তেহেরিকি
একশো একচল্লিশ, নোবেলের মেডাল
ছাড়াই।
স্যাকরা খোঁজারও নেই;
উপরন্তু বাকি যত কাফেরের মাগনা বাচ্চারা
ইস্কুলে, পার্কে, ঘরে, পড়ে,
খেলে, বাঁচে,
তাদের বিধর্মী স্রষ্টা ঈশ্বরের
কোলে ভেজে দেব।
ধর্ম যাবে জাহান্নমে।
বামিয়ানে কামানে দেখাইনি,
নিরীহ বোকার মূর্তি
পাহাড়প্রমাণ, পেড়ে ফেলতে অসহ্য খাটনি?
তাই দেখে লোপ্পা ক্যাচ ফেলা
বোকা ফিল্ডারের মতো
বৈঠা হড়কে বেসামাল ঈশ্বরী
পাটনি,
ধর্মের বলটা তার হাত ফসকে
জাহান্নমে পড়লে তখুনি,
খোদার খাসিরা সব নোয়ার
নৌকার কথা ভুলে
‘ওয়েস্টক্সাইটিস’ ভজবে।
নর্দমা-কীড়ার মতো বাঁকা চোখ
মেরে
পিটপিটিয়ে সেটাকেই দেখবে
রাজনীতি।
আমরা জিতবোই জিতবো, অন্ততঃ
যে পর্যন্ত না
জেতার সমস্তখানা মানে চলে
যায়।
জেতার জন্যে জিতবো, হাঘরে
কাফের
সমস্ত ধর্মের সব বই খুঁজে
দেখ্, শেষ অব্দি সবাই
কেবলই জেতার কথা বলে!
সকল ধর্মেই
জয় ছাড়া আর কিছু নেই।
গান, সুর, শিশু, মুক্তনারী,
সম্মুখে এগোনর আবেগ—
বেবাক পিছনে যাবে।
স্বর্গ নামাতে গিয়ে
পৃথিবীতে, নরকের মাটি টেনে আনি!
ওহ্ ভি আচ্ছা?
গ্রামকাব্য
এখন পল্লিতে, মাঠে গ্রামে
কালান্তক সন্ধে নামে,
সকালে, দুপুরে, দিনযানে।
মাস্কেটের খটখট আওয়াজ
ঢাকে,
পিছনের গামছা মোড়া
মুখ।
ইদানীংকার বাংলার দৈনিক
কৌতুক।
রামায়ণ মানে গ্রামদখলের
পালাগান,
অস্বর্গীয় কমেডিতে
ট্রাজেডির নিকষ আখ্যান।
নরক, শোধনাগার, উত্তরিত
স্বর্গ কিছু নেই।
এবং সে কথা হারাধন,
জালাল,
কিম্বা দলের দালাল,
পরিপূর্ণ চেতনায় নিয়েছে
মেনেই।
বট সেও আল্গা হলো,
সত্যযুগের গাছ,
কতদিন খোলা মাঠে যুঝে নিয়ে
ঝড়ের আওয়াজ,
মাটি ধরতে পারলো না?
শুধু
তেপান্তর মাঠে শোনে ধুলো,
তার কারুকাজ,
হাওয়া, তার ভবিষ্যবাণীর
স্বর,
ধু ধু!
ফাঁকা মাঠে কান ঘেঁষে বয়ে
যাওয়া রাবণের চিতা।
কখনো আনীত নয় বলে সে কি
থাকবে অনীতা?
তাকেই আসরে টেনে আনতে,
মার্ক্স তাকে ভুলে
যাও;
বল না অপ্রাসঙ্গিক।
কিন্তু রবীন্দ্রনাথ,
তাও?
এমনকি অচল দান্তে?
গ্রন্থকীট
পুরনো বইয়ের ভাঁজে নিবিষ্ট
আক্রোশে বইপোকা
সব অক্ষর কেটে যাচ্ছে।
আলোকদীপ্তির পর
যত জ্ঞান জমা হলো পৃথিবীর
ভাঁড়ে
তাকে নষ্ট, ভ্রষ্ট করতে
চেয়ে।
আলোর অন্বেষী নয় গ্রন্থকীট,
নিট্শের দোসর—
অন্ততঃ এ ভুল করা কনে দেখা আলো
পছন্দের নয়, তাই পক্ষহীন
নরম শরীরে,
অক্ষরেই সঙ্গমের বিছানার
ওম্
মলত্যাগ, মূত্রত্যাগ,
স্ব-ইন্দ্রিয়বিলাস
একত্র সারতে চায়, বমি করতে
চায়
একথা জেনেও তার উদ্গীরণে বই
ভিজবে না।
ভিন্ন গোত্রের তবু বুকলাইস,
সিলভারফিশ
মথের প্রতীক্ষা করছে,
মলাটের চামড়া কাটা মথ,
টিনিওলা বিসেলিয়েলা, এরকম
আরো এক দুই,
ভাঙবে বাঁধাই পর্বত।
কিন্তু আছে প্রবলতরই এক
কীট,
আরো গ্রন্থি, মজবুত গিঁট
হাতে তার, সমত্তিতাত্ত্বিক
জন লক বলে দেন, যেটুকু
দরকার—
মানে ঠিক যতটুকু এ মুহূর্তে
খেতে-পরতে,
গায়ে ঢাকতে পারো,
না পচিয়ে, নষ্ট না করে,
নিজের শ্রমের বিনিময়ে,
ততটুকু নেয়া যাবে,
ততটুকু ব্যক্তিস্বত্বসীমা।
পাস্তুরের প্রক্রিয়া,
ফ্রিজিং প্রযুক্তি
আর হারমেটিক সিলিং,
অমানুষী রোবটের, সফটওয়্যার ব্যবহার
ভেঙে দেয় জন লকের চতুর
উদারনীতি।
এবং আরো সম্প্রতি,
ই-বি, অডিও বই
সব ভুল কথা নিয়ে গেল
বুকলাইসের সব আয়ত্তের
বাইরে।
কেবল সুদূরে প্রন্থাগারে
কীটদষ্ট হতে থাকে বহু দিন
আগেকার
সংস্করণে অ্যান্টিক্রাইস্ট।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন