| কবিতার কালিমাটি ১৫২ |
পজিটিভিটি
বিজ্ঞজনেরা পরামর্শ দেন পজিটিভ হতে,
আমি দ্বিধাগ্রস্ত –--
কোন্টা পজিটিভ?
বিদ্যুৎপ্রবাহের দিকনির্দেশ করা হয়েছে পজিটিভ,
যা তার উৎস নেগেটিভ ইলেকট্রন
প্রবাহের বিপরীত।
এটা হয়েছে সমসাময়িক জ্ঞানের অপ্রতুলতার কারণে –-
ফ্যারাডের অনেক পরে এসেছেন
জে জে টমসন --
তাই এই বিভ্রান্তির বোঝা
প্রাচীন নাবিকের অ্যালবাট্রাসের মতো
আজও চেপে আছে শিক্ষার্থীদের
ঘাড়ে।
ভেবে দেখতে গেলে বিভ্রান্তি
স্বতঃসিদ্ধ --
কেউ কি সজ্ঞানে চিন্তা
করে সমান্তরাল রেখাদ্বয় অনন্তে মিলেছে একই বিন্দুতে?
আইনস্টাইনের আগে কেই বা
ভেবেছে
বস্তু আর
শক্তি সততই পরিবর্তনীয়?
তবু চেষ্টা করে যাই পজিটিভ
হতে -- আপাত অর্থ মেনে,
গত্যন্তর নেই---
আমাদের আদিম জনকজননী এটা
মেনে নিয়েছিল বলেই
আমরা আস্ফালন করে চলেছি পৃথিবীর
মাটিতে দাঁড়িয়ে…
মানবজীবন
মোহমুক্তি হওয়াটা ভালোই,
কেননা মোহের থেকে জন্ম
নেয় প্রচুর সংশয়;
আপ্তবাক্য – আমিও বলেছি
একদিন,
আজ ভাবি সম্ভাব্যতা নিয়ে
–
মায়ামোহ নিয়েই তো জীবন,
মোহমুক্তি নিয়ে যাবে কোন্
অভিমুখে?
জীবনের যাত্রাপথে ভুল হয় – ভুল করি প্রতি পদক্ষেপে
–
সে ভুল একান্ত মানবিক,
জীবনের যাত্রাপথে কষ্ট
পাই – কষ্ট দিয়ে যাই প্রিয়জনদের –
সেও এক অনিবার্য বিধান, মুক্তি নেই তার থেকে;
সৃষ্টির বাঁধন পরে স্রষ্টা
যেখানে বাঁধা সবাকার কাছে –
কোন্ মুক্তিকামনা সেখানে
দেখাবে নিষ্কাম মোক্ষের পথ?
মেনে নাও মোহ ভরা ভুলে
ভরা কষ্টে ভরা মানবজীবন,
তারি ফাঁকে ফাঁকে হঠাৎ
হাওয়ায় ভেসে আসা আনন্দ
অঞ্জলি ভরে হৃদয় ভরে নাও – উপভোগ করো –
এমন মানবজনম আর তো মিলবে
না, আর মিলবে না …
আশ্রয়
মায়ের মৃত্যুর দিন মনে থাকে না,
বলা ভালো, মনে রাখার সচেষ্ট
প্রয়াসও থাকে না;
মনে হয় ---
যে মায়ের শরীরের একাত্ম
অংশ হয়ে আমার অস্তিত্বের সূচনা
তার মৃত্যুকে স্বীকার
করার অর্থ আমারও অবলুপ্তি …
হয়তো ভাবনাটাই ভুল
---
জাতস্য হি ধ্রুবো মৃত্যুঃ
এ কথা তো মানতেই হবে;
আমারও মেয়াদ বাঁধা,
তবু এই অনির্দিষ্ট জীবৎকালে
মাকে – আমার অস্তিত্বের
মূলকে –
প্রাণপণে আঁকড়ে ধরে রাখতে
চাই – ধরে রাখি …
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন