কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

শুক্রবার, ২৭ মার্চ, ২০১৫

অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়

বসন্ত কিম্বা ফাল্গুনে




একটা করে প্রজাপতি উড়ে যাচ্ছে। মানুষটা খুলে যাচ্ছে একটু একটু করে। প্রজাপতিগুলো একসাথে একটা মানুষের ছায়া তৈরি করেছিলএই ঘটনার নাম ইলিউশান দিয়ে শান্ত হলো যুক্তিমন। কিন্তু একটা ভয়ের সূত্রপাত হলোশ্মশানে বিশুদাকে দূরে রেখে বসে আছি। কাক উড়ে যাচ্ছে দৃশ্যমতো আগুন ছাড়া আর  কিছু দেখা যাচ্ছে না। বিশুদা একটু একটু করে কমে যাচ্ছে ইলিউশানের রকমে কে শেষ হয়ে গেল তবে! বিশুদা নাকি একঝাঁক কাক। আদতে কোনো ছায়া শেষ হলো একঝাঁক কাকের।

আমার ছায়াতেও সন্দেহ দানা বেঁধেছে। আয়নায় অনেক খুঁজেছি। যদি পূর্বাভাস পাই। আমার শরীরেরও এক মৌচাক আছে হয়তো। প্রজাপতি পাশ দিয়ে উড়ে গেলে শিউরে উঠেছি। তবে কি এবার আমিও খুলে যাব একটা একটা করে! ঠাকুমা সেসব উড়িয়ে বলেছে, বিয়ে হবে তোর। অথচ গায়ে যেদিন শুঁয়োপোকা  চেপেছিল, সবাই মুখ বেঁকিয়ে ফেলে দে ফেলে দে বলে চীৎকার করেছিল। ফেলে  দিয়েছিলাম। কে যেন চটি দিয়ে মেরেছিলবিয়ের আগের সকল বসন্ত পেট ফেটে পড়েছিল মেঝেতে। মাঝেসাঝে ভেবেছি, তবে বুঝি জোনাকি দিয়ে তৈরি আমি।  চোখ দুটোকে দেখে তাই মনে হতোজ্বলছে নিভছে। কোনো না কোনো পোকায়  গিজগিজ করছে একটা শরীরে। কী এক অদ্ভুত ম্যাজিকে মানুষ লুকিয়ে রাখছে  সেসব। বয়সের ভুলে কেউ কেউ ব্রণ ভেবে শরীরেরই জোনাকি মেরে ফেলছে চোখের ডাক্তারের কাছে গিয়ে বলেছে, রাতে ভালো দেখতে পায় না। চাঁদ চিনতে  পারে না। জোনাকি দেখতে পায় না।




এই পোকাসর্বস্ব শরীরকে আড়াল করতে গন্ধ রঙ ছড়াই গলা-বগলে পাউডার মেখে দেখাই, আমি বেশ পরী-পরী। নিজেই নিজের প্রেমে পড়ে পোকাকে ভুলে  যাই যদিও আগুনের সামনে এসে বড় অসহায় হয়ে পড়ে বোরোলীন কোনো  ভণিতা চলে না। মোম গলিয়ে ভেতর থেকে বের করে আনে পুঁটুলি। হাড়গোড় দেখিয়ে বলে- যা পুড়ে গেল সেসব তো পোকা। আলোর থেকেও আগুনকে বড় সত্য মনে হয়। ছায়ার জন্মে আগুনের হাত থাকে না। রূপকথার গল্পে মশাল নামের কোনো চরিত্র থাকে না। তাপই প্রকৃত শক্তি, যা কিনা মানুষকে পোকা  কিম্বা শরীর থেকে আলাদা করে। কাঁপতে থাকা কুকুরটিকে আদর করলে লোকটার মেঘ গলতে থাকে। বৃষ্টিপোকা বেরিয়ে আসে ঝরে পড়ে চোখ থেকে। অনেকটা কষ্ট রঙের দেখতে। পোকা জমাট হলে বরফ হয়। মনখারাপ বয়ে যায় উত্তর থেকে দক্ষিণেপ্রেমিকা জানালা বন্ধ করে। কাছাকাছি হয়ে গুমোট মাখিয়ে দেয়।  পোকা নেচে ওঠে পাতায় পাতায়। একগাছ খুশি জ্বলে ওঠে ফেব্রুয়ারির হাওয়ায়। নতুন ফুল ফুটলে শরীর জানতে পারে। ভ্রমর পাঠাই। জলবায়ুর নাম দেয় বসন্ত।

1 কমেন্টস্:

  1. `বেস্ট` শব্দটা হয়তো আপেক্ষিক, কিন্তু ওইটাই রাখলাম এই অনুভব, এই রচনার জন্য।

    উত্তরমুছুন