কালিমাটির ঝুরোগল্প ১২০ |
ছেঁড়া রাংতা
তুফান আসে বিভিন্ন নাম পেয়ে, উপকূল ভুমি তছনছ করে আবার মিলিয়েও যায়। শুধুমাত্র একটা কোকিল বোধহয় হিসেবে ভুল করেছে বলে এই পোড়া ঝোড়ো জৈযষ্ঠ মাসেও মাঝরাতে ডেকে উঠছে মাঠের ধারের অর্জুন গাছের মগডাল থেকে। ইচ্ছে হলেই ডেকে উঠছে ভোর সকাল দুপুর বিকেল সন্ধ্যা রাতে। মানে, ইচ্ছে করেই যখন তখন। কুউউ কুউউ ডাক নয়, যেন বলছে কোওই কোওই কোওই...।
মায়ানমারে টেলিফোন টাওয়ারটা'কে ভেজা কাগজের মতো মাটিতে নুইয়ে দিয়ে চলে গেছে সুপার সাইক্লোন মোকা। তারপর থেকেই কোকিলরঙ্গ চলছে। অথচ বৈশাখ মাসেও কোকিলটা ছিল না। অনাহুতের মতো যদি এলোই'বা তাহলে কী খুঁজতে চেয়ে কই কই করে যাচ্ছে কে জানে।
ও কি ওই গুহার কাছের ওক গাছগুলোর শাখায় কোনো বাসায় গিয়েছে কখনো? ওখানেও নাকি এক অদ্ভুত পৃথিবীর অদৃশ্য প্রবেশদ্বারের কাছে এই মাটির পৃথিবীর মানুষেরা তাদের পরলোকগত প্রিয়জনদের সঙ্গে দেখা করতে যায়। ওরাও খোঁজ করে, কই, কোথায় তাদের প্রিয়জন? খোঁজ করে উপহার রেখে আসে, হয়তো বলিও দিতো কখনো। কত রকম চিহ্ন খোদাই করা পাথুরে টিলার উপর ছোট একটা গোলাকৃতি জলভরা কুয়ো। তাকে ঘিরে গাছে গাছে সবুজ পাতার ফাঁক গলে রোদের চৌখুপি ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে। ঝুম আলোছায়া চারপাশে অতন্দ্র প্রহরীর মতো ওক গাছের বাসিন্দা কেবল রহস্যময়ী পরীরা। পরীদের কৃপা হলে পরলোকগত প্রিয়জনরা সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারবে। এই কথাগুলো সবার কাছে পৌঁছে দিতো শুধুমাত্র কিছু শামন। পরে তারা নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখতে ঈশ্বরের পুত্রের দলে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।
সেখানে ভগবান ও দল বদলায় নিজেদের ঈশ্বরের পুত্রের হাতে সমর্পণ করে। এখানে বুড়োবাপ আর ঈশ্বর একসাথে লাঠি ভর দিয়ে বিকেলে হাঁটতে বেরোন। হয়তো তাদের আলোচনায় উঠে আসে সেই প্রৌঢ় বাবার কথাও, যার সদ্য জোয়ান ছেলেটা ভিন রাজ্যে গিয়েছিলো ভাত শিকারে কিন্তু কয়েকমাস ধরে তার আর কোনো খোঁজখবর নেই। ছেলে আর ফিরে আসবে কিনা, সে আশাই বা কই? তাহলে তরুণী বউটারই বা কী গতি হবে! তারচেয়ে দুজন দুজনের আশ্রয় হয়ে বেঁচে থাকা ভালো। এই ভেবে শেষমেশ তারা বিয়ে করে সংসার পেতেছে।
আকাশে গুরু পূর্ণিমার চাঁদ। কোথাও
কোথাও আর্থিক তদন্তকারী কর্মকর্তারা টাকার পাহাড় গুনে গুনে ক্লান্ত। ওদিকে তিব্বতে
কিছু শ্রমণ দশ পারমী অনুশীলনে মগ্ন হলেন।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন