কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

শুক্রবার, ২৭ মার্চ, ২০১৫

**** কালিমাটি অনলাইন / ২৩ ****

সম্পাদকীয় 


কালিমাটি অনলাইন ব্লগজিন আমরা শুরু করেছিলাম বিগত ২০১৩ সালের মার্চ মাসে। দেখতে দেখতে দু’বছর তার বয়স হয়ে গেল। এই সংখ্যাটির সঙ্গে জুড়ে গেল তার তৃতীয় বছরে পা রাখার আনন্দঘন মুহূর্ত। তবে অঙ্কের হিসেবে এই সংখ্যার ক্রমিক নম্বর হওয়া উচিৎ ছিল ২৫। কেননা গত ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত নিয়মিত ভাবে তার আত্মপ্রকাশ ঘটেছিলকিন্তু কিছু অপ্রত্যাশিত প্রতিকূলতার জন্য জানুয়ারী ও ফেব্রুয়ারী সংখ্যা প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। যাইহোক তৃতীয় বছরের প্রথম সংখ্যাটি যথা সময়ে প্রকাশ করে আমরা আনন্দবোধ করছি। কিন্তু সেইসঙ্গে একথাও স্বীকার করে নেওয়া প্রয়োজন যে, যে কোনো লিটল ম্যাগাজিনের সঙ্গে যে দুটি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য প্রায়ই জড়িয়ে থাকে, তা হচ্ছে পত্রিকা প্রকাশকালের অনিয়মতা এবং বিনা নোটিশেই প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যাওয়া। তবে সুখের কথা এই যে, মুদ্রিত কালিমাটি পত্রিকা গত ৩৬ বছরে কখনও কিছুটা অনিয়মিত ভাবে প্রকাশিত হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এখনও পর্যন্ত প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়নি। গত জানুয়ারী মাসে প্রকাশিত হয়েছে পত্রিকার ১০১তম সংখ্যা। এবং ঠিক এই ভরসাতেই বলা যেতে পারে, কালিমাটি অনলাইন ব্লগজিনের জীবনও কখনই স্বল্পায়ু হবে না, তবে কোনো বিশেষ কারণে কখনও অনিয়মিত হতেও পারে।
    
সম্প্রতি কলকাতা বইমেলা ২০১৫ সম্পন্ন হলো কলকাতার মিলন মেলা প্রাঙ্গনে। এটি একটি আন্তর্জাতিক বইমেলা। বাণিজ্যিক শিল্প সংস্থার বই প্রকাশনার পাশাপাশি লিটল ম্যাগাজিন বই প্রকাশনার সহাবস্থান। এ বছরের বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে মুদ্রিত  ‘কালিমাটি’ পত্রিকার ১০১তম সংখ্যা। এই সংখ্যার বিষয় : পরকীয়া। এছাড়া প্রকাশিত হয়েছে একটি ঝুরোগল্প সংকলন, ‘ঝুরোগল্প ১’। এই বইটি প্রকাশিত হয়েছে রোহণ কুদ্দুস পরিচালিত ‘সৃষ্টিসুখ প্রকাশনা’ থেকে। এই সংকলনে চব্বিশ জন গল্প লেখকের দু’শ চল্লিশটি ঝুরোগল্প আছে। এই ঝুরোগল্পগুলির প্রায় সব গল্পই ইতিপূর্বে প্রকাশিত হয়েছিল ‘কালিমাটি অনলাইন’ ব্লগজিনের ‘কালিমাটির ঝুরোগল্প’ বিভাগে। আমরা খুবই আনন্দিত, কেননা এই পত্রিকা ও বই পাঠক-পাঠিকাদের কাছে সমাদৃত হয়েছে। তাঁদের প্রতি জানাই আমাদের কৃতজ্ঞতা এবং ভালোবাসা।
২০১৫ সালের কলকাতা বইমেলা যেমন আমাদের ভরিয়ে দিয়েছে আনন্দে, সমৃদ্ধ করেছে পাঠ্যে; আমরা নিশ্চিত ছিলাম, এ বছর বাংলাদেশের ‘একুশে বইমেলা’ও একইভাবে আনন্দিত ও সমৃদ্ধ করবে আমাদের অজস্র সাহিত্যানুরাগী বন্ধুদের। নিঃসন্দেহে তা করেও ছিল। কিন্তু বইমেলার প্রায় শেষ পর্যায়ে বইমেলা প্রাঙ্গনের অনতি দূরেই ব্লগার অভিজিৎ রায়ের নির্মম হত্যাকান্ড আমাদের সবাইকে স্তম্ভিত করে দিয়েছে। নৃশংস সেই হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছে সারা পৃথিবীর শুভবুদ্ধিসম্পন্ন সব মানুষ। বাস্তবে সেইসব হত্যাকারীদের কী বিচার ও শাস্তি হবে, তা ভবিষ্যতই  বলতে পারেকিন্তু আমরা এই ঘৃণ্য হত্যাকান্ডের  প্রাসঙ্গিকতায় একটি ভবিষ্যৎবাণী করতেই পারি : অভিজিৎ ও বন্যা, তোমরা এই  পৃথিবীতে যে সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য এভাবে লড়াই করে গেলে, একদিন সেই সত্য প্রতিষ্ঠিত হবেই। এবং পৃথিবীটা সেদিন শুধুমাত্র তোমাদের মতো মানুষের জন্যই সব মানুষের বাসযোগ্য হয়ে উঠবেতোমাদের শ্রদ্ধা ও সেলাম জানাই।

আমাদের সঙ্গে যোগাযোগের ই-মেল ঠিকানা :

দূরভাষ যোগাযোগ :           
0657-2757506 / 09835544675
                                                         
অথবা সরাসরি ডাকযোগে যোগাযোগ :
Kajal Sen, Flat 301, Phase 2, Parvati Condominium, 50 Pramathanagar Main Road, Pramathanagar, Jamshedpur 831002, Jharkhand, India
     





সম্পাদকীয়

কালিমাটি অনলাইন / ২৩


কালিমাটি অনলাইন ব্লগজিন আমরা শুরু করেছিলাম বিগত ২০১৩ সালের মার্চ মাসে। দেখতে দেখতে দু’বছর তার বয়স হয়ে গেল। এই সংখ্যাটির সঙ্গে জুড়ে গেল তার তৃতীয় বছরে পা রাখার আনন্দঘন মুহূর্ত। তবে অঙ্কের হিসেবে এই সংখ্যার ক্রমিক নম্বর হওয়া উচিৎ ছিল ২৫। কেননা গত ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত নিয়মিত ভাবে তার আত্মপ্রকাশ ঘটেছিলকিন্তু কিছু অপ্রত্যাশিত প্রতিকূলতার জন্য জানুয়ারী ও ফেব্রুয়ারী সংখ্যা প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। যাইহোক তৃতীয় বছরের প্রথম সংখ্যাটি আজ প্রকাশ করে আমরা আনন্দবোধ করছি। কিন্তু সেইসঙ্গে একথাও স্বীকার করে নেওয়া প্রয়োজন যে, যে কোনো লিটল ম্যাগাজিনের সঙ্গে যে দুটি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য প্রায়ই জড়িয়ে থাকে, তা হচ্ছে পত্রিকা প্রকাশকালের অনিয়মতা এবং বিনা নোটিশেই প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যাওয়া। তবে সুখের কথা এই যে, মুদ্রিত কালিমাটি পত্রিকা গত ৩৬ বছরে কখনও কিছুটা অনিয়মিত ভাবে প্রকাশিত হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এখনও পর্যন্ত প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়নি। গত জানুয়ারী মাসে প্রকাশিত হয়েছে পত্রিকার ১০১তম সংখ্যা। এবং ঠিক এই ভরসাতেই বলা যেতে পারে, কালিমাটি অনলাইন ব্লগজিনের জীবনও কখনই স্বল্পায়ু হবে না, তবে কোনো বিশেষ কারণে কখনও অনিয়মিত হতেও পারে।
    
সম্প্রতি কলকাতা বইমেলা ২০১৫ সম্পন্ন হলো কলকাতার মিলন মেলা প্রাঙ্গনে। এটি একটি আন্তর্জাতিক বইমেলা। বাণিজ্যিক শিল্প সংস্থার বই প্রকাশনার পাশাপাশি লিটল ম্যাগাজিন বই প্রকাশনার সহাবস্থান। এ বছরের বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে মুদ্রিত  ‘কালিমাটি’ পত্রিকার ১০১তম সংখ্যা। এই সংখ্যার বিষয় : পরকীয়া। এছাড়া প্রকাশিত হয়েছে একটি ঝুরোগল্প সংকলন, ‘ঝুরোগল্প ১’। এই বইটি প্রকাশিত হয়েছে রোহণ কুদ্দুস পরিচালিত ‘সৃষ্টিসুখ প্রকাশনা’ থেকে। এই সংকলনে চব্বিশ জন গল্প লেখকের দু’শ চল্লিশটি ঝুরোগল্প আছে। এই ঝুরোগল্পগুলির প্রায় সব গল্পই ইতিপূর্বে প্রকাশিত হয়েছিল ‘কালিমাটি অনলাইন’ ব্লগজিনের ‘কালিমাটির ঝুরোগল্প’ বিভাগে। আমরা খুবই আনন্দিত, কেননা এই পত্রিকা ও বই পাঠক-পাঠিকাদের কাছে সমাদৃত হয়েছে। তাঁদের প্রতি জানাই আমাদের কৃতজ্ঞতা এবং ভালোবাসা।
২০১৫ সালের কলকাতা বইমেলা যেমন আমাদের ভরিয়ে দিয়েছে আনন্দে, সমৃদ্ধ করেছে পাঠ্যে; আমরা নিশ্চিত ছিলাম, এ বছর বাংলাদেশের ‘একুশে বইমেলা’ও একইভাবে আনন্দিত ও সমৃদ্ধ করবে আমাদের অজস্র সাহিত্যানুরাগী বন্ধুদের। নিঃসন্দেহে তা করেও ছিল। কিন্তু বইমেলার প্রায় শেষ পর্যায়ে বইমেলা প্রাঙ্গনের অনতি দূরেই ব্লগার অভিজিৎ রায়ের নির্মম হত্যাকান্ড আমাদের সবাইকে স্তম্ভিত করে দিয়েছে। নৃশংস সেই হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছে সারা পৃথিবীর শুভবুদ্ধিসম্পন্ন সব মানুষ। বাস্তবে সেইসব হত্যাকারীদের কী বিচার ও শাস্তি হবে, তা ভবিষ্যতই  বলতে পারেকিন্তু আমরা এই ঘৃণ্য হত্যাকান্ডের  প্রাসঙ্গিকতায় একটি ভবিষ্যৎবাণী করতেই পারি : অভিজিৎ ও বন্যা, তোমরা এই  পৃথিবীতে যে সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য এভাবে লড়াই করে গেলে, একদিন সেই সত্য প্রতিষ্ঠিত হবেই। এবং পৃথিবীটা সেদিন শুধুমাত্র তোমাদের মতো মানুষের জন্যই সব মানুষের বাসযোগ্য হয়ে উঠবেতোমাদের শ্রদ্ধা ও সেলাম জানাই।

আমাদের সঙ্গে যোগাযোগের ই-মেল ঠিকানা :

দূরভাষ যোগাযোগ :           
0657-2757506 / 09835544675
                                                         
অথবা সরাসরি ডাকযোগে যোগাযোগ :
Kajal Sen, Flat 301, Phase 2, Parvati Condominium, 50 Pramathanagar Main Road, Pramathanagar, Jamshedpur 831002, Jharkhand, India
     





**** কথনবিশ্ব ****


ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত

লুথার কিং জুনিয়ার ও মায়া আঞ্জেলুর কবিতা





কালো অ্যামেরিকান কবিতা খুঁজতে গিয়ে অনেক ভালো ভালো কবিতা পড়েছি। মায়া অ্যাঞ্জেলু মারা গেলেন কয়েকদিন আগে। নাগরিক অধিকারের লড়াই করেছেন আজীবন। পেয়েছেন পুলিতজার প্রাইজ। আরও আছেন ল্যংস্টন হিউজেস, অ্যালিস ওয়াকার অনেক নাম। এছাড়াও আছেন ফিলিস হুইটলে।  টেক্সাসে থাকাকালীন আমার কাজ ছিল ল্যারি জে রিঙ্গার লাইব্রেরিতে গিয়ে কবিতার বই খোঁজা। একটি সাধারণ পৌর নিগমের গ্রন্থাগার। কিন্তু অজস্র পুস্তক। স্কলারদের বাদই দিলাম। সাধারণ অ্যামেরিকানরাও এত পুস্তকমনস্ক যে ভাবা যায় না।

প্রসঙ্গান্তরে চলে যাওয়া আমার স্বভাব। যাইহোক, আগের কথায় আসি। আমার পড়া সমস্ত আফ্রিকান-অ্যামেরিকান বা ব্ল্যাক অ্যামেরিকানদের লেখার মধ্যে একটা জাতিগত অভিমান কিন্তু বারবার ধরা পড়েছে আমার চোখে। আমি এটাকে বলি সেই মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের আন্দোলনের ধারাবাহিকতা যেন। মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র আমার কাছে কোনোদিন ইতিহাস হবেন না। তিনি ভীষণ জীবন্ত।  জীবিত থাকলে এই মানুষটি অবশ্যই অ্যামেরিকার প্রথম কালো রাষ্ট্রপতি হতেন। যদিও ইনি প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে কতটা জড়িত ছিলেন, আমি জানি না। মার্টিন  লুথার কিং এর ‘I have a dream’ বক্তৃতাটি আমার মতে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ বক্তৃতাগুলির অন্যতম। ইউ টিউব চালিয়ে আমি প্রায়ই শুনি। যতবার শুনি ততবার গায়ে কাঁটা দেয়। হাতে হাত মিলিয়ে ওয়াশিংটন শহরের লিঙ্কন মেমোরিয়ালের আব্রাহাম লিঙ্কনের মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে সেই বক্তৃতা যদি আপনি না শুনে থাকেন, আমি অবশ্যই শুনতে অনুরোধ করবমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে জানতে হলে বা বুঝতে হলে এই বক্তৃতা শোনাটা আবশ্যিক বলে আমার ধারণা। এটা নাগরিক স্বাধীনতা আন্দোলনের দিক নির্দেশকারী একটি ঐতিহাসিক বক্তব্য। ১৯৬৩ সালের অগাস্ট মাসের এই বক্তব্য পেশের ভিডিওটি দেখলে গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে। ‘উই শ্যাল ওভারকাম’ সঙ্গীত গাইতে গাইতে জনতা চলেছে লিঙ্কন মেমোরিয়ালের  দিকে। ১৮৬৩র দাসত্ব অবসানের ঘোষণার পর একশো বছর কেটে গেলেও নিগ্রো এখনও স্বাধীন হয় নি।এই বক্তৃতায় তিনি বারবার বলে উঠছেন, ‘আমার একটা স্বপ্ন আছে’ – কী সেই স্বপ্ন? সেই কালো অ্যামেরিকান ধর্ম সঙ্গীতগায়িকা মাহালিয়া জ্যাকসনও বলেছেন, ‘ওদেরকে স্বপ্নের কথা বোল মার্টিন।কী সেই স্বপ্ন?



এ স্বপ্ন স্বাধীনতার স্বপ্ন। সমবেত আড়াই লক্ষ জনতাকে মার্টিন শোনাচ্ছেন সাদা কালোর ভেদাভেদ অবসানের কথা। সেই জনতা শুধুমাত্র কালো চামড়ার মানুষেরা নয়। সাদারাও আছেন। সাদারাও হাততালি দিচ্ছেন, চোখ মুছছেন। এটা প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে, মানুষের মনুষ্যত্ব মরে যায়নি। আর এই বক্তৃতা রেটোরিকের(Rhetoric) চূড়ান্ত নিদর্শন। প্রতিটি বাক্য, প্রতিটি শব্দ কী অসাধারণ মুনশিয়ানায় গ্রথিত। ‘In a sense we've come to our nation's capital to cash a check. When the architects of our republic wrote the magnificent words of the Constitution and the Declaration of Independence, they were signing a promissory note to which every American was to fall heir. This note was a promise that all men, yes, black men as well as white men, would be guaranteed the "unalienable Rights" of "Life, Liberty and the pursuit of Happiness." It is obvious today that America has defaulted on this promissory note, insofar as her citizens of color are concerned. Instead of honoring this sacred obligation, America has given the Negro people a bad check, a check which has come back marked "insufficient funds."
But we refuse to believe that the bank of justice is bankrupt. We refuse to believe that there are insufficient funds in the great vaults of opportunity of this nation. And so, we've come to cash this check, a check that will give us upon demand the riches of freedom and the security of justice.’

তিনি বলছেন, স্বাধীনতা ঘোষণার সময়ে প্রতিশ্রুতি ছিল সাদা কালোর ভেদাভেদ মুছে দিয়ে জীবনের, স্বাধীনতার ও সুখের সন্ধানে সবার সমান অধিকার নিশ্চিত করার। এ এক এমন প্রমিসরি নোট কালোদের ক্ষেত্রে যার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ হয়েছে, বদলে নিগ্রো পেয়েছে একটা ভুল চেক পর্যাপ্ত টাকার অভাবে যা ভাঙ্গানো যায়নি। আমরা বিশ্বাস করি না সুবিচারের ব্যাঙ্ক দেউলিয়া হয়ে গেছে। আমরা বিশ্বাস করি না অপর্যাপ্ত সুযোগের এই দেশের ভল্টগুলিতে অর্থাভাব আছে। অতএব আমরা আমাদের চেক ভাঙ্গাতে এসেছি, চাহিদামাত্র পেতে চাই স্বাধীনতার সম্পদ আর বিচারের নিরাপত্তা।এই দীর্ঘ বক্তৃতায় উল্লেখ আছে সমস্ত ভেদাভেদ অবসানের স্বপ্নের। সাদা কালো বাচ্চারা হাত ধরাধরি করে চলবে। মানুষের রং দেখে তার বিচার কখনই হবে না, ইত্যাদি ইত্যাদি।

বলা বাহুল্য, এরপরেই ১৯৬৫ সালের সেই বিখ্যাত ভোটিং রাইটস অ্যাক্ট অনুমোদন করে অ্যামেরিকান পার্লামেন্ট। অবশ্যই সাদাদের এক বৃহৎ অংশের দেশব্যাপী সমর্থন ছিল ভেদাভেদ দূর করার এই সংগ্রামের সমর্থনে, নতুবা এই আইন পাস হতো না।

মানব ইতিহাসের দুর্ভাগ্য জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা নেতারা জনগণের রায়ে নয়, আততায়ীর হাতে নিহত হন, যেমন লিঙ্কন, কেনেডি, মার্টিন লুথার কিং, শেখ মুজিব, ইন্দিরা, রাজীব অথবা উধাও হয়ে যান বিতর্কিত ভাবে যেমন নেতাজী। অজস্র উদাহরণ। কিন্তু প্রভাব থেকে যায়। কবি মায়া অ্যাঞ্জেলু যখন মার্টিন লুথার কিংকে প্রথম দর্শন করেন, তখন তিনি সাতাশ, কিং চৌত্রিশ। মার্টিনের ব্যক্তিত্বের  প্রশংসনীয় দিকগুলি হলো তাঁর সাহস, বুদ্ধিমত্তা এবং জ্ঞান। মানুষের জন্য সহানুভূতি ছিল অসাধারণ। ‘ He cared about women. He cared about the poor. He cared about the Spanish-speaking. He cared about Jews. He cared about poor whites, the miners, and those who were having a very hard time. So that even as he was assassinated, he was planning a March on Washington, called the "Poor People's March," in which he had encouraged African Americans, white Americans, Spanish-speaking, Native Americans, Asian Americans, all of us, to join and go to Washington, and sit there in tent cities in the nation's capital, until something was done for the poor.’ বলা বাহুল্য, এই মানুষ  গোটা অ্যামেরিকাকে প্রায় জয় করে ফেলেছিলেন এক আশ্চর্য সমাজবাদের জোয়ারে। প্রেসিডেন্ট হওয়া ছিল সময়ের অপেক্ষা কেবল।



অ্যাঞ্জেলুর ‘Still I Rise’ কবিতাটি সরল এবং অসাধারণ। নেট স্যাভিদের বলব,  একটু শুনুন এই কবিতাটি প্রযুক্তি যখন আছে হাতের কাছে, ইউ টিউব বা  অন্যান্য সাইটে পাবেন। যাঁরা নেট-এ অভ্যস্ত নন, তাঁরা অন্যদের বলুন শোনাতে। পড়া তো সব সময় যায়। পড়ি তাহলে কবিতাটি-

Still I Rise- Maya Angelou
You may write me down in history
With your bitter, twisted lies,
You may tread me in the very dirt
But still, like dust, I'll rise.

Does my sassiness upset you?
Why are you beset with gloom?
'Cause I walk like I've got oil wells
Pumping in my living room.

Just like moons and like suns,
With the certainty of tides,
Just like hopes springing high,
Still I'll rise.

Did you want to see me broken?
Bowed head and lowered eyes?
Shoulders falling down like teardrops.
Weakened by my soulful cries.

Does my haughtiness offend you?
Don't you take it awful hard
'Cause I laugh like I've got gold mines
Diggin' in my own back yard.

You may shoot me with your words,
You may cut me with your eyes,
You may kill me with your hatefulness,
But still, like air, I'll rise.

Does my sexiness upset you?
Does it come as a surprise
That I dance like I've got diamonds
At the meeting of my thighs?

Out of the huts of history's shame
I rise
Up from a past that's rooted in pain
I rise
I'm a black ocean, leaping and wide,
Welling and swelling I bear in the tide.
Leaving behind nights of terror and fear
I rise
Into a daybreak that's wondrously clear
I rise
Bringing the gifts that my ancestors gave,
I am the dream and the hope of the slave.
I rise
I rise
I rise.

আমি উঠে আসছি সমস্ত ধুলো ময়লা বঞ্চনা থেকে। যতই মিথ্যের পাহাড়ে ঢেকে ফেলো, আমি উত্থিত হব অপ্রতিরোধ্যভাবে।

এই অসাধারণ আত্মবিশ্বাসের আর এক জ্বলন্ত উদাহরণের কবিতা ‘দি ফেনোমেনাল উওম্যান’ - নারীবাদেরও বটে। একটি কালো মহিলা তাঁর শরীর নিয়ে রূপ নিয়ে বিন্দুমাত্র উদ্বিগ্ন নন। বরঞ্চ কীভাবে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করছেন সেটা দর্শনীয়।

Phenomenal Woman
Maya Angelou
Pretty women wonder where my secret lies.
I'm not cute or built to suit a fashion model's size
But when I start to tell them,
They think I'm telling lies.
I say,
It's in the reach of my arms
The span of my hips,
The stride of my step,
The curl of my lips.
I'm a woman
Phenomenally.
Phenomenal woman,
That's me.

I walk into a room
Just as cool as you please,
And to a man,
The fellows stand or
Fall down on their knees.
Then they swarm around me,
A hive of honey bees.
I say,
It's the fire in my eyes,
And the flash of my teeth,
The swing in my waist,
And the joy in my feet.
I'm a woman
Phenomenally.
Phenomenal woman,
That's me.

Men themselves have wondered
What they see in me.
They try so much
But they can't touch
My inner mystery.
When I try to show them
They say they still can't see.
I say,
It's in the arch of my back,
The sun of my smile,
The ride of my breasts,
The grace of my style.
I'm a woman

Phenomenally.
Phenomenal woman,
That's me.

Now you understand
Just why my head's not bowed.
I don't shout or jump about
Or have to talk real loud.
When you see me passing
It ought to make you proud.
I say,
It's in the click of my heels,
The bend of my hair,
The palm of my hand,
The need of my care,
'Cause I'm a woman
Phenomenally.
Phenomenal woman,
That's me.

আলোচনায় হয়তো কিছুটা প্রেক্ষাপট ধরা যায়, কবিকে বুঝতে গেলে কবিতাগুলো  পড়তে হয়। মায়া আঞ্জেল্যুর কবিতা নেট ঘাঁটলেই পাওয়া যাবে। পাঠকেরা সময় পেলে পড়বেন। সহজ সরল কবিতাগুলো ভালোই লাগবে।

কালো অ্যামেরিকানদের কবিতা একটি ভালো বিষয়। সময়ান্তরে আরও আলোচনা করববেশি তথ্য ভারাক্রান্ত করলে আমার উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। আমি চাই সাহিত্যের এই অধ্যায় সম্পর্কে মানুষের আগ্রহ বৃদ্ধি পাক।