কালিমাটি অনলাইন

ত্রয়োদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১৩২

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

ত্রয়োদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১৩২

শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫

মধ্যপ্রদেশের কবি নাগদেবের কবিতা

 

প্রতিবেশী সাহিত্য

 

মধ্যপ্রদেশের কবি রাজেন্দ্র নাগদেবের কবিতা    

(অনুবাদ : মিতা দাশ)

 


কবি পরিচিতিঃ কবি, চিত্রকর রাজেন্দ্র নাগদেব জন্ম ৮ আগস্ট ১৯৪১ সালে মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়নে। শিক্ষা - জে জে স্কুল অফ আর্টস, মুম্বাই। ইংরেজি এবং হিন্দি দুই ভাষাতেই কবিতা লিখেছেন। তাঁর প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে ‘শতাব্দীর শেষ দিনগুলিত’, ‘একটি পাতা কাঁপছিল’, ‘শেষ ঘন্টা’, ‘শূন্যে ঘূর্ণিঝড়’ ইত্যাদি। তাঁর অর্জিত পুরস্কারের মধ্যে হিন্দি একাডেমি পুরস্কার, কবি মৈথিলিশরণ পুরস্কার, স্পেনিন পুরস্কার, মধ্যপ্রদেশ রাষ্ট্রভাষা প্রচার প্রসার পুরস্কার উল্লেখযোগ্য।  

 

রোদন

কেউ এত শান্তভাবে গান গাইছে যে আমি কেবল তার কণ্ঠস্বর শুনতে পাচ্ছি।

কোন শব্দ নেই

এমন অনুভূতি যে কারো গান গাওয়ার বা কান্নার শব্দ সেই তৃতীয় ঘর থেকে আসছে।

 

কিছু সুর আছে কান্নায় ভেজা,

কেউ গাইছে, কেউ কাঁদছে।

 

সে যে কাঁদতে কাঁদতে গান গাইছে

সে যে গান গাওয়ার সময় কাঁদছে

 

আমি জানি না, আমার ঘরটা একটা প্রতিধ্বনিতে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে।

 

আর কণ্ঠস্বরগুলো মনের গুহায় ঢুকে যাচ্ছে

এবং ফিরে আসার পথ ভুলে যাচ্ছে

 

সেই ঘর থেকে একটা মহিলা কন্ঠ ভেসে আসছে।

যেখানে কান্না কঠোরভাবে নিষিদ্ধ, সেখানে সে গানের কারণে কাঁদছে

 

যদি তুমি এটা শুনতে চাও,

তাহলে এর কান্না শোনো।

 

আর তুমি চাও সে কাঁদতে থাকুক, কাঁদতে থাকুক,

তার কান্নার তাপে বরফের মত জমা ব্যথা গলে যাক।

 

ইচ্ছা

আমরা ভেবেছিলাম যে আমাদের আকাঙ্ক্ষাগুলো কিছুদূর যাওয়ার পর ফিরে আসবে।

আমরা এতদিন ধরে তাদের ফিরে আসার অপেক্ষায় ছিলাম। আকাঙ্ক্ষাগুলো আর ফিরে আসে না কিন্তু এখন মনে হচ্ছে দিকনির্দেশনাগুলো জনশূন্য হয়ে গেছে।

সূর্য কোথাও একটা উপত্যকার মধ্যে ডুবে গেছে এবং

দুর্ভেদ্য অন্ধকার ছড়িয়ে পড়েছে। এমন একটা সময় আসে যখন ভ্রমণগুলো অন্ধ হয়ে যায় এবং

পিছন ফিরে হেঁটে ফিরে আসা ভালো লাগে,

এমনকি যদি তা পছন্দের নাও হয়। কিছু শান্তির মুহূর্তে, মানুষ চলে যেতে চায়।

এমন একটা সময় আসে যখন আকাঙ্ক্ষা মরে না বরং নিহত হয়

আর এই হত্যা

একটি অবাঞ্ছিত

আত্মহত্যায় পরিণত হয়।

 

রাত্রি

কিছুক্ষণ আগে আকাশ ছিল লাল, এখন কিনারায় ধূসর।

সূর্য সবেমাত্র দিগন্তের উপত্যকায় লাফিয়ে উঠেছে,

উজ্জ্বল বিন্দুযুক্ত শাড়ি পরা একজন কালো মহিলা ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছেন

 

আকাশ জুড়ে শাড়ি দোলাচ্ছে, অন্ধকারের স্তর নেমে আসছে,

একের পর এক অন্ধকার ঘনীভূত হচ্ছে আলকাতরার মতো,

ক্লান্ত মানুষ ফিরে এসেছে

মাঠ, গোলাঘর, অফিস, কারখানা থেকে,

খাঁচায় বসে গৃহকর্তাকে স্বাগত জানাতে কথা বলছে একটি তোতাপাখি মানুষের কণ্ঠে,

পাড়ার কুকুরগুলো ঘুমিয়ে আছে কুকুরের ঘুমে।

ডাকাতদের আস্তানায় অস্ত্র তৈরি করা হচ্ছে।

 

 

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন