কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

শনিবার, ১৫ জুলাই, ২০২৩

তাপস রায়

 

কবিতার কালিমাটি ১৩০


নিজের সাথেই আমি মারফতি করি, সোজা-উল্টো শিখি

 

এই মহা চুরমার আমাকে নিজত্ব দেয়, যেভাবে প্লাবনের পর জল

নিজেকে নিথর করে, ভাবে আর বার্তাহীনতা নিয়ে

রোজ রোজ জাগে ও ঘুমোয়

আমিও নিজের বাকলে সহিষ্ণুতা পুরে দিই

এক একটি রাস্তার মুখে অন্য রাস্তা রেখে ফিরে আসি, হৃদয় বাঁধি না

 

ওদিকে ছলাকলা থাকে, মৃত্যুকে দাঁড়াতে বলি, হিসেব-নিকেশ বাকি

যেসব স্বস্তি ও অস্বস্তি প্ররোচনা দেয়, ফেলে আসি

যেন চিনিনি কখনও, আমাকে পেরোতে হবে কয়েকটা আকাশ

সমুদ্রের তলে বারান্দা বানাব, আর মৃত মাছেদের

চোখ নিয়ে উপরে এসেই অন্ধত্ব ঘোচাতে যাব বাজারপনার

 

এরকম এতরবেতর বোধ পেয়ে বসে বলে আজকাল বাড়িতেই

বনজঙ্গল রাখি, দস্যু, তস্কর আর বুনো পশুরাও ঘর করে

তীব্র শ্রাবণে এসে দেখি ঘন উপদেশ আমাকে চুবিয়ে মেরেছে

খুব অল্প আয়াসেই

 

প্রতিদিন কত কি মূর্তি গড়ি, ভাঙি-ও তেমন

 

আমার নদীটির পাশে তোমার নদীও এসে বসে, চেনাচিনি করে

কী যে ভালো লাগে রাতের আকাশে দু-একটা তারাকে পাশাপাশি দেখে

আজও সকালের হয়ে ওঠা হলো, গাছের সবুজে, মাটির ধুলোয়

তার ভুমিষ্ঠ ক্রিয়াটি দেখে যেকোনো শিশুই হাততালি দেবে, ভণিতারহিত

ওই উৎসারণ এগিয়ে চলেছে, দাও, তাকে বরমাল্য দাও, মে-মাস জানুক

 

যেটুকু স্নানের পর মুছিয়ে দেবার মা-হাত ঢুকে আসে, জলের মিলিয়ে যাবার

অতশত শব্দ টের পেয়ে বুকে চাপে, সেটুকু জীবন পড়ে আছে ওই

ভাঙা বারান্দার প্রতীক্ষারা আছে, লোকাল ট্রেনের দিকে তাই অত ছুটে ওঠা

 

এ ওকে বুঝেছে যতটুকু, আলপথ, টেম্পারার রঙিন দেয়াল, উপেক্ষা মুখপেক্ষিতা

গ্রীষ্ম নামার পর খবরের অভিযোগ -- সবই ঋণ করে চেখে নিতে হবে

আমাদের বাগানে আজ এই অসময়ে দুটি শেফালি নিজেদের মতো করে

                                      ভোরবেলা ডেকে এনে ততটা লজ্জিত নয়

 

সিসিফাস পদ্মপাতার উপরে টলটলে পায়ে হেঁটে যাবে কোনোদিন

 

সকাল থেকেই মেঘের ওইরকম ভাব, যেন ঘুমিয়ে পড়বে, যেন বেশ ক্লান্ত সে

যেন সে চেনা মুখগুলো চাইছে না আর, রোদে তৎপরতা বাড়ছে

অ্যাক্রোপলিসের একুশতলা স্বপ্নের পাশেই গ্রাউন্ড রিয়ালিটি, গীতাঞ্জলী স্টেডিয়াম

ভোর ভোর সেখানেই কাউন্টিং শুরু

 

আশ্রয় চিনতে চিনতে এই যে গ্রাম ডিঙিয়ে, রেললাইন ডিঙিয়ে, নদীকে সামান্য ছুঁয়ে

এই রাম ও রাবণের দ্বন্দ্ব সমাসের কাছে পৌঁছে যাওয়া, যেন এক সিন্ মেরে আসতে পারি

 কাঠের তরবারি নিয়ে সন্ধ্যে সন্ধ্যে নাড়াচাড়া করা আর বিড়ি ফুঁকি, ভাবি আমাদের

                                                পড়শি পুকুরে মাছ হত, সেখানেই বিকেলের গা-ধোওয়া

 

সত্যবাদিতার যেসব নিষ্ঠুরতা আছে, মানে ওই যে অবিরল মিথ্যেকথার সৌন্দর্য ভেঙে দেয়া

চোখে পড়ে সত্যি সত্যি ভালো লাগবে না কারো, মুখ ফিরিয়ে নিতে হয়, কোনো সমুদ্রকেই

পৃথিবী আর বইবে না জেনে বলো তো কী করতে পারি, জামার ভেতরে যেভাবে

                                                স্কুলবেলায় অপাঠ্য বই লুকিয়েছি, ততটুকু ছাড়া কী করতে পারি

 

প্রয়োজনহীন সমস্ত ফণা খুলে খুলে চলে যাচ্ছে ওই, সোজা-ঊল্টো ওই দু’পায়ের কারসাজি শুধু পথ জানে  

 

 

 

 

 

 

 

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন