কালিমাটি অনলাইন

ত্রয়োদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১৩৭

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

ত্রয়োদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১৩৭

শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫

সর্বাণী ঘড়াই

 

কবিতার কালিমাটি ১৫২


বন্ধুত্ব

কিছু সম্পর্ক অগোছালো বইয়ের মতো অনাদরে পড়ে থাকে চিলেকোঠায়।

কখনো সুতো কাটা ঘুড়ির মত ঘুরপাক খায় শূন্য হওয়ায়,

 

কিছু সম্পর্ক প্রজাপতির মত দূর থেকে রঙ ছড়ায় আবেগী ফুলে,

হৃদয়ের সূক্ষ্ম অনুভূতিগুলো কাঁপন তোলে জলতরঙ্গের মতো।

তখন ভাবনায় ভেসে ওঠে অস্পষ্ট চোখ মুখ তোমার পূর্ণ অবয়ব।

 

ভোরের সূর্য ওঠা

কিংবা কালো মেঘের আড়ালে চাঁদের দ্রুতগতিতে চলে যাওয়া দেখার মধ্যে যে মনের ব্যাকুলতা-

সেও ঠিক সম্পর্কের মতো ভৈরবী রাগের সপ্ত সুরের বন্ধন।

 

যেন সন্তর্পণে বিছানো বালি ঢেউয়ের শত চিহ্ন রেখে যায় নিভৃতে নিঃশব্দে।

তোমার হঠাৎ আগমন

ঝড়ো  হাওয়ায় বজ্রপাতের মত।

 

নিকষ কালো অন্ধকারে তুমি এক মায়াবী সৌন্দর্য।

 

বসন্তবেলা

পলাশ ছুঁয়ে ছুঁয়ে যে রং মেখেছো

হলুদ বসন্তে,

আকাশও ছুঁয়েছে সে রং।

 

যতবার কাছে যাই ঢেউয়ের মতো ,

তোমার নিষ্পাপ মুখ মিলিয়ে দেখে নিই,

কুঁড়ির সাথে।

ভ্রমরার দল, উদাসী কোকিলের সুর

আর নতুন পাতার সাথে।

 

দিব্যি ফাগুন মেখেছো

ভরা গোধূলি বেলায় -

 

যতবার বলতে চেয়েছি,

আমিও মাতাল হব তোমার সুগন্ধ মেখে,

 

ততবার শুধু দূর থেকে চোখের গভীরে

আরো গভীরে ছুঁয়েছি বসন্তফুল।

 

যে পরাগ আমার শরীরে এখন পলাশ ফোটায়,                             

সে তো  তোমারি বসন্ত রেণু।

 

একটা রাত্রির আত্মকথা

রাত যত গভীর হয় চাঁদ তত পূর্ণতা পায়।

ধীরে ধীরে সে গ্রাস করে সমস্ত আলো।

এক সময় নিকষ কালো অন্ধকারে

মহীয়সী রূপ ধারণ করে আলোর বিপরীতে।

চোখ বন্ধ করলে যে শূন্যতা দেখা যায়,

 সেখানে শুধুই তোমার প্রতিমূর্তি ভেসে ওঠে।   

 

অন্ধকারের স্তর ছুঁয়ে ছুঁয়ে শরীরের

নিভৃত গোপন আস্তানায় বাসা খোঁজে সে।

চাঁদের মলিনতার যে সৌন্দর্য

তার ভাস্কর্য ফুটে ওঠে কষ্টিপাথরে, মূর্তিও কথা বলে।

একটা মায়াবী রাতে স্বপ্নরা এসে

সোনার কাঠি রুপোর কাঠি ছুঁইয়ে জীবন্ত করে 

মৃত অশরীরী আত্মাকে।

ভোর রাতে ধীরে ধীরে আলো এসে মুছে ফেলে

সব কথা, সব মায়াবন্ধন।

বিনে সুতোয় গাঁথা সমস্ত রাত্রির কথামালা

ফিরে যায় প্রত্নতত্ত্বের যুগে।


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন