ে বেশি খুঁজে পান জীবনের ইশারা।

বস্তুত সামাজিক মানুষের দৈন্যময় যাপন কবিকে দুঃখিত করে না বরং মহাসিন্ধুর ওপার থেকে এক মহাজীবনকে কবি অন্বেষণ করেছেন তাঁর কবিতায়।

সবচেয়ে আশ্চর্যের কথা তাঁর কবিতা কোথাও কুয়াশাচ্ছন্ন নয়, বরং সূর্যকরোজ্জ্বল। ‘কতদূর নিশ্চিন্দিপুর?’ এই জিজ্ঞাসা তো আবহমানকালের।

কবির ‘গাছ’ কবিতাটি মনের গোপন গহীনে বেজে ওঠছে  ‘তুমি আমার গাছ, আমার শিকড়, আমি তোমার সতৃষ্ণ ডালপালা।’ তাঁর কবিতা আশ্রয় হয়ে ওঠে। সেখানে তৃষ্ণার জল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন কবি স্বয়ং।

তপজা মিত্র 

কবির কাছে এই সমগ্র পৃথিবীই কবিতা। হৃদয়কে আচ্ছন্ন করে রাখা জন্ম জন্মান্তরের পাপ ধুইয়ে তিনি দিতে আহ্বান করেন ভোরের আলো-কে। আর এই আলো-কে, আলোর সূর্যকে বহন করে নিয়ে আসবে কে! সেও কবিতা।

কবিতা আরোগ্যের একমাত্র মাধ্যম। কবির সর্বস্ব  কবিতা। সেই রূপ সেই আবার অরূপ। তাঁর কবিতা এই সময় আমাদের খুব প্রয়োজন ছিল।

তপজা মিত্র-র ‘আনন্দ গান’ নিঃসন্দেহে মুগ্ধ করবে পাঠককে।


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন