![]() |
কবিতার কালিমাটি ১৪৭ |
কল্পনারা আসতে চাইছে
কল্পনারা আসতে চাইছে
ওরা দল বেঁধে আসবে...
আমি একা পুরুষ, ভয় করে আমার
ঘর বলতে একটু শুধু থাকার জায়গা
রাতের বেলা চাঁদ একা ডাকতে আসে
নক্ষত্রদের সঙ্গে চলে লুকোচুরির খেলা
বারান্দা নেই, বারান্দা নেই
গাছের পাতায় শুধুই কানাকানি
অন্ধকারে নিজেকে রাখি ঢেকে
দুঃখগুলি আপন মনে সবাই কাঁথা বোনে
একে একে শীত আসে, কোকিল ফিরে যায়
নষ্ট সময়গুলি ভেতর ভেতর এসে কষ্ট দেয়
আয়না আছে, মুখ দেখি না, চিরুনি নেই চুলে
স্বপ্নগুলি সাজে না আর সুগন্ধী কোনো ফুলে
কল্পনারা আসতে চাইছে কেন?
ঘোড়দৌড়ের মাঠে কত নবীন যুবক ঘোরে
কত বাজার, প্রজাপতির মেলা, রঙিন জাহাজ ওড়ে
সাঁকো পেরোয় বুকের বোতাম খুলে
আমি শুধু ধুলোর কাছে বসন্তহীন পাখি
কল্পনারা আসবে কেন? আমি একা নির্বাসনে থাকি!
আমিও মানুষ কিনা
বলতে বলতে থেমে যাচ্ছি
এই দ্বিধাদ্বন্দ্বের আত্মপরিচয়
কী বলে দাঁড়াবো?
আকাশ আয়নার মতো
মৃত্তিকার ঘনীভূত উচ্চারণে
নিজেকে প্রকাশ করি
নিজেকে নিজেরই সন্নিধানে
বাঁচার তাগিদটুকু চলে যাচ্ছে এখন
মাথা তুলে তুলে আর কতদূর দেখা যায়?
অতীত ও ভবিষ্যতের সেতুতে এক চিলতে বর্তমান
সূর্যহীন ঘোলাটে বিজ্ঞাপন আঁকা
অসমর্থ ঘোড়ার মতো দাঁড়িয়ে থাকি
বিশ্বাস ও অবিশ্বাস সন্তান-সন্ততি
প্রজন্মের ধারণা নিয়ে এসেছে কাছে
কী আছে তাদের? শুধুই অগৌরব
আর ভ্রান্তির মরীচিকার কাহিনি
আমিও মানুষ কিনা এখনও ঘোষণা করিনি
শুধু মানুষের মতোই এক প্রাণী।
জন্মদিনের লেখা
গতকাল বিকেল থেকে আনন্দকে পাওয়া যাচ্ছে না
রাতে একা একা খুঁজেছি ওকে
জানালার পাশে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেছি ওর
এই মাঘের সকালে কুয়াশাকাতর আমি
আনন্দকে ডেকে ডেকে শুধু ব্যথা পাই
শূন্যের ভেতর আমার সংসার
কোথায় গড়াচ্ছি এতকাল ধরে?
দুই হাতে মুঠো মুঠো ধরেছি সময়
তবু ফাঁকা হাত, নিহত অক্ষর লেগে আছে
পথ হেঁটে হেঁটে পেয়েছি পথের অভিশাপ
কেউ কি তাম্বূল নিয়ে এসেছিল দরজার কাছে?
তাম্বূলের মতো আধখানা মুখ তার আজও মনে আছে
আঙুলে তার শিহরণ ছিল, শিহরণ আনন্দ মেখেছিল
তারপর ভাঙা দুপুরের গল্পে ক্লান্ত কোনো চিল উড়েছিল
শুধু এক শূন্যতায় পাক খেতে খেতে বহুদূর চলে গেছি
আমি
মৃত অক্ষরগুলি শীতের ধূসর বারান্দায় জমা হয়ে আছে
আনন্দ ফিরে এলে খুঁজে পাব আমার হারানো সব চিঠি
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন