লিটিল ম্যাগে লেখার
স্বাধীনতা
“ক্ষমতাকে আমি স্বার্থপরের মতো বিরোধিতা করি”।
(পাবলো নেরুদা)
লিটিল ম্যাগে লেখার স্বাধীনতা- বুদ্ধিহীন ছোট বুদ্ধিজীবীর ফর্ম উদযাপন- প্রগদ্য প্রগল্প ফর্ম- আমার স্বাধীন ফর্মচেতনা – আমার অক্ষমতাই আমার সর্বাপেক্ষা বড় সক্ষমতা – my weakness is my uniquest form personified, স্বভাবসিদ্ধভাবেই- সাইকিয়াট্রিক বকবকানিগুচ্ছ...
“আপোষহীন সংগ্রাম”। সেই নব্বইয়ের দশকে আমার
এক সদ্য কমিউনিজমের খাতায় নাম লেখানো তুতো দাদার মুখে বেশ কয়েকবার শুনেছিলাম কথাটা
এবং তা নিয়ে কৌতুকবোধ করতাম। আর আবারো সেই শব্দবন্ধই শুনলাম নতুন করে কিছুদিন আগে,
এক বৃদ্ধের মুখ থেকে। যদিও তার প্রেক্ষিত আলাদা। এক পত্রিকার মাসিক সম্মেলনে গিয়ে
রক্ষণশীলতায় চরম অস্বস্তিতে পড়ে আমাদের পত্রিকার কিছু কপি বিলি করেই কেটে পড়ি। বেশ
কিছু দিন পর তারই পাঠপ্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বৃদ্ধটি বলেন “ আপোষহীন সংগ্রাম করে কি
লাভ? আপনারা পাঠকের কথা একেবারেই ভাবেননি। সকলেই চায় তার লেখা পাঠক, আরো পাঠক, আরো
আরো অনেক পাঠক পড়ুক... তা কে চায় না বলুন তো?” ইত্যাদি ইত্যাদি...
ভদ্রলোককে কিছুই বললাম না। মনে পড়ে গেল “হ্রীং” বইতে আমার লেখা লেখকের
উদ্দেশ্যে পাঠকের খোলা চিঠি -- “পাঠকের মৃত্যু: যে কোন লেখকের যা পরিণতি হতে
পারতো”! এ থেকে অন্ততঃ এটা প্রমাণ করা যায় যে, পাঠক বিষয়ে সচেতন আমি। পাঠকের কথা
কম ভেবে, একটু কম ভেবে - যারা লেখার ও পরীক্ষানিরীক্ষার স্বাধীনতা পায় তা কেবল
লিটিল ম্যাগেই (বা নন কমার্শিয়াল কালচারাল ম্যাগ)। যা ইচ্ছে তাই করার স্বাধীনতা, তাকে যাচ্ছে তাই বললে কিছুই বলার নেই, কিছু যায়ও
আসে না। দেখুন আপনার যা যা দুর্বলতা, তাকে তাকেই প্রবল সক্ষমতা বানানোর - প্র্যাকটিস
করে করে, অধ্যবসায়ে, কৃচ্ছসাধনে-নিজের দুর্বলতাকেই সর্বাপেক্ষা বড় ইউনিকনেস,
সিগনেচার তথা সক্ষমতা বানানোর একমাত্র আঁতুড়ঘর, ধাত্রী মাইকি জয় লিটিল ম্যাগ ও তার
ওপেন স্পেস - ধর্ম, ফরমো ও বর্মচর্চা! হয়ত আপনার লেখা অসংলগ্ন হয়ে যায়, হয়ত প্রপার
বাক্যগঠন করতে পারেন না, হয়ত কনশাস ও আনকনশাস গঠনে আপনি চঞ্চল, সেন্ট্রিফিউগাল,
আনসার্টেন আনডিটারমিনেন্ট, অবসাদ ও মাদকাসক্ত- এ সব নেগেটিভিটিকেই চরম সদর্থকভাবে প্রয়োগ
করা যায়...। তাকে লোকানোর চেষ্টা না করে তাকেই সশস্ত্র বিপ্লবীয় হাতিয়ার করে নিলে
তবে তাই আপনিই ইউনিক হয়, বিষয় ও ফর্ম উভয়তই। যৌনতার বিকৃতি কতদূর
যেতে পারে তা দেখার ইচ্ছে হয়। সাইকিয়াট্রিকের যৌন ইম্পালসকে তবে তপস্যা করে আরো
শানিত অস্ত্র করে ব্যবহার করার বাসনা করি... এসবকেই শৈল্পিক রূপ দিলে স্বভাবসিদ্ধভাবেই
তা অমোঘ ফর্ম হয়ে দাঁড়ায়। হয়তো কেউ কেউ বলবে “ যা লিখছো তার মানে কি দাঁড়ায় বোঝো
তো? বুঝে লেখ তো?” রজ্জুতে সর্পভ্রম উদাহরণ নিয়ে আমাদের ভারতীয় দর্শন
সম্প্রদায়গুলির লক্ষ লক্ষ যুক্তি প্রতিযুক্তি মত মতখন্ডন পড়ে দেখি, তবে আশ্বস্ত হই
এই জেনে যে “জানি না” বলেই এতটা সাহসী এতটা উন্মত্ত হয়ে যেতে পারি...। কেন বোঝাতে
পারছি না, ignorance is and will be always a bliss for me, an endless journey to be an ordinary man… অক্ষমতাকে
সক্ষমতা করে তোলাই আমার সাধনা- তাকেই বিনা কোন সেন্সর অবাধভাবে ফ্লো অফ করে দিলে
তবে ফর্ম ভাষা স্ট্রাকচার আপনিই অভিনব হয় গদ্যে গল্পে, তবে লিটিল ম্যাগই তা ছাপে।
প্রশ্ন ওঠে আনন্দবাজারীয় প্রোডাক্টগুলোয় লিখবো না কেন? একি এথিক্স, মূল্যবোধ?
না, একেবারেই না। প্রোডাক্ট তাদের বেচতে হয়, নিম্নবর্গ থেকে মধ্যভদ্রবিত্ত অবধি
আপামর পাঠকের কাছে পৌছোতে হয়, যা তাকে টাকা-আনা-পাই এনে দেয়। তার ফরম্যাট, তার
রেস্টিকশন, কোড অফ কন্ডাক্টে ব্যবসার খাতিরে সে নিজেই
নিজের কাছে বাঁধা। আর এটা আমার জন্মগত স্বভাব যে আমি সারাজীবন অল্টারনেটই পড়েছি ও
আরো অল্টারনেট লেখার চেষ্টা করেছি। আমি আপোষ করেও, মানে প্রাণপণ চাইলেও গোলগল্প
লিখতে পারব না। এখানে কারোর কিছু করার নেই, কারোরই ব্যর্থতা বা অহংকারের ব্যাপারই
নয় এটা। এমন অনেক লেখক দেখেছি যারা আনন্দবাজারীয় মার্কা গল্প লেখে অথচ মুখে
প্রতিষ্ঠানবিরোধী- আমার প্রযৌনতা (থিওরিটিক্যাল সেক্সুয়ালিটি)
যদি তারা হজম করতে পারে তবে ছাপাক না! ঘৃণা নেই শ্রদ্ধাও নেই, বিরোধও নেই মিতালিও
নেই। দুটো আলাদা স্রোত যে যার মতো বয়ে যাচ্ছে...
এ প্রসঙ্গ উঠল একটা কারণে। ব্যাপার হল পূজা সংখ্যায় সাতটা উপন্যাস লিখতে বাধ্য
থাকা আর তা না পারলে লাথি খাওয়াই ভবিতব্য মেইনস্ট্রিম লেখকদের। এ তাদের চরম
অসহায়তা যে প্রোডিউস করে যেতে হবে, যেতেই হবে... কি লিখছি, তার কোয়ালিটি সব শিকেয়
তুলে প্ল্যান্টের কোকাকোলার বোতল বেরনোর মতো অবিশ্রান্ত লিখে যেতে হবে গল্প,
উপন্যাস, ফিচার, কবিতা, পোষ্টএডিট...। স্রেফ করুণা হয়, সমব্যথী হই। তারা কবিতা
লিখে গাড়ী কিনবে, তবু এ আপোষে করুণাই হয়। লিটিল ম্যাগের লেখক এই অর্থে স্বাধীন, যে
অর্থে সে মাসে দুটো গল্পও লিখতে পারে আবারে ছয়মাস ফেসবুকেও পাত্তা না পাওয়া গেলে
বরং তার কদর বাড়ে...আপন মনের মর্জিতে লেখা, কম কিন্তু ক্লাস লেখা...এবং বিদেশে
কিন্তু সব বিখ্যাত লেখকেরই লেখার পরিমাণ বাংলার বুদ্ধিজীবীদের তুলনায় নগণ্য, শুধু existence বজায় রাখার জন্য লিখি না...এ অহং ও স্বাধীনতা লিটিল
লেখকেরই...
এ বিষয়ে আরো একটি ছোট্ট প্রসঙ্গ। যেহেতু লিটিল ম্যাগের লেখকের লেখা কম এবং এক
একটি ম্যাগ ৩০০ বড়জোড় ৪০০ কপি প্রকাশ করে তাই এইধরণের লেখকদের একই লেখা (সামান্য
বদলে বা হয়ত ভরকেন্দ্রই বদলে দিয়ে) অনেকগুলি ম্যাগে ছাপানোর স্বাধীনতা থাকা দরকার।
দরকার বিগ হাউজের প্যারালাল হতে গেলেই। যে সব পত্রিকার পাঠক কমন নয় সেগুলিতে একই
লেখা ছাপিয়ে পাঠক সংখ্যা বাড়িয়ে নেওয়ার স্বাধীনতা থাকা দরকার বলে মনে করি। কবিতার
কথা জানি না বাট ৮-৯ পাতার এক একটা গদ্য ৩-৪ বার এডিট করে ফাইনাল দাঁড় করানো খুবই
শ্রমসাধ্য দাদা, আর একবার ছাপা হয়ে গেলেই অত কষ্টের সাধনার লাইফ ফুরিয়ে গেল এটা
মানতে আরো কষ্ট হয়। এ বিষয়ে আলোচনা হোক।
ফর্ম নিয়ে কথা বলতে গেলে প্রথমেই বলি – সিগনেচার মাষ্ট... এর কি খুব দরকার
আছে? তুমি তোমার যাবতীয় বিবেকের কাছে সৎ থেকে লিখে যাও, জোর করে সিগনেচার বানানোর
প্রচেষ্টার বদলে স্বাভাবিক টেণ্ডেন্সিকেই লালন করা শ্রেয়। এক একটা টাইমস্প্যানে –
দুই তিন বছর এক থাকে- তারপর এমনিই বদলায়। না বদলালে বুড়ো ভামীয় থোড়বড়ি লেখা ও এক্সিজটেন্স বজায় রাখার অভ্যাসের বদলে পড়া ও লেখা একসাথে থামিয়ে
মাথা শূন্য করে যাবতীয় বেদনা আত্মসাৎ করে নবপর্যায়ের লেখার দিকে যাত্রা করতে হয়। আর
যাদের সিগনেচার তাদের খ্যাতি এনেছে তাদেরই যাবতীয় ভয় তা বদলাবার... লেখক আপনি
ইম্পরট্যান্ট, আপনার সিগনেচার নয়। চোখের সামনে অচলায়তন বামজমানা বিরোধীশূন্য
তৃণমূল হয়ে গেল আর আপনার সামান্য ফর্ম বদলাতে ভয়! তাই এগুলো কোন ক্রাইটেরিয়াই নয়।
নিজের সিগনেচার ব্রেক করে করে নিজেকে নতুন নতুন ভাবে ভেঙে গড়ে নেওয়ার সাহস,
স্বাধীনতা ডেস্পারেটনেস লিটিল ম্যাগই দিতে পারে। স্বভাবগত, অবচেতনগত ইউনিক একটা
স্টাইল অবশ্য স্থায়ীভাবে সবার থাকে। আমার ভুতূড়ে সেন্টেন্স কন্সট্রাকসন এবং যেমন
ইচ্ছে যতিচিহ্ন ব্যবহার। কনশাসের ফ্লোটাকে ব্রেক করতে চাই না বলে দাড়ি আর ব্যবহার করি
না কারণ আমার কাছে লেখা মানে কাউন্সিলারের সঙ্গে কথোপকথন! জাস্ট কমা, হাইফেন, ডটস
এবং এদের কম্বিনেশন। বাক্যদের থার্ড ডিগ্রি
আর পাঠকের চোখকে অস্বস্তি দিয়ে গুরু সুভাষ ঘোষকে শ্রদ্ধা করে যতি ও তার পারমুটেশন
নিয়ে খেলব বলেই লেখা প্র্যাকটিস করে যাই। এবং লিটিল ম্যাগে এ ভূতে পাওয়া গদ্য
ছাপায়, স্বাধীনতা উপভোগ করি।
ফর্মের স্বাধীনতা নিয়ে এ লেখায় এবার আমি “প্রতিষেধক” ১৫তে প্রগদ্য প্রগল্প
সংখ্যায় আমার প্রগদ্য বিষয়ক প্রস্তাবনার ছোট্ট একটি সংক্ষিপ্তসার রাখবো ও তারপর
আবার ফিরে আসব এ লেখার বিষয়ে। তার আগে বলি, ২০১১ এর শুরুতে প্রগদ্য প্রগল্প
কনসেপ্ট আমার মাথায় আসে। নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনার পর এ বিষয়ে প্রাথমিক খসড়াটি
এক বৃদ্ধ গুরুকে পাঠাই (কি ইনোসেন্টই ছিলাম তখন) এবং পাঠপ্রতিক্রিয়া স্বরূপ মূলত
তার তিরস্কারমূলক মেল পাওয়া ও তাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে তার ভিত্তিতে পুনঃসম্পাদিত
দ্বিতীয় খসড়া এবং তারপর আমার দীর্ঘ অজ্ঞাতবাস শেষে ২০১৪ তে গড়ে তোলা হয় বর্তমান
প্রস্তাবনার চিত্ররূপ। মূলত আমরা শূন্যের যারা, তাদের মধ্যে দু একজন ছাড়া আমরা
কেউই থিওরিই জীবিকা করে অ্যাকাডেমিশিয়ান নই। আমরা সাধারণত ক্রিয়েটিভিটি
(লাইফ/বাস্তব/জীনাযাপন) আর থিওরি (স্টাডি/দর্শন) এর মধ্যবর্তী এক মধ্যপন্থার
অবস্থান নিয়ে চলি। স্বাভাবিকভাবেই আমাদেরও
তো বয়স বাড়ছে, লাঙস আর লিভারের বয়স তো বৃদ্ধপ্রতিম, এ মধ্যতিরিশে অলিপাব থেকে
বারদুয়ারি, স্টেডিয়াম থেকে দর্জিপাড়া – রেড কার্পেট আর পাতা নেই। এখন আমাদেরও
অনেকটা সময়ই কাটে বই পড়েই, থিওরির যুক্তিতর্কে মগজের আনন্দ জুগিয়ে এবং এই বাস্তব
পরিস্থিতিতে যা আমার সক্ষমতা ও অক্ষমতা তাদের দুটিকেই পজিটিভ করে নিয়ে লেখায়
ইমপ্লিমেন্ট করে ফর্ম নিয়ে যাবতীয় লিমিটেশনকে আক্রমণ করবো বলেই জন্ম নিল প্রগদ্য-প্রগল্প
কনসেপ্ট।
“আমি বা আমরা কেউই সেই অর্থে তাত্ত্বিক নই - সঘোষিত দার্শনিক নই। লেখা যে লিখি
তা কেবল নতুন করে মাথায় আসা একটি ফর্মকে উদযাপনের জন্য। লেখার বিষয় তো সবসময়ই ১০টা মাথায় ঘুরছে। কিন্তু লেখা হয় তখনই যখন ফর্মটা নিয়ে
খেলা করার তাগিদটা আসে। লেখা লিখি না, ফর্ম
লিখি-ভাষা লিখি। সেই অবিরত ফর্ম অনুধ্যানে
বেরিয়ে এল বর্তমান লেখনী কৌশল। ফর্ম শুধু ফর্মই মেটা ’মর্ফ’ করতে পারে অস্তিত্ব।
প্রস্তাবিত প্রগদ্য প্রগল্প ফর্মে প্রবন্ধ যদি জলবায়ু হয়, তবে গল্প হল
আবহাওয়া। উপপাদ্য ডকু হলে সম্পাদ্য হল ফিকশন। তীব্র আবেগতাড়নার আত্মানুসন্ধানে
প্রাপ্ত থিওরির নির্বাচনোত্তর সত্যনিষ্ঠ স্তরটির প্রয়োগ হল ডকু – প্রবন্ধ। ফিকশন
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার প্রতিক্রিয়া, এক্সপ্রেশন, ম্যাচিওরিটির সঙ্গে বাড়তে থাকা তথ্য
ও চেতনার সম্বন্বয়। যদি কালেক্টিভ আনকনশাস প্রবন্ধ হয় তবে ব্যক্তি অবচেতন গল্প।
৯০ ও শূন্যে গদ্যে গল্পে ক্রমশঃ ব্যাপক জাম্পকাট, প্যারালাল রেফারেন্সের
প্রয়োগ, ২৪ ফ্রেম বাই ক্রিয়ার কাল, জাক্সটাপোজিসন, স্পেস টাইম বিস্তৃত ও
দ্রুতকরণের মাধ্যমে ডাইমেনসন বাড়ানো, দ্রুতলয়তার বিবিধ প্রকল্প, ইন্টারভিউ শিল্প ও
তাকে গদ্যের মধ্যে স্বচ্ছন্দ চলাচলের সুযোগ করে দেওয়া, টেকনোলজির অবাধ ব্যবহার,
পাওয়ার পয়েন্ট রিপ্রেজেন্টেশন ইত্যাদি, যৌনতাকে দেহ থেকে মুক্তি, বিভিন্ন থিওরির
প্রায়োগিক গদ্য-গল্প, ছোট ছোট গদ্য- মুক্ত গদ্য- গপদ্য ও পগদ্য হয়ে উঠল বৈশিষ্ট্য।
ন্যারেটিভ, জার্নালধর্মী, প্রকৃতি ও ইতিহাস আশ্রিত/নির্ভর, ঐতিহাসিক ভূমিজ,
স্ট্রাকচারাল, চরিত্র ও ঘটনার জাদুবাস্তব, সম্পূর্ণত কল্পনা নির্ভর, মূল চিন্তাকে
সামান্য ফর্ম দিয়ে ব্যক্তিগত ডায়েরিমূলক/ব্যক্তিগত গদ্য, গপদ্য-পগদ্য, সচেতনভাবে
নান্দনিক স্মার্ট মেড গদ্য, সাংবাদিক সুলভ গদ্য-গল্প... – এতসব ফর্মের উৎসব আমরা
লিটিল ম্যাগের স্বাধীনতার সূত্রে পেয়েছি। এবং তার সঙ্গে খেলায় নিয়েছি প্রগদ্য
প্রগল্প ফর্মকেও যা উপরিউক্ত বহু ফর্মকে সমর্থন জুগিয়েছে, সপক্ষে চেঁচিয়েছে, নতুন
করে ডেলিভার করতে সাহায্য করেছে ... সমৃদ্ধ করেছে।
এইধরনের ফর্মের মূল প্রতিপাদ্য হল যে লুপ, মোটিফ, আধ্যাত্মিক ও চেতনার থাক বা
আর্কিটাইপ বা সংস্কারে আপনি বিরাজ করেন, তার সঙ্গে সমরেখ তত্ত্ব ও তাত্ত্বিক
শাখাপ্রশাখার সম্পূর্ণ আয়ত্তীকরণ ও উপলব্ধির পর তার উদাহরণস্বরূপ ইন্টারপ্রিটেশন
ভিত্তিক শিল্প সৃষ্টি।
এই বিশ্বায়নের যুগে মানুষ আজ বড়ো অ্যালিয়েনেটেড, একাকীত্বে দুর্বল। তার
প্রকৃতি গেল, প্রকৃতির বিরুদ্ধে জয়যাত্রাতেও সম্পূর্ণ বিজয়লাভ হল না। প্রাচীন কালে
সভ্যতা যখনই উন্নতির দিকে গেছে এক সাধারণ নৈতিক, ধর্মীয়, সাহিত্য বিজ্ঞান ও
সাংস্কৃতিক একতার ব্যাকগ্রাউন্ড লক্ষ্য করা গেছে। এখন কমপার্টমেন্টালাইজেশন বা
পারস্পরিক আদানপ্রদান বা আলাপচারিতার ক্ষেত্র ও ইন্টেলেকচুয়াল নৈকট্য ক্রমশঃ
বিঘ্নিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতেই ডকুফিকশন বা প্রগল্প-প্রন্যাসের প্রয়োজন আছে।
সাহিত্যের মেনস্ট্রিম বিষয় ও ফর্ম বলতে তো শুধু চর্বিতচর্বন মানবীয় সম্পর্ক,
মনস্তত্ব, প্রকৃতিপ্রেম বা ভালবাসা, বিরহ জাতীয় কাতুকুতু। এ লিমিটেশনের বাইরে গিয়ে
আমি আমার স্পেশালাইজেশন ব্যক্ত করলাম তত্ত্ব ও ইন্টারপ্রিটেশন দিয়ে যা একটি মিউজিক
অ্যালবামের মতো কমপ্লিট কমিউনিকেবল প্যাকেজ হয়ে উঠল। প্রতিটি ব্যক্তির, যতই
সাধারাণ হোক, সাধারণ অপেক্ষা বেশী শক্তিশালী একটা দিক, একটা স্পেশালাইজেশন থাকে।
আর তাই যতই সাধারণ হোক সে প্রগদ্য, প্রগল্প লেখার অধিকারী হয় যদি তার সেই বিশেষ
গুণেরই চর্চা করে যেতে থাকে তবে।
আমার কাছে লেখা খুব ক্যাজুয়াল। প্রথমে বিষয় আসে, তারপর রাগ নির্বাচন, ফর্ম
নিয়ে ভাবনাচিন্তা করে কেটে যায় কিছুদিন। তারপর বিষয়োপযোগী ফর্ম পেলে আলাপ, বিস্তার
ইচ্ছামত করে নিই। মূল সুর এক রেখে যেমন ইচ্ছা অ্যারেঞ্জমেন্ট। এবং তা করতে গিয়ে আর্বিটারিনেসই আমার অস্ত্র। গ্রামারের ক্যালকুলেশনের থেকে
এক্সপ্রেশন। প্রাথমিক লেখাটি এডিটিং-এর সময় এত
ভীষণ প্যারাগ্রাফ জাম্বলিং ও প্যারালাল প্লট মাথায় চলে যে কখনো কখনো নিজেই প্রবল
টেনশনে থাকি। এবং তা কাটাই ওই লেখার সঙ্গে নিজের নির্লিপ্তিতে, লেখক বা স্রষ্টা বা
জনক আবেগ ও অহংকার ঠান্ডা নিষ্ঠুর মাথায় হত্যা করে। নিষ্ঠুর বাস্তবকে তুমি
নিয়ন্ত্রণ করতে পারো না, তবে নির্লিপ্তি তো প্র্যাকটিশ করতে পারো...! লেখার প্রেম
নিবেদন প্রত্যাখ্যান করলেই তবে নতুন ফর্ম পাব আমি নতুন লেখায়, একথা ভুলি না। লেখককে
আর কারও জন্য নয়, কোন বাণিজ্যিক এক্সিটেন্স বা অন্য কোন তাগিদে নয়, নিজেই নিজেকে
আবিষ্কার ও চেতনার আর এক স্তর গভীরে প্রবেশ করার অস্ত্র হিসাবে লিখতে হয়। লেখায়
যেমন 2nd, 3rd, 4th এডিটিং-এ এক একটা স্তরে এক এক রকম ফর্ম ও বক্তব্যের ট্রিটমেন্ট চলে, তেমনি ওই
স্তরগুলোয় লেখকসত্ত্বাও গভীর থেকে গভীরতর স্তরে নিজেকে প্রকাশিত ও প্রত্যক্ষ করতে
থাকে। গল্পের চরিত্রের থেকে প্রাথমিক পর্যায়ের লেখকের বক্তব্য, তাকে নিরীক্ষণ করে
এভাবে দ্বিতীয় তৃতীয় গভীরতর স্তরগুলির লেখককে পর্যবেক্ষণ করে যায় আরো গভীরের লেখক,
সাক্ষীগোপালের খেলা এ লেখা! লেখার প্রসেসের মধ্যে সময় ও ক্রিয়ার কাজটাই সাধনা ও
দিব্যদর্শন! কি লিখছি সেটা ম্যাটার কোনদিনই করেনি, দ্বিতীয় তৃতীয় এভাবে n সংখ্যক রিরাইটিং এ লেখা n সংখ্যক রকম বদলে যাবে –
বিষয় হল কীভাবে, কী কী অ্যাপ্রোচে, কী কী ল্যাঙ্গুয়েজে লিখছি আমি... লেখক, এ অহং
থেকে নির্লিপ্ত উদাসীন পুরুষ হয়ে তবেই লেখা যায়। তবে আমি নারী, লেখা নারী ও বিরাট
পুরুষ হয়ে ওঠে পাঠক, কমিউনিকেবলিটি আপনা থেকেই চলে আসে।
প্রগদ্যের যাবতীয় বর্ণনার পর একটা প্রসঙ্গ উত্থাপন না করে পারা যায় না। সেটা
হল লেখায় লেখক, রামায়ণে রামের মতো! লেখকের লেখা তো সবাই জানে, কিন্তু যখন লেখা
নিয়ন্ত্রণ করে লেখককে! প্রগদ্যের, অন্ততঃ আমার যাবতীয় প্রগদ্যে, প্রগল্পে আত্মসমীক্ষণ একটা বড় অংশ জুড়ে থাকে। লেখক লেখায় নিজেই নিজের
যাবতীয় আত্মসমালোচনা করে গিয়ে “অমুকের সমাজ-জিজ্ঞাসা” রিটেন বাই তমুক জাতীয় কোন
সম্ভাবনাই রাখবে না। তার লেখা যে বড়ো ব্যক্তিগতকে ওপেন সিক্রেট করে দিয়ে যায়।
লিজের লেখায় যাবতীয় পাপের সাক্ষ্য রাখে, পরে লেখক হিসাবে নিজেই তার সাক্ষী হয়ে
দাঁড়ায়। নিজের যাবতীয় গোপনতা, দ্বিধা, অবদমিত কাম ও অজাচার চরিতার্থ করতে এবং
নিজেই নিজের সর্বাপেক্ষা বড় সমালোচক হয়ে উঠতে হয় তাকে লেখায়। চলো বিকল্পের আর
কোন বিকল্পই রাখবো না।
এখানে একটা বড় প্রশ্ন উঠবে। ব্যক্তিগত গদ্য, অ্যাবসার্ড গদ্য বলে যাকে আগে
অনেক হ্যাটা করে চেপে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে, যেন এক তাচ্ছিল্য, তাকে ওভারকাম
করেছে শূন্য। ক্রিয়েটিভ গদ্য — না কবিতা বিষয়ক, না গ্রন্থ সমালোচনা, না
জার্নালধর্মী ডায়েরিসুলভ, না ব্যক্তিগত গদ্য—একেবারে স্বয়ং সিদ্ধ স্বয়ম্ভু ছোট ছোট
নান্দনিক স্মার্ট গদ্য (গল্প নয়) রচনায় মাস্টারি করেছে শূন্য। আর প্রচুর অক্সিজেন
যুগিয়েছে এই জাতীয় পুরোনো ফর্মগুলোকে। ব্যক্তিগত গদ্য বলতে কি বোঝায় আজও বুঝলাম
না। তুমি যা, যা তোমার চিন্তা, যা অনুভূতি উপলব্ধি, যা তোমার পারিপার্শ্বিক বাস্তব
পরিস্থিতি দৈনন্দিনতা, যা তোমার সামাজিক অর্থনৈতিক থাক, যা তোমার ক্লান্তি ও
রিজয়েস, নিয়মিত যা পাঠ ও পানাভ্যাস, নিজস্ব দর্শন যা ও স্বপ্ন ও সুষুপ্তি, হস্ত
বিবাহ ও স্বপ্ন মৈথুন... এ সবই বিষয় না হলে আর কী বিষয়, ফর্ম হতে পারে তোমার
লেখায়? সবাই জীবনানন্দ হতে পারে না যে নক্ষত্রের ঘাড়ে, শঙ্খচিল আর মৌরিফুলের ঘাড়ে
দোষ চাপিয়ে সারাটাজীবন কল্পনা প্রতিভার আশ্রয়ে বেঁচে থাকতে পারে...। প্রগদ্য বা যে
কোন ফর্মেই অভিজ্ঞতা বা জীবনদর্শনের গিগাবাইট গিগাবাইট ডকুমেন্টেশন নিহিত থাকে, একটু
আলাদা করে জীবন যাপন থেকেই একটু আলাদা ফর্ম জন্মায়। যেখানে ব্যক্তি ও ব্যক্তিগত
নেই, সেখানে কোন ফর্মও নেই।
ছেলেবেলা থেকেই আমার বড় শখ ছিল নিজেকে সাধারণের থেকে আলাদা ভাবার। সকলেরই তাই
থাকে। ছেলেবেলা থেকেই শুনে এসেছি সাধারণের মধ্যে কবিদের নিয়ে কেমন যেন একটা
তাচ্ছিল্য, হেয় করার প্রবণতা। কবি হদ্দবোকা, কবি আঁতেল... অমোঘ এই ছড়া “কবি কবি
ভাব/ছন্দের অভাব” আমার শিশুমনে প্রবল দাগ কেটেছিল, যে সংস্কার ছাড়তে আমি কখনো
পারিনি। আর তাই কবিতা লেখা হল না আমার, ছন্দে লেখা তো সুদূরপরাহত। প্রকৃতপক্ষে কী,
লেখক হওয়ারও কোন কথাই ছিল না আমার। আমার বেসিক্যালি কোনও দিনও কোন বিষয়েই কোন
‘দাদা’ ছিল না। লেখার জগতেও ৯০, ৮০ নয়, সত্তরের তো প্রশ্নই নেই – কখনও কোন দাদার
সঙ্গেই ঘনিষ্ঠতা বা শিষ্যত্ব নেই আমার। সুতরাং আমার যা তা সবই অশিক্ষা বা
স্বশিক্ষা। শূন্যই আমার বৃত্ত।
So long in my life, I was a good learner. কবিতা লেখা
শিখে নেওয়াটা এমন কিছু শক্ত ছিল না আমার
কাছে, কিন্তু দেখলাম আমার শরীর মনের কবিতা লেখার মতো গঠন নয়। ক’জন এটা বুঝে লেখে
যে যা সে লিখছে সেটা তার আধারের জন্য সবচেয়ে সুইটেবল, যাকে বলে তোমার যা ধর্ম তুমি
আচরণ করে যাও। স্বধর্মে নিধনং শ্রেয়/পরোধর্ম ভয়াবহঃ। এবং যদি তোমার জীবন ও চেতন
অবচেতন চরিত্র যদি হয় অসংলগ্ন, যদি হয় কেন্দ্রহীন সেন্ট্রিফিউগাল, যদি হয় স্বভাব
নিম্নবর্গ, যদি হয় অবচেতন এত শক্তিশালী যে সময়হীনতা, কার্যকারণহীন
যুক্তিশৃঙ্খলহীনতা হয় একেবারে অন্তরের, জিনের স্বভাব—তবেই এই এই বৈশিষ্ট্যগুলো
লেখার ফর্ম হিসাবে ব্যবহার করা উচিত। ওপেন এন্ডিং তখনই প্রয়োগ করা উচিত সত্যিই
হাতের সামনে অসংখ্য সম্ভাবনা, তুমি বসে বসে খালি ভেবেই যাচ্ছো, যখন তোমার কোন
সিদ্ধান্ত কোন সম্পর্কই স্থির নয়, ক্রমাগত বদলায়, ইনডিটারমিনেন্ট—তখন আপনা থেকেই
ওপেন এন্ডিং চলে আসে জীবনের প্রথম লেখা থেকেই – যাবতীয় ফর্ম চলে আসে একেবারে গোড়া
থেকেই যদি ব্যক্তি তার আধার ও চরিত্রধর্ম যেমন হয় সেইভাবেই লেখা হয়। সাধু চলিত
গুরুচণ্ডালি, বাছা বাছা তৎসম শব্দ ব্যবহার, ফন্ট নিয়ে
অর্নামেন্টেশন, উচ্চারণভিত্তিক বানানের প্রয়োগ যেখানে যেখানে বিশেষ দৃষ্টি
আকর্ষণের প্রয়োজন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সবই ব্যবহার করে দেখেছি। উচ্চারণভিত্তিক বানানই হল
ভবিষ্যৎ--কারণ এ প্রজন্ম এসএমএসে কথা বলে। প্যারাগ্রাফে
প্যারাগ্রাফে লিনিয়ারিটি ব্রেক করতে ব্যাপক কাট অ্যান্ড পেস্ট চালাই। আর মাষ্টারি করেছি এভাবে লেখায় যে গল্পে পাঠক যে কোনো প্যারাগ্রাফ
পড়ে অন্য যে কোনো প্যারাগ্রাফে চলে গেলেও রিডেবিলিটি নষ্ট হবে না... যাবতীয় কোহেশন
ও ঘটনাবর্জন করে লেখাটা একটা আর্ট, যে কোন মিডিয়ামে। এর বিপরীত দিকও সমান সত্য।
ধোপদস্তুর, রক্ষণশীল, প্রতিক্রিয়াশীল মধ্যমেধা ভদ্রবিত্ত হলে তবে ভাবের ঘরে চুরি
কোরো না। যা তোমার ধর্ম তাকে চিনে সেমত ফর্ম বেছে নিয়ে লেখো, আর সেখানে নিজের
স্বাধীনতায় কাউকে হস্তক্ষেপ করতে দিও না, নিজেকেও না, লজ্জায় আপোষেও না। যদি মূলচিন্তা
লিখতে স্বচ্ছন্দ হও, যদি দিনের পর দিন নো ওয়ান কলস্ টু অর্ঘ্য, তবে নিজেই নিজের
সঙ্গে বকবক করার জন্য লেখা লিখি। একমাত্র না লিখলেই নয়, পায়খানা হবে না মনে হলে
তবেই লেখো আর জীবন যা তাকেই ফর্ম করো, নতুন কিছু করব বলে নতুন কিছু করার আর দিন
নেই। যখন পেটের খিদের মতো স্পষ্ট, অনুভূতি উপলব্ধ হবে ফর্ম, তখনই লেখো। ইউনিকনেস তবে আপনিই আসবে।
আমি বিশ্বাস করি এই পৃথিবীর প্রতিটা মানুষের ভাষা আলাদা আলাদা। যৌথ অবচেতনের
মতো ভাষা, তাকে ইনহেরিট করেছি, গঠনটা এক, কিন্তু আমরা প্রত্যেকে তাকে নিজের নিজের
মতো করে, নিজের আধার অনুযায়ী ইমপ্লিমেন্ট করেছি। শব্দ ও তার অর্থের প্রক্রিয়া আরবিটারি,
প্রতিটি n সংখ্যক চেতন অবচেতনে n*n ধরণের। ফিঙ্গারপ্রিন্টের মতো প্রতিটি মানুষের ভাষাও তাই ইউনিক।
আপনি ২-৩ মাস যাবৎ শুধু কমলকুমার পড়ে যান, তারপর যদি তার প্রভাবে লেখেন তবে তা
কমলকুমারেক্স। এভাবে আমি মানিকেক্স, জীবনানন্দীয়, বিনয়ী – অনুসরণে গদ্য গল্প
না-কবিতা এককালে লিখেছি। কিন্তু এই যে বিনয়ী তা একান্ত আপনারই বিনয়ী। n সংখ্যক লেখক অনুসরণ করলে n সংখ্যক ইউনিক
বিনয়ী হবে। ব্যাপার হল একজন ব্যক্তি – সে অসীম সম্ভাবনাময়, অনন্ত প্রতিভাধর,
এবিলিটি ও প্রোবাবিলিটির অ্যাটম বোম এক একজন। মানুষে বিশ্বাস রেখে দেখি ব্যক্তিই
ফর্ম, ব্যক্তিই ভাষা, ব্যক্তিই জেহাদ। প্রতিটি ব্যক্তিই তাই অবতার। সে জন্মগত স্বভাব মুক্ত, স্বভাব স্বাধীন—তাই পুরো সিস্টেমটা কোলাপস করে
যাচ্ছে না।
১০ হাজার বছরের সভ্যতার সাংস্কৃতিক ইতিহাসে নতুন বলে কোন কিছুকে দাবী করাটাই
হাস্যকর! ফর্ম প্রগদ্যেও তাই কোন কলার তোলা নেই, না অথরিটি না আবিষ্কার- কোন দাবীই
নেই। বলতে কি ফর্ম একটা রাজনীতি আর রাজনীতি এড়িয়ে চলাটা যেন এখনকার একটা ট্রেন্ড!
প্রকৃতিকে মা বললাম, বোন বললাম, প্রেমিকা বললাম তবুও তার ক্ষয় কুষ্ঠ শ্বেতী রোধ হল
না। এবার এক্সট্রা ম্যারিটাল, রক্ষিতা, খানকি বলে দেখি যদি কোন সুরাহা হয়...। সমাধানটা আমারও জানা নেই...।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন