কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

শুক্রবার, ২৭ মার্চ, ২০১৫

মোনালিসা চট্টোপাধ্যায়


আকাশদুহিতা  


বৃষ্টি বজ্রের বেদনা নেই, যা আছে স্বাধীন সাড়া
মেঘে তাই নতুন নয়নতারা না বলা কথার কথা
হয়ে ভেসে যায় হাওয়ায় হাওয়ায়
আকাশ ভেঙেছে মেঘ
বজ্র থেকে বানিয়েছি বৃষ্টিবীণা, মেঘ থেকে অজবীথি,
অন্নপাত্রে অবিচল পরীক্ষিত মন মুখের জলছাপ
সবুজের শীতে, একি বৃষ্টি অবতল সমতলে!
কান্নায় মেপেছি অশ্রু, প্রতিটি অশ্রুর ফোঁটা অগ্নির অতীতচারী৷
আমি সেই মেয়ে যে জল বইতে শিখি মেঘ হয়ে
আমি সেই মেয়ে যে বজ্রকে অঞ্জলিবদ্ধ করেছি নতুন খেলাজলে৷
অতিথিবৎসলে নামিয়েছি জল, আজ তবে কেন বলো অতিবৃষ্টি?
আমি শুধু জলের হাসিটি নিয়ে অধোগামী আলোরথ৷
রে শোন শোন পাষাণী পাথর জল আলোর কোনো মুখোশ কি আছে?
আমার হাতে বৃষ্টি অন্য হাতে বজ্র নিয়ে একাই আকাশপথে যাই হেঁটে হেঁটে৷
আকাক্ষিত শুভ শব্দেরা সুদূরে কার সাড়া পেয়ে ঝরিয়ে দিয়েছে জল
আকাশদুহিতা তুমি কেন বৃষ্টি মাপো বেদনার অশ্র জুড়ে?



শাস্তি  


ছোট্ট এক দেশলাই যদি দীপাবলি, ছোট্ট এক গল্প যদি
টুকরো মেঘের কোলে উল্কা কোনো বজ্র যদি --
আমি সব বলে দেব কে জল, কে মরু কে বা আমি!
যদি বলতেই হয় আমি কি কেন, শত্রুকে চেনাবো সিক্ত ক্ষত৷
মাথা নিচু করে যে পথ অনন্ত পথে মেশে, যে জলাশয়ে নামে চাঁদ
অহঙ্কারী নব নব ঢেউ দেখি চূর্ণ৷
অমানবিক বলেই
জ্যোৎস্নাকে চুপ করিয়ে বলেছি
আমি তোর দীপাবলী উত্থান একাদশী৷
জীবন বিস্ময়ে লিখি নবজাতকের পূর্বজন্ম৷
ছোট্ট এক পাখির তো মেঘ ওড়ে, মেঘডানা জুড়ে দেখি বৃষ্টিপুতুল ঈশ্বর৷
কে হাসে কে কাঁদে কোন কোন অক্ষরে বসেছে মাত্রা?
এতে কার কি বা যায় আসে --
এইবার দেখি পলাতক আলোকে বিদ্যু নাম দিল কারা!



ছায়াকথা  


গান থেকে সুর তুলে নিয়ে বসাই আমার ঠোঁটে,
শব্দ পর আপন বোধে স্তব্ধ বোবা তাই --
কথা বন্ধ হলে শব্দ আসে জোরে
শব্দ জোরে এলে, শূন্যতা শ্রী-হীন তবু :-

কথাকে বলেছি - চলো তোমাকে বসাবো
অচিন ছায়ার বুকে৷

শব্দকে বলেছি - সো হাত ধরাধরি 'রে  
সুর বুনি খেয়ালি জলের তানে৷

ধ্বনিকে বলেছি - আমি তোমার সন্তান '
দিতে পারো ধ্বনিময় ছায়া?

একটা ইচ্ছের সঙ্গে ইচ্ছে এসে বসে
কথা বন্ধ হলে জোরে শব্দ আসে৷

দেখি শব্দের মানুষী ছায়া আমি আর তুমি...
সব অন্ধ ছায়ারা কথাতেই শব্দ পায় ফিরে,
অবশেষে প্রাণ পেয়ে হেঁটে যায় ছায়াকথা সব৷



অন্য চাঁদ


এখানে বাতাস জলে ডুব দেয়, সবুজ মাছেরা রোদ মাপে
প্রতিটি শালুক সাদা সূর্যালোকে স্তিমিত পথের বাতি  
অথচ জাগ্রত হয় আলোর নির্মা ছায়া,
অন্তরালে জলের বর্ণালী চিত্রে বাতাস একাকী...
পুকুরে ছায়া ভাসে, দুলে উঠি আমি,
অন্য চাঁদ নামে জলে, নতুন চাঁদের জন্ম দেখি...
মঙ্গল আলোয় ছবি বলো কোন পরিশ্রমে তুমি?
চাঁদের প্লাবন জলে, পাতায় পাপড়ি ওকে ছুঁয়ে দেখো  
মাটি তার বাঁক খোলা বাতাসের মহাদ্বীপ ঘুরন্ত ভূচর৷


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন