![]()  | 
| কবিতার কালিমাটি ১৪২ | 
ভোটের জন্য ভোটে দাঁড়ায় না 
আমি টিএমসি, বিজেপি, সিপিএম 
হতে পারিনি বলে
পাড়ায় পাত্তা পাইনি, নির্দল হিসেবে 
গোছা গোছা কবিতার লিফলেট 
ছেড়েছি ধুলোজনপদে---।
যেমন ওড়াত সেই আশ্চর্য লোকটা 
প্রায়শই পায়রা, আকাশে 
কোত্থেকে যে আনত সে খাঁচা ভেঙে
কেউ তা জানত না যদিও 
ফরফর করে উড়ে যাওয়া দেখত---।
 
মানুষের দল থেকে একটু সরে এসে 
দল নয়, পাখিদের ভালবেসে 
সারা আকাশ উড়ে বেড়াবে সারাবেলা 
খেলবে সমস্ত দল ছেড়ে 
ভাবত নিশ্চয়ই ওই লোকটা---।
আমিও যেভাবে ভাবি শব্দ সাজাতে
দলভুক্ত হতে পারে না যে কবিতা 
সে এতটাই নির্দল, খুব একা একা
জামানত জব্দ না হওয়া পর্যন্ত 
যার অন্ধকারে হেসে উঠবার মতো
চরম নগ্ন-সুখ নেই আত্মার---।
রক্তমাংস
এই তো সামান্য আমি 
কসাই, পৃথিবীতে জীবন্তকে কাটি
অথবা অনাথ--- নিজে গড়েছি আশ্রম
কতগুলো প্লেটে দিতে হবে 'আমি'কে
কেননা কিছু নেই আর
এ যেন এক মরণের বাটোয়ারা 
বক্ষ বা চেতনা, সাধ্য বা ধারণা 
ধারালো চপার দিয়ে কাটি
আমি কি জীবন সম্পর্কে কিচ্ছু জানি  
কেননা মৃত মাথা নিয়ে সারারাত কাঁদি 
এই তো তুচ্ছ আমি
ভিক্ষে করে বাঁচি, যাপনের কাছে হারি
অথবা ধুলোবালিছাই-এর ওপরে ধ্যান 
ছায়ার উঠোনে ছৌ-নৃত্য--- কতগুলো রূপে
কেননা কম দামে খুশির খুশবু বিক্রি করি
এই তো কয়েক খণ্ড আমি।
বিরিয়ানি ও নতুন কবিতার বই 
এদের আদতেই কোনো বিরোধ নেই 
দুটিই চরম স্বাদী, খিদে মেটে এবং 
এদের রয়েছে কিছু বিনিময় মূল্য 
জিহ্বা যে কোনো উচ্চারণের চেয়ে 
উচ্চ মার্গের স্বাদ কোরকে সমৃদ্ধ, তৃণ বা মাংসে
সুষম ও শ্বেতসারে, রান্না করা হাড়ে ও মজ্জায়
দাঁত অবশ্য এ পৃথিবীর অজ্ঞ শ্রমিকের মতো
ধার না থাকলে, তাদের বাঁধিয়ে দেওয়া হয় 
চিবিয়ে চলা মেশিনের গায় চকচকে মোহে
                     স্নান করিয়ে রাখা হয় টুথপেস্টে
যদিও দাঁতে দাঁত চেপে লেখা হয়েছিল 
বেশ কতগুলো জেলখানার কবিতা, বিদ্রোহের 
প্রাচ্যের প্রকৃষ্ট প্রদাহে, প্রতিবাদে, প্রত্যয়ে
তবু ললিত-লালা এবং স্নায়ু বাহিত সংকেত
মস্তিষ্কের প্রাণীসুলভ অংশে---প্রবল তড়িৎ-তরঙ্গ
সৃজন করতে পারে বলেই, নিয়ত 
                    ফাঁকা হয়ে যায় কয়েক লক্ষ হাঁড়ি
মানুষ কাগজ চিবোতে পারে না, তার অসহায়তা
হাড় মাংসহীন কবিতার পদ কীভাবে যেন রান্না 
অবিক্রিত দ্রব্য রেখে কবি মরে গেল
                     তবুও গুপ্তধন তাঁর সিক্রেট মশলা।

তিনটি কবিতাই অসাধারণ
উত্তরমুছুন