কালিমাটি অনলাইন

ত্রয়োদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১৩৭

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

ত্রয়োদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১৩৭

শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫

এমটিসি ক্রোনিনের কবিতা

 

প্রতিবেশী সাহিত্য

এমটিসি ক্রোনিনের কবিতা

(ভূমিকা ও ভাষান্তর: গৌরাঙ্গ মোহান্ত)

 


কবি পরিচিতিঃ অস্ট্রেলীয় কবি মার্গি ক্রোনিন এমটিসি ক্রোনিন নামে কবিতা লিখছেন; তিনি নিউ সাউথ ওয়েলস এর মেরিওয়াতে ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন এবং কুইন্সল্যান্ডস সানসাইন কোস্টের ক্যালান্ড্রায় বেড়ে ওঠেন। শিক্ষাজীবনে তিনি আইন ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠ গ্রহণ করেন। গত শতকের নয়ের দশকে আইন শাস্ত্রীয় কর্মে যুক্ত থেকেও তিনি নিজেকে কবি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনি সিডনির প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সৃজনধর্মী লিখনশিল্প বিষয়ে পাঠদান করেন এবং তাঁর পিএইচডি গবেষণাপত্রে আইন ও সাহিত্যের উজ্জ্বল সংগমস্থলকে উন্মোচন করেন। তাঁর প্রথম কাব্য Zoetrope: We See Us Moving ১৯৯৫ সালে প্রকাশিত হয়। এরপর এক ডজন কাব্য অস্ট্রেলিয়া, ইউকে, ইউএসএ থেকে মুদ্রিত হয়। তাঁর প্রবন্ধের বই Squeezing Desire Through a Sieve: Micro Essays on Judgement and Justice (2009) গবেষক হিসেবে তাঁর খ্যাতিকে প্রোজ্জ্বল করে। সবকিছুতেই ধুলো (The Dust in Everything) কবিতাটি পিটার পর্টার সম্পাদিত The Best Australian Poetry (2005) গ্রন্থ থেকে সংগৃহীত।

 

সবকিছুতে ধুলো

সবকিছুতে স্মরণ করুন ধুলো?

তারা-প্রাণী, হৃদয়-প্রাণী, ব্যক্তি-প্রাণী।

আপনার মৃত্যুর পরে সময় থাকবে এমন কোনো গ্যারান্টি নেই।

দুনিয়ার সাথে আপনার মৃত্যুকে ভাগ করে নিতে হবে।

বিষ বা ফুল এবং তাদের এক হওয়ার জ্ঞানের মতো।

আপনার মুখের উজ্জ্বল বেগুনি মাঢ়ি বিবর্ণ হবে এবং তারপর কালো।

'তারপরও করতে হবে' ধারণ করবে এর মুকুট ও বিনাশ।

যে ভাত খান নি তা আর হবে না খাওয়া।

থালায় পড়ে-থাকা খাবার ভুখা বনে যাওয়া আপনার মনে বার বার আসবে ফিরে।

দরজার পাশে পড়ে আছে আপনার ব্যাগ।

তখন থেকে অল্প সময়ের মধ্যে এটি ঝাড়া হবে ও রাখা হবে ঝুলিয়ে।

কখনো শূন্যতর ব্যাগের ছিলো না অস্তিত্ব।

একজন মৃতের বিবিধ জিনিস দিয়ে ছিলো পূর্ণ।

সেগুলো ধুলোর মতো।

আপনার হাতে মাননসই ছিলো যা, ধুলো।

আপনার কাঁধের আকার অনুসরণ করেছিলো যা, ধুলো।

আপনি যা খুলেছেন ও পড়েছেন এবং যার জন্য কেঁদেছেন, ধুলো।

ধুলো, চাঁদ; ধুলো রডোডেনড্রন।

অন্যের চোখের দৃষ্টি ধুলো।

এবং আপনার রয়েছে শূন্য মাথা।

এর মধ্যে আপনার মৃত্যুর পর পুরো প্রথম রাত দিয়েছে উড়াল।

ওই সমস্ত তারা এবং তাদের অভিজ্ঞান-অভ্যাস

আলো ব্যবহার করে কবর পেরিয়ে তাদেরকে রাখছে জীবিত।

তাদের সাথে আপনি চিন্তা করুন এবং সবকিছুতে স্মরণ করুন ধুলো।

ধৈর্য ধরে ও চাহিদা ছেড়ে আপনি এবার হয়ে ওঠুন।

কোনো গোপন রহস্য একবার আপনি প্রকাশ করতে চেয়ে থাকতে পারেন।

একটা বাড়ির ইট, রস-ফোঁটা।

বাস্তবতা রসালো ফল, কানে দেবতার হারানো ভ্যা ভ্যা ডাক।

আপনার নিজস্ব চিন্তাভাবনার একটানা শক্তি।

আপনার মৃত্যুর আগে সময় থাকবে এমন কোনো গ্যারান্টি নেই।

সবকিছু অদৃশ্য হতে পারে, ভ্রমণের মতো।

ধুলো প্রতিভাধরের মনে কিছু ঘটাবার জন্য থেকে যেতে পারে।

এবং মৃত কখনো জীবনধারণ না করে থাকতে পারে।

না জাত, না অজাত, পরিবর্জিত আত্মত্যাগ।

যে ভাত তারা খেয়েছেন তা কখনো হয়নি ভুক্ত।

ভাত হচ্ছে ধুলো।

না, ধুলোর শাখাপ্রশাখা।

ছোট কণার মতো এটি বেড়ায় ভেসে।

সেভাবে আপনি নাচতে শিখেছেন এবং সবকিছু করতে।


ক্ষুদ্র অন্ধ বন্য কেঁচোর মতো

আমরা কখনো ভাবিনি ঘুমের বাইরে

আমরা ধ্রুবকে অনুকরণ করি।

আশা আর ব্যর্থ আশা জপে

আমরা আবার অনুমান করি আমাদের নাম,

এবং বলি কীভাবে সেই নাম

আমাদের নামহীন করে তোলে।

বিবর্তনের শৃঙ্গে স্বচ্ছ আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের মতো

আমরা নৈঃশব্দ্যের স্তরে

সশব্দে মোচড় দিয়ে উঠি।

বিশ্বব্রহ্মাণ্ড তার বাহু ভরিয়ে তোলে

প্রথম এক মিলিয়ন প্রেমিককে দিয়ে

যারা বস্ত্র ফেলে আকাশে নগ্ন হয়ে দাঁড়ায়।

অনুপস্থিতির পাখিতে রূপান্তরিত হয়ে তারা পতিত হবে

সকল সৃষ্টি থেকে সত্তাকে বিচ্ছিন্ন করতে,

আর তা দিয়ে গড়ে তুলবে এক শূন্য নীড়।

বিশ্বাসের ক্ষুদ্র কণ্টক দিয়ে

শক্তভাবে বয়নকৃত এ অনধিকৃত স্থানে

সবকিছু পুনর্মিলিত হবে অস্তিত্বহীনতার সঙ্গে।

 

 




0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন