কালিমাটি অনলাইন

ত্রয়োদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১৩২

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

ত্রয়োদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১৩২

শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫

রাশিদা সুলতানা

 

সমকালীন ছোটগল্প


রেণুর মুক্তিযুদ্ধ

রেণুর দুই চোখেই ছানি পড়েছে। কোমরে বাতের কারণে ঠিকমতো হাঁটতে পারে না। গ্রামের বড়দিঘির কোণায়  পরিত্যক্ত মঠের কিনারে সারাদিন বসে থাকে। তার চারপাশে শুকনা কাঁঠালপাতা, বাঁশপাতা জমে স্তূপ হয়ে আছে। কয়েকজন সাংবাদিক এবং গ্রামের কিছু তরুণ-পরিবেষ্টিত সে তাকিয়ে থাকে সবার দিকে। এতগুলো মানুষের মনোযোগের কেন্দ্রে কেন সে বসে আছে, বুঝে উঠতে পারে না।

সাংবাদিকদের একজন রেণুকে প্রায় জোরজবরদস্তি করতে থাকে, সে যেন ঠিকঠাক বর্ণনা করে কী ভয়ঙ্করভাবে সে ’৭১-এ পাক হানাদারবাহিনীর হাতে ধর্ষিত হয়েছিল। রেণু বেগম কারো সাথেই কোনো কথা বলে না। একজন সাংবাদিক গুছিয়ে বলে, “মা, আপনাকে নিয়ে আমরা গর্বিত। আপনি প্লিজ আমাদের বলুন, ’৭১ সালে পাকিস্তানিদের বর্বরতার কথা, স্বাধীন বাংলাদেশে আপনার প্রত্যাশার কথা অথবা স্বপ্নভঙ্গের বেদনার কথা।” রেণু ওই সাংবাদিকের দিকে তাকায় না, যেন সে কিছুই শুনতে পায়নি। শাড়ির একটা কোণা  আঙুলে খুঁটতে থাকে। গ্রামের অন্যদের মুখে এই বীরাঙ্গনার প্রতি পাকবাহিনীর নিষ্ঠুরতার কাহিনি শুনে সন্তুষ্ট হয়ে ফিরে যায় সাংবাদিকেরা।

চৌধুরী বাড়ির আত্মীয় এবং আশ্রিতা রেণু জীবনে প্রথম ধর্ষিত হয় পাকসেনাদের হাতে। সারা গ্রামের লোকজন যখন “পাঞ্জাবি আইলো... পাঞ্জাবি আইলো...” বলে যে যেদিকে পারে পালাচ্ছে, রেণু তখন রান্নাঘরে ফুঁকনি দিয়ে আগুন ধরানোয় ব্যস্ত। চৌধুরী গিন্নি ও-ঘর থেকে বেরিয়ে পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে কচুরিপানার আড়ালে লুকানোর আগে রেণুকে ডেকে যায়। “গ্রামে পাঞ্জাবি আইছে, সবাই দৌড়াইতাছে, তুইও আয়। চুলা নিভায়া আয়।” রেণু তখনো চুলায় ধোঁয়া ছড়াচ্ছে। গ্রামের কেউ কেউ পরে বলাবলি করেছে, সে আসলে ধর্ষিত হবার জন্যই অপেক্ষা করছিল।

পাকসেনারা রান্নাঘরে ধোঁয়ার মাঝে একজোড়া গভীর চোখের এক ছিপছিপে তরুণীকে দেখে একটানে হেঁচড়ে তাকে উঠানে নিয়ে আসে। দলনেতা আবৃত্তি করে,

ইয়ে জাঁহা-সে নেহি হ্যায় তুমহারি আঁখেঁ

আসমান-সে উতারি হ্যায় তুমহারি আঁখেঁ।”

দলের সবাই হাঃ হাঃ হাসিতে ফেটে পড়ে। এর ন’মাস পর স্বাধীন বাংলাদেশে রেণু একটি বোবা মেয়ের জন্ম দেয়।

মেয়ের জন্মের পর চৌধুরী বাড়ির কামলা ট্যাগরা করিমের সাথে রেণুর বিয়ের আয়োজন করা হয়। রেণুর কান্নাকাটি, প্রতিরোধ কোনোকিছুই টেকে না চৌধুরী সাহেবের এই সিদ্ধান্তের মুখে। চৌধুরী গিন্নি তাকে বোঝায়, “ট্যাগরা করিম রাজি না হইলে আমরা কোনোদিন তরে বিয়া দিতে পারতাম না।” রেণুর কান্না থামে না, “আমারে বিষ দেন খালা, তবুও মুনিষ ব্যাটারে বিয়া করতে পারুম না।”

বিয়ের পরে রেণু শীত গ্রীষ্ম হেমন্ত শরৎ বসন্ত বর্ষা, সারাবছরই স্বামী কর্তৃক ধর্ষিত হতে থাকে। তার জ্বর, টাইফয়েড কোনোকিছুই তাকে বাঁচাতে পারে না।

বিয়ের প্রথমদিন থেকেই একদিনের জন্যও সে তার স্বামীকে শ্রদ্ধা করেনি, ভালোও বাসেনি। স্বামীর প্রতি নিষ্পৃহ থাকলেও, তার বোবা মেয়েটি তার জীবনে নিত্য নতুন ছন্দ নিয়ে আসে। পায়ের নিচে শুকনো কাঁঠালপাতা, পুকুরের দক্ষিণ পাড়ে পরিত্যক্ত মঠের পাশে মা-মেয়ে সারাদিন চড়ুইভাতি খেলে। আর মেয়ে ঘুমিয়ে গেলে সুঁইসুতা অথবা কুশিকাটা দিয়ে মেয়ের ফ্রক বানায়, ফ্রকের নকশা তোলে বা অ্যামব্রয়ডারি করে। মেয়ের ফ্রকগুলো ন্যাপথলিন দিয়ে পুরনো সুটকেসে ভাঁজ করে রাখে, আবার সুটকেস থেকে বের করে রোদে শুকাতে দেয়। মা-মেয়ে এবং ট্যাগরা করিম তিনজনের বোবা সংসার। মা-মেয়ের ইশারায় বাক্যবিনিময় হলেও, স্বামীর সাথে রেণুর কখনোই প্রায় কথা হয় না। সংসার এবং তার প্রতি অনাগ্রহ করিম টের পেলেও এ নিয়ে বলার জন্য কোনো কথা সে কোনোদিনই গুছিয়ে উঠতে পারে না। তাদের মাঝে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোনো কথা হয় না।

স্বাধীনতা যুদ্ধের বীরাঙ্গনা হিসাবে গ্রামের চেয়ারম্যান রেণুকে একদিন মিটিং-এ নিয়ে গিয়েছিল, চেয়ারম্যান আঙুল তুলে সবাইকে দেখায়, এ নারীর ত্যাগ বাঙালি হাজার বছর স্মরণ করবে। সেই মিটিং-এ ট্যাগরা করিমও গিয়েছিল তেলচপচপা চুলে। সেদিন চেয়ারম্যানের পাশে বসা বীরাঙ্গনা স্ত্রীর গর্বে তার চেহারা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল।

রেণুর প্রায় শব্দহীন সংসারে এক-জাদুর-বাক্স আনন্দ নিয়ে আসে গ্রামের চেয়ারম্যানের ছোটভাই মাহফুজ। জেলাশহর থেকে সে গ্রামে সাংবাদিক নিয়ে আসে। দৈনিক সংবাদপত্রে বীরাঙ্গনা রেণু বেগমের সাক্ষাৎকার ছাপা হয়। রেণুর ছবিসহ সংবাদপত্র রেণুকে এনে দেখায়। ফ্রেমে বাঁধাই করে রেণুকে উপহার দেয়। পদ্মফুলের দু’টি মালা গেঁথে একটা রেণুর মেয়েকে পরিয়ে দেয় আরেকটি রেণুকে। “তোমার ত্যাগে এ দেশ ধন্য, তোমার ত্যাগে এই দেশের জন্ম, হে মহীয়সী নারী।” রেণুর দু’চোখ-কান বিস্ময়বিকিরিত হয়।

মাহফুজ একটা হারমোনিকা নিয়ে এসে রেণুর বোবা মেয়ে শিউলিকে বাজানো শেখায়। সারাদিন সে ব্যয় করে সেই কসরতে। মা-মেয়ে দু’জনই উপভোগ করে মাহফুজের হারমোনিকার বাজনা, মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে।  মাহফুজের এ বাড়িতে আসা-যাওয়া নিয়ে রেণুর স্বামী করিমের কিছু বলার থাকে না, অথবা বলার সাহস থাকে না। মাহফুজ মা-মেয়েকে যাত্রাপালা দেখাতে নিয়ে যায়। ভরা পূর্ণিমা রাতে তিতাস নদীর উপর নৌকায় ভেসে বেড়ায়। নৌকায় রাতভর মাহফুজ গান শোনায়। ঘন অমাবস্যার রাতে রেণু উত্তরপাড়ার কবরস্থানে যায়। মাহফুজের হাত ধরে দ্যাখে, অন্ধকারে গাছভর্তি জ্বলতে-থাকা জোনাকপোকা। সে যেন একটা হরিৎ-নীল প্রজাপতি হয়ে ওঠে।

রেণু তার বোবা মেয়ে শিউলিকে একা ঘরে রেখে প্রথমবারের মতো বের হয়। জেলা শহরের বাজারের আড়তের পিছনে ছোট এক ঘুপচি ঘরে মাহফুজের সাথে সাতদিন কাটায় স্বামী-সন্তান, অতীত-ভবিষ্যৎ বেমালুম বিস্মৃত হয়ে, যেন সে গাঢ়নীল সমুদ্রে পালতোলা নৌকায় ঘুরে বেড়িয়েছে পুরোটা সময়।

মাহফুজ যখন তাকে ওসমান মাহমুদ-এর বিশাল বাগানবাড়িতে নিয়ে আসে, চারপাশে এত গাছগাছালি পাখপাখালির মাঝে শিশুর উল্লাসে সে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। দুদিন আগে বাজারের আড়তের পিছনে ঘুপচি ঘরে ওসমান মাহমুদ-এর সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল তাকে মাহফুজ। শান্ত, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন গম্ভীর ভদ্রলোক। ওসমান সাহেবের বাগানবাড়িতে পুরো সকাল কাটিয়ে দুপুরে খেয়ে বেরিয়ে যায় মাহফুজ। রেণুকে বলে যায় বিকালের মধ্যে সে ফিরবে। মাহফুজ বেরিয়ে গেলে তার বোবা মেয়ে শিউলিকে নিয়ে নানা দুশ্চিন্তা তার মগজে বুদবুদ তোলে। নিজেকে সান্ত¡না দেয়, তার স্বামী করিম বাচ্চাটাকে নিজ সন্তানের মতোই ভালোবাসে।

বিকেলে ওসমান মাহমুদ আসে, রেণু তখন বিছানায়। তাকে দেখে খাটের কোণায় বসে ওসমান। “বিকালটা একা একা কাটাইছেন, বিরক্ত লাগে নাই তো? কাজের মহিলা ঠিকমতো খাবার দিয়ে গেছে?”

না, কোনো সমস্যা হয় নাই। মাহফুজ তো চলে আসবে কিছুক্ষণের মধ্যে।”

ওসমান তার সাথে ভাব জমাতে চেষ্টা করে। বলে যে, পাকিস্তানিরা তাকে ধর্ষণ করেছে এ-ব্যাপারটা সে জানে। মাহফুজ তাকে বলেছে, “দেশের জন্য এ যে কত বিশাল আত্মদান!” সে আরো জানায়, “পাকিস্তানিদের  ঔরসে তার একটি অসুস্থ সন্তান আছে, তা-ও জানে সে।” বলে, “বেদনাদায়ক ঘটনা। পাকিস্তানিরা কতজন ছিল সংখ্যায়? এরা তো একেকজন নিশ্চয়ই পালোয়ান টাইপের লোক ছিল। এখনো যা সুন্দর, তখন তো নিশ্চয়ই অনেক সুন্দরী ছিলেন। আপনি কি ক্যাম্পে আটক ছিলেন?”

শুরুতে দুয়েকটা প্রশ্নের জবাব দিলেও একপর্যায়ে কথা বলা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয় রেণু। হাঁটুতে মুখ রেখে মেঝের দিকে তাকিয়ে শান্ত বসে থাকে। খোলাচুল বাতাসে উড়ে উড়ে তার মুখের উপর নানা রেখা আঁকে। ওসমান আরো বলে যায়, “তার স্ত্রী দীর্ঘদিন রোগশোকে অসুস্থ, সে আবার পতিতাগমনও পছন্দ করে না, যৌন অসুখের ভারাক্রান্ত এসব পতিতাদের চেয়ে একজন স্থায়ী বান্ধবী থাকা শ্রেয় মনে করে।”

রাত ন’টা-বিশে ওসমান তাকে ধর্ষণ করে। ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আগে ওসমান বলে, “যে মাহফুজের হাত ধরে আপনি স্বামী-সন্তান ছেড়ে পালায়া আসছেন, সেই মাহফুজ আপনাকে আমার কাছে বিক্রি করে গেছে। সে গ্রামে আর ফিরবে না। তার টাকার দরকার ছিল, আমার কাছ থেকে টাকা নিয়ে ঢাকায় চলে গেছে। আমার সাথে বহু বছরের লেনদেন মাহফুজের।”

এখান থেকে পালিয়ে গ্রামে চলে যাবে, এই যে ভাবনাটা মাথায় এক মুহূর্তের জন্য এসেছিল, তাকে বাতিল করে দেয় সে। এখানেই থাকবে। মাহফুজ এখানেই ফিরে আসবে। তার সাথে দেখা হতেই হবে। হয়ত ওসমানই পারবে মাহফুজের খোঁজ দিতে।

রেণু ওসমানের কাছেই থেকে যায়। ওসমানকে বারবার অনুরোধ করে মাহফুজের ঠিকানা জোগাড় করে দিতে। সে বলে, মাহফুজের সাথে জীবনে আর অন্তত একবার তার দেখা হতে হবে। ওসমান প্রথমদিকে মাহফুজের ঠিকানা জোগাড় করে দেবার প্রতিশ্রুতি দিলেও পরের দিকে মাহফুজের নাম শুনে নীরব হয়ে যেত। ওসমান তাকে শুরুর দিকে এক-দুইবার জিজ্ঞাসা করেছে, “যে তোমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করল, তার সাথে দেখা হইতে হবে কেন?"

রেণু জবাব দিত, “তাকে একবার শুধু জিজ্ঞাসা করব, আমার সাথে এমন করল কেন? আমি কী অপরাধ করছিলাম।”

মাসদুয়েক পরে নিজেই ওসমানকে সে বলে, “মাহফুজের সাথে কেন অন্তত আরেকবার দেখা করতে চাই, শোনেন। তাকে আরেকবার শুধু বলব, পাগলের মতো এখনো তাকে ভালোবাসি আমি।”

টিপটিপ বৃষ্টির মাঝে বিদ্যুচ্চমকের মতো ফিরে আসে তার মেয়ে শিউলি, মাহফুজ, এবং কখনো-সখনো স্বামী ট্যাগরা করিম। যদিও রেণু সবসময়ই করিমের স্মৃতি ঝামা দিয়ে ঘষে মন থেকে মুছে ফেলতে চেষ্টা করেছে।

কয়েক বছর পর রেণু গ্রামে ফিরে দ্যাখে তার ঘরের বেড়া-দরজা সব ভেঙেচুরে ধ্বংসস্তূপের মতো দাঁড়িয়ে আছে। রেণু মেয়েকে খোঁজে, হেমন্তের হুহু বাতাস তার কানে, শাড়িতে প্রবাহিত হয়। এ বাড়িতে কোথাও তার মেয়ে নেই। স্বামীও নেই।

চৌধুরী বাড়িতে পৌঁছে জানতে পারে, সে চলে যাবার পর ট্যাগরা করিম তার মেয়েকে স্বীয় ঔরসজাত সন্তানের মতোই যত্নে-ভালোবাসায় বড় করছিল। গ্রামের লোকজন এর মধ্যে আবিষ্কার করে বোবা শিউলি  অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে। ট্যাগরা করিমই এই কাজ করেছে, এই অনুমান থেকে গ্রামের অতি-উৎসাহী কিছু লোক বাজারে প্রকাশ্যে তাকে প্রচুর মারধোর করে। করিম নাকি মার খেতে খেতে বারবার চিৎকার করছিল, “এইটা আমার সন্তান, আমার মেয়ে, ওর কোনো ক্ষতি আমি করি নাই। আমি জানিও না কে করছে।” তারপরও গ্রামের লোকজন তাকে পিটিয়ে অর্ধমৃত করে বাজারে ফেলে রাখে। পরদিন সকাল থেকে গ্রামের লোকজন ট্যাগরা করিমকে আর কোথাও দ্যাখেনি।

চৌধুরী গিন্নি বোবা মেয়েটিকে নিজ বাড়িতে এনে ধাত্রী দিয়ে চেষ্টা করেন গর্ভপাত করাতে। এতে শিউলি মারা যায়।

চৌধুরী এবং তার স্ত্রী রেণুকে বলে গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে। রেণু যায় না। সে বলে, “আমার মেয়ে আছে এইখানে, যামু না আমি।”

আরো অনেক বছর পর আবারও একদল সাংবাদিক আসে বীরাঙ্গনা রেণু বেগমের খোঁজে। ইত্যবসরে রেণু বৃদ্ধা, শীর্ণ তার শরীর, প্রকট কণ্ঠাস্থি, চোখে ছানি। দিঘির পাড়ে পরিত্যক্ত মঠের পাশে শুকনা বাঁশপাতা-কাঁঠালপাতার স্তূপে শিয়াল-কুকুর আর মনুষ্যবিষ্ঠার মাঝে বসে থাকে। সাংবাদিকেরা নানা প্রশ্ন করে, রেণু কোনো জবাব দেয় না।

 

 

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন