কালিমাটি অনলাইন

ত্রয়োদশ বর্ষ / দ্বিতীয় সংখ্যা / ১২৯

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

ত্রয়োদশ বর্ষ / দ্বিতীয় সংখ্যা / ১২৯

মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫

রাশিদা সুলতানা

 

সমকালীন ছোটগল্প


আমরা দু’জনা

আমার স্বামী অফিস থেকে ফোন করে জানাল, আজকের বিকালটা সে বাসাটা একটু ফাঁকা চায়।  আমি যেন বাচ্চাদের নিয়ে বাইরে ঘুরতে যাই। কাজের মেয়েকেও যেন সঙ্গে নিয়ে যাই। আমি বলি, ‘মেয়ের তো পরীক্ষা সামনে, এর মধ্যে এত সেক্স চাপল ক্যান তোমার?’ সে বলে, একটা নতুন বান্ধবী, তার সাথে দেখা করার জন্য নাকি পাগল হয়ে আছে মহিলা। অফিস থেকে ফিরে আমার দুই মেয়ে আর কাজের মেয়েকে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যাই আমি বেলা পাঁচটার পর। আমার বড় মেয়ে আনিতা  ক্লাস এইটে পড়ে সানবিমস্-এ, ছোট মেয়ে তানিশা কেজি ওয়ানে, একই স্কুলে।

আমি অবশ্য আমার স্বামী ইমরানকে জিজ্ঞাসা করি, ‘এই মহিলাটা কে? বয়স কত? কী করে?’ সে বলে, ‘আপাততঃ গোপন রাখি। তুমিও তো গোপন রাখো তোমার প্রেমিকদের ডেটেইলস।’ আমি বলি, ‘আনিতার কিন্তু সামনে পরীক্ষা, তুমি মাথায় রাইখো। আটটার মধ্যে বাসায় ফিরা আসব আমরা।’

আমার দুইকন্যা, কাজের মেয়েকে নিয়ে খেলছে গুলশান পার্কে। আনিতা ক্লাশ এইটে পড়লেও, তার আচার-আচরণ একদমই বাচ্চাদের মতো। তানিশা বার্বি নিয়ে খেলছে। সে গিয়ে তানিশার হাত থেকে বার্বিটা নিয়ে নেয়। ভ্যা...ভ্যা... তানিশা ভ্যাবানো শুরু করে। আনিতাকে ধমক লাগাই আমি, সে তানিশাকে বার্বিটা ফেরত দেয়।

আমার প্রেমিক জুয়েলকে, মেসেজ লিখি মোবাইলে:

All I wanted you to come

Close to me and kiss me to the core,

Then you might know me

Like no other man

Has ever done before.

মেসেজটা পুরা লেখা হয় নাই, আনিতা এসে বলে, ‘আমি একা একা কী খেলব এখানে? চলো হেলভেশিয়ায় যাই।’ আমি বলি, ‘এত বড় হইছিস, তবু এত ডিস্টার্ব করিস তুই! এখন গিয়া তানিশারে নিয়া খ্যাল্, পরে নিয়া যাব হেলভেশিয়ায়।’

জুয়েলকে মেসেজ পাঠানোর একটু-পর উত্তর আসে। ‘বাবারে, মিটিং-এ আছি। তুই একটু শান্ত থাক, আমি পরে ফোন দিব।’ কিন্তু মিটিং-এ থাকলে সে মেসেজ লিখল কেমন করে। মোবাইলে ফোন করি, ‘আমি তো এখন একদম একা। তোমার মিটিং থাকলে তুমি মেসেজ লিখলা কেমনে?’

ওপাশ জবাব দেয়, ‘সিগারেট খাইতে বের হইছিলাম একটু, তখন মেসেজ লিখছি। আমি তোমারে ফোন করব তো; আধঘন্টা কি একঘন্টার মধ্যে মিটিং শেষ হয়ে যাবে। মিটিংয়ের মধ্যে আর মেসেজ দিয়ো না প্লিজ।’

আরও কিছুসময় গুলশান পার্কে কাটিয়ে আমার মেয়েদের নিয়ে হেলভেশিয়াতে যাই। এর মধ্যে জুয়েলের ফোন আসে। নাম্বারটা দেখে আমি টেবিল ছেড়ে দোকানের বাইরে চলে যাই। জুয়েলের সাথে কথা বলি মেয়েদের দিকে পিছন ফিরে, যেন আমার চেহারা দেখে আনিতা কিছু টের না পায়।

টেবিলে ফিরে আসি বাচ্চাদের কাছে। ভাবি, নিশ্চয়ই এখনও আমার স্বামী তার বান্ধবীর সৌন্দর্য্য উন্মোচনে ব্যস্ত। সে তার মতো ভালো থাকুক, আমি আমার মতো। আমার স্বামী এঞ্জিনিয়ার, সরকারি চাকরি করে। আমি বিদেশি এক প্রতিষ্ঠানে আছি। কেমন করে যে আমাদের দুজনের ইমিউন সিস্টেম নষ্ট হয়ে গেল! যতদূর মনে পড়ে, ফ্লার্ট করতে করতে। আমরা কেউ কারো ব্যাপারে খোঁচাখুঁচি করি না এখন, অনেক প্র্যাকটিক্যাল। তবে শুরুর দিকে খুব অশান্তি, ঝগড়াঝাটি হ’ত। আমি সন্দেহ করতাম ইমরানকে, ইমরান আমাকে; মারামারি, খিস্তি-খেউড়, লেগেই থাকত। এখন একটা গ্র্যামারে চলে এসেছি আমরা। ঝগড়াঝাটি এড়িয়ে চলি, যতটা সম্ভব। কোনো প্রতিক্রিয়াই প্রায় হয় না আর, ইমরানের প্রেমের কথা শুনলে।

মাঝেমধ্যে রাতে আমার স্বামী যখন খুব ভালো মুডে থাকে, তার নানান বয়সী বান্ধবীদের গল্প করে। কলেজে পড়ে এক বান্ধবী আছে তার,এবং এক সিনিয়র বসের বউ, যে কিনা বয়সে তার চেয়ে পাঁচ-সাত বছরের বড়; ভদ্রমহিলা নাকি একদম ক্রেজি ইমরানের জন্য।

ইমরানকে আমি বলি, ‘কলেজে পড়ে মেয়ের সাথে প্রেম করো, আনইজি লাগে না? তোমার মেয়েটা কয়দিন পর কলেজে পড়বে।’

সে জবাব দেয়, আমি তো জোর করে ঐ মেয়েরে আনি নাই আমার কাছে, সে নিজের ইচ্ছায় আসছে। আর এইটা যে কী সেক্সি, তুমি চিন্তা করতে পারবা না। একদম চিংড়ি মাছ একটা ।’

আমি জানতে চাই, ‘আর তোমার বসের বউ? ওই যে, বয়সে তোমার চেয়ে চার-পাঁচ বছরের সিনিয়র। ইজ সি ইন্টারেস্টিং টু?’

ইউ ডোন্নো লুবনা। শি ইজ আ সেক্স ক্রেজি মন্স্টার! সে যে কি আউলা তুমি কল্পনা করতে পারবা না। আমারে দুইদিন পর-পর ডাকাডাকি তার। প্রায়ই টিশার্ট, ওয়ালেট, হাজার-কিছু গিফট দেয়।’

আমি বলি, ‘হ্যাঁ, তোমার নিত্য নতুন টিশার্ট দেখে আন্দাজ করি। কিন্তু ঐ মহিলার তো মেনোপজ হয়ে যাবার কথা, সে সেক্স ক্রেজি হয় কেমনে?’

আমি জানি না, হয়তো হরমোন ট্রিটমেন্ট-ফিটমেন্ট নেয়, এবনরমালি ক্রেজি সে,’ ইমরান জবাব দেয়।

ইমরান আমাকে জিজ্ঞাসা করে, ‘তোমার বয়ফ্রেন্ডও নিশ্চয়ই তোমার জন্য ক্রেজি; তুমি তো দেখতে মাল একটা।’

আমি বলি, ‘জানি না। বাট হি লাভ্স্ মি। দ্যাট আই ওয়ান্টেড।’

ইমরান বলে, ‘তোমাদের এই লাভটাই চরম অপছন্দ আমার। কাউরে পছন্দ হইল, সেক্স করবা, প্রেমে জড়ানোর দরকার কী। মানে, জিম-এ গিয়া এক্সারসাইজ করার মতো। সেক্স একটা এক্সারসাইজ মাত্র। এখানে প্রেমের কী আছে! কাউরে পছন্দ হইল, সেক্স করবা, প্রেমে জড়ানোর দরকার তো নাই।’

আমি বলি, ‘নাগো, এখনও তোমার মতো এত স্মার্ট হই নাই। একজন প্রেমিকে চলে আমার।’

আচ্ছা তোমার প্রেমিকের নাম বলো, আমি জানতে চাই।’

ইমরানের কথার জবাবে আমি বলি, ‘আমি পছন্দ করি না নাম জানাইতে; একটা বিদেশি ব্যাংক-এ চাকরি করে, তুমি তো জানোই।’

ইমরান বলে, ‘তুমি আমাদের বাসায় ডেট করো। আমি বাচ্চাদের নিয়ে বাইরে যাব, কারণ ছেলেরা আনপ্রেডিক্টবল। দেখা যাবে হয়তো ভিডিও কইরা ফেলল, তুমি টেরও পাইলা না। খুব রিস্কি।’

আমি বলি, ‘তুমি চিন্তুা কইরো না। লাগলে তোমার হেল্প নিব।’

তবে ইমরান আমাকে ভালোও বাসে যথেষ্ট। দেশের বাইরে গেলে দামি একেকটা গিফট নিয়ে আসে। আমার টাইফয়েড হয় মাস-ছয় আগে। সারারাত ধরে মাথার পানি ঢালল। শরীর স্পঞ্জ করল। তিনদিন অফিস কামাই দিল। তাছাড়া অফিস থেকে ফিরে প্রায় প্রতিদিনই বসে মেয়ের পড়ালেখা নিয়ে। বইপড়ার অভ্যাস করছে, করাচ্ছে। বাবা হিসাবে তাকে আমার পৃথিবীর সেরা মনে হয়।

এককালে আমরা দু’জন দু’জনকে অন্ধের মতো ভালবাসতাম। বিয়ের চার-পাঁচ বছর ফ্লার্ট করতে করতে ইমরানের ইউনিভার্সিটির বন্ধু জুয়েলের সাথে জড়িয়ে পড়ি নিজের অজান্তেই। আমাকে উচাটন আর তার প্রতি নির্লিপ্ত দেখে ইমরান আন্দাজ করে কোথাও হয়তো প্রেম হয়ে গেছে আমার। খুব বিমর্ষ থাকত সে ; তখন ঝগড়া হ’ত প্রায়ই। আমার প্রেম হয়ে গেছে অন্যত্র, তাকে গুরুত্ব দিচ্ছি না, হয়তো এজন্যেই ইমরান ঝুঁকে পড়ে অন্য নারীতে।

তবে আমার প্রেমিক জুয়েলও তার বউকে খুব ভালবাসে। জুয়েল যখন তার বউয়ের প্রশংসা করে আমার সামনে, মন চায় তার মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে দিই। আমিও বোধহয় ইমরানকে ভালবাসি; তার অফিসের লোকজন যখন তার প্রশংসা করে শুনতে বেশ ভালো লাগে। তাছাড়া কোন দামি গিফট জুয়েলের জন্য কিনতে মন চায় না। আমার স্বামীর জন্যই কিনি দামি সব উপহার। জুয়েল একদিন বলছিল, সে নাকি ইমরানের এক বন্ধুর কাছে শুনেছে ইমরান খুব সেলফিশ। একথা শুনে জুয়েলের উপর খুব রাগ হয়েছিল আমার। মিন টাইপের একটা মানুষ মনে হচ্ছিল তাকে।

কোনোদিন যদি সে বাইরে রাত্রিযাপন করে, আমি আন্দাজ করি, কোথায় যেতে পারে। আব্বা-আম্মা, শাশুড়ি কেউ জিজ্ঞাসা করলে বলি, অফিসের কাজে গেছে। আমিও দেরি করে ফিরলে সে সামাল দেয় মাঝে মাঝে। মিটিং-এ আছে বলে সবাইকে। তবে রাতে আমাকে সেদিন হাজারটা প্রশ্œ করে, ‘সত্যি করে বলো, ডেট করে আসছো না আজকে? আমি তো কাউরে বলবো না। তোমারে তো আমি সবই বলি।’

আমার মোবাইলে জুয়েলের নাম ইরিনা নামে সেভ করা আছে। কারণ আনিতা অনেক সময় মোবাইল ধরে। একদিন জুয়েলের সাথে মেসেজ চালাচালি করছিলাম, রান্নাঘরে কষানো মাংস দেখতে গেছি, আনিতা এসে বলে, ‘মা, তোমার মোবাইলে একজন লিখছে, “বাই, জান।”

আমি ‘দেখি’ বলে মোবাইলটা নিয়ে বলি, ‘এই “জান” মানে হচ্ছে “গো”, মানে যাওয়া। এই যে দেখো, এটা তোমার ইরিনা খালামনির নাম্বার। আমি ফান করতেছি তোমার ইরিনা খালামণির সাথে। আমার ফ্রেন্ড সে।’ পরে আমি বলি, ‘আনিতা, তুমি আর মোবাইলে আমার মেসেজ দেখবে না, মা। বড়দের মেসেজ দেখতে হয় না।’

অফিসের কাজে দিল্লি, কুয়ালালুমপুর, দেশে-বিদেশে বিভিন্ন স্থানে যাই। আমার প্রেমিকও যায় কখনও কখনও আমার সাথে। ইমরান হয়তো আন্দাজ করে। কিছু বলে না। আমারও প্রথম দিকে বেশ কষ্ট হ’ত মানতে তার বহুগামিতা, এখন মেনে নিতে পারি। ভাবি তুই তোর মতো চইড়া খা। সে যখন সব স্বীকার করে নেয়, তখন মনে হয়, অন্ততঃ প্রিটেন্ড করে না তো আমার সাথে। তবু মাঝেমধ্যে ভীষণ ঝগড়া হয়ে যায়। ঝগড়ায় কখনও আমি গালি দেই, ‘ব্লাডি ফাকার, স্কুলে পড়ে বাচ্চা মেয়ে নিয়া ডেট করে। পারভার্ট কোথাকার।’

আনিতা এসে মুখ চেপে ধরে, ‘আম্মু, কাজের মেয়ে শুনতেছে, আশেপাশের সবাইরে বলে দিবে।’ আমার স্বামীও চিৎকার করে, ‘দিল্লিতে টানা একমাস ধইরা ডেট কইরা আইসা আমারে ফাকার কস ক্যান তুই!’ তারপর সে আনিতাকে বলে, ‘তোর মা দিল্লিতে কার সাথে একমাস কাটায়া আসছে জিজ্ঞাসা কর।’

তানিশা আর আনিতা কাঁপতে থাকে। মাথায় আগুন ধরে যায় আমার এসব শুনে। চোখের সামনে যা যা শো-পিস আছে, ফ্লোরে ছুঁড়ে ভাঙতে থাকি একের পর এক। তানিশা চিৎকার করে কাঁদে আতঙ্কে। আনিতা বলে, ‘আম্মু, পায়ে ধরি, থামো।’ আনিতাকে বলি, ‘খোদার কসম, তুই দেখিস কালকে তোর আব্বুরে ডিভোর্স করমু আমি। এতবড় পারভার্ট বদমাইশের সংসার আমি করমু না কিছুতেই। আনিতা কাঁদতে কাঁদতে বলে, ‘আম্মু, পায়ে ধরি। তুমি আব্বুরে ডিভোর্স কইরো না, আমি সুইসাইড করব, আম্মু।’

ইমরান পরেরদিন বা দুইচারদিন পরই হয়তো হাসিমুখে এসে সরি বলবে। বোঝাতে চেষ্টা করবে, বাচ্চাদের জন্য আমাদের ভালো থাকতে হবে। তবু হয়তো আমি ইমরানের সাথে কথা বলতে চাইব না। আমার মেয়েরা বোঝাবে আমাকে,  ‘আম্মু, একটু হাসো, আব্বু তো সরি বলছে। প্লিজ কথা বলো আব্বুর সাথে।’ সেদিন হয়তো ইমরান আমাদেরকে ডিনার করাতে নিয়ে যাবে খাজানা কিংবা ইমানুয়েলস-এ। হয়তো টুকটাক কেনাকাটাও করবে। মুড বেশি ভালো থাকলে হয়তো আমাকে চমৎকার একটা ড্রেস কিংবা গয়না কিনে দেবে।

ঝগড়া শেষ হলে তানিশা জিজ্ঞাসা করবে, ‘আম্মু, তোমরা এত আগলি কথা বলো কেন দু’জন দ্জুনকে? সাউন্ডস সো অফুল!’ আমি হয়তো বলবো, ‘দেখো, রেগে গেলে মানুষ কত আজেবাজে কথা বলতে পারে। কিন্তু এগুলো তো সব মিথ্যা কথা, মা। আমি তোমার আব্বুকে রাগানোর জন্য বলি, তোমার আব্বুও আমাকে রাগাইতে চায়। এজন্য বলে। তুমি মাথা থেকে একদম দূর করে দাও এগুলা।’

ছুটি পেলেই আমরা কক্সবাজার যাই। যাবার আগে হয়তো একটা সন্ধ্যা জুয়েলের সাথে কাটাই। কক্সবাজারে আমরা উৎসবে মেতে থাকি অনুক্ষণ। বয়াতে করে ঢেউয়ের মাথায় ভাসতে খুবই পছন্দ করি। ঢেউয়ে আমি একটু দূরে চলে গেলেই আমার মেয়েরা ভয় পায় খুব। তানিশা, আনিতা দ’ুজনেই চিৎকার করে, ‘আম্মু, ঢেউ তোমারে নিয়ে যাবে, প্লিজ এতদূর যাবা না।’ আরও দূরে চলে গেলে ইমরানও চিৎকার করে যায়, ‘আল্লাহর দোহাই, তুমি আসো, এত সাহস দেখাইয়া না প্লিজ, এতদূরে অন্য একটা মানুষও যায় নাই।’ ওদের কথায় পাত্তা দিই না। ঢেউয়ের মাথায় ভাসতে থাকি। আবার আমার মাথার উপর দিয়ে ঢেউ চলে যায়। পৃথিবীর সবচেয়ে এক্সাইটিং ব্যাপার মনে হয় এটাকে।

ইমরান এক পর্যায়ে ঢেউ ভেঙে ছুটে আসে। চিৎকার করে, ‘প্লিজ এত রিস্ক নিয়ো না। তুমি মরে গেলে আমার সব শেষ।’ আমি ফিরে এলে আমার হাত শক্ত করে ধরে বলে, ‘আমি তোমারে আর সমুদ্রে নামতে দিমু না। কিছুতেই না।’

ইমরানের উৎকণ্ঠা দেখে মুগ্ধ হই। বলি, ‘ আই লাভ ইউ।’ সে জবাব দেয়, ‘মি টু।’

ইমরান আর মেয়েরা সাগরে হাঁটুপানিতে খেলছে। সূর্যরশ্মি সমূদ্রফেনায় ঝিকমিকিয়ে ছলকে পরে আমার স্বামী-কন্যাদের চোখে-মুখে...আর কী মহানন্দে তিনজন দেবশিশু সমুদ্রনৃত্য করছে তালে বেতালে...। খানিক পর ওদের কাছ থেকে একটু দূরে সরে এসে ব্যাগ থেকে মোবাইল বের করে জুয়েলকে মেসেজ পাঠাই  ‘মিসিং ইউ আ লট’।

 



0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন