কালিমাটির ঝুরোগল্প ১০৪ |
প্রলাপ
আহা মা জ্বরে কাতর হয়ে আছে! জ্বর; গভীর জ্বরে কাঁপতে কাঁপতে ঘোরের মধ্যে চলে যায় আর জাগলেই ঘ্যাসঘেসে মাথাব্যথা, মোচড় দেয়া মাংসব্যথা, গিট্টু লাগা আঙুলব্যথা, হাড়ের কটকটানি মরমরানি কাউরে চিনতে পারে না তখন! নিঃশ্বাসের তালে তালে গানের মতো কোঁকানির কোঁ কোঁ! জল ছেটাই, ডাকি মা ওমা! মা ঘোর ঘোর চোখে তাকায়, কী গভীর মধুর ঘোর! বলে, কোত্থেকে বাতাস ঢোকে ফুরফুর করে? শিরশিরে ঠাণ্ডা বাতাস শরীরে সাপের মতো কিলবিল করে! ওহ বমন বমন! বিবমিষায় মাখামাখি হয়ে মা আবার জ্ঞান হারায় বৃশ্চিকব্যথায়!
মাছটা কি আমার বুকের ভিতর ঢুকে গেল? এমন কাঁটা দিয়ে ওঠে কেন কিছুক্ষণ পর পর? অ্যাকুরিয়ামের সামনে যখন দাঁড়িয়েছিলাম সে গোল্লা গোল্লা চোখ আমার দিকে স্থির রেখে কাচটা ঠুসছিল অনবরত। কিছু কি বলতে চাচ্ছিল? কোন ভবিষ্যত বাণী… খারাপ খবর? এরপরই তো মা’র বায়োপসির রিপোর্টটা এলো!
কোথায় সেই মমতাময়? ফুলের কলির মতো যে জমিয়ে রাখে সবটুকু আদর! দয়া করো, মা’র সবটুকু ব্যথা আমাকে দাও। ও আমার ঘোরের সাথী, আমাকে ডুবিয়ে দাও বেঘোর অতলে!
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন