কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

শনিবার, ১৫ জুলাই, ২০২৩

শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়

 

কবিতার কালিমাটি ১৩০


শাপভ্রষ্ট

 

(১)

 

জন্মের আগেকার জৌলুসে পেরেক পুঁতেছে মন্বন্তর

ঘুমের মধুবাতে ভেসে আসে অলকছন্দা

বহু ব্যর্থ শব্দ খরচ হয়ে গিয়েছে এই খাতেই

একই নদী দুই পাড়ে বয়

তবু দুই পাড় কাঁদে কার অপেক্ষায়!

 

(২)

 

প্রাচীন ঠিকানা ভেসে যায় দূরের সমুদ্রে

ডিজিটাল যুগ পেয়েছে প্রথম পুরস্কার

দু’মহলা শীত তার জন্মদিনের উৎসব সেরে নিয়েছে বসন্তের আগেই

বিরহ ব্যক্তিগত তবু মিছিলের পা

তাকে ভুলিয়ে দেয় পূব পশ্চিম উত্তর দক্ষিণে,

নিশুতি রাতে বরাদ্দ পাকদণ্ডী বেয়ে নেমে যায় উমর আলি হায়দর, বসন্তরঞ্জন বিদ্ববল্লভ

নির্বিকল্প জীবন ঘিরে অনুভব করি সীমাহীন দিগন্ত!

 

(৩)

 

দৈবসুখের হাত ধরে আষাঢ় আসন গ্রহণ করে,

মেঘদূত তার তৃষ্ণাপর্ব প্রকাশ করেছে দূর সাগরে

ষোড়শী তো অক্ষরের মতো দেখতে

ধ্বনির মতো প্রবাহ

ছাতা হাতে স্বরলিপি চৌকাঠে প্রতীক্ষায়

অভিসারে সেজে ওঠে নদী, দোতারা হাতে প্রিয় আসবে ব'লে!

 

(৪)

 

আদ্র্তার কবিতায় ধৈর্যের আরাধনা করি

স্তব্ধ মন্ডপে ভোরবেলা প্রণামের পর প্রতিমার চোখে দেখি দৃশ্যান্তর

কবিতা পূজায় আমার লাগে পঙক্তি উপাচার

ইতস্তত মন শেষ অক্ষর লেখে প্রদীপের আলো জ্বেলে

কবি তার অন্তরে প্রোথিত করে দিয়েছেন ভৈরবী রাগ

কোজাগরী থালায় ফুটে ওঠে বোরোধান, প্রান্তর জুড়ে!

 

(৫)

 

আচমন শেষে অভিযোগ করে আধসিদ্ধ ভাত

না জ্বলা কাঠ আর নদীঘাটের খুঁটিনাটিরা

নিজেকে জাগিয়ে রাখি চেনা বৃত্তের বাইরে

ভোগ করি মৃতদীঘি, হাজার বছরের উচ্চারণ

অভুক্ত ঘুলঘুলি সন্ধ্যেয় ফেরা চড়াইএর প্রতীক্ষায়

তার নীচে শুয়ে আছি জ্বরের শরীরে

দ্বাদশীর চাঁদ ততক্ষণে ভিজিয়ে নিয়েছে চরাচর।


1 কমেন্টস্: