কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

বৃহস্পতিবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০২২

নিমাই জানা

 

কবিতার কালিমাটি ১১৪


অ্যামলোডিপিন অথবা পরিমিতির পাজামা

 

গভীর রাতের দ্বিমুখী পাজামার দিকে মুখ করে ঘুমোলে ত্রিভুজের আর সন্দেহ হয় না পরিমিতি পাঠের জন্য

আমি এক ভরসাযোগ্য বিছানার তলায় নগ্ন হয়ে ঘুমোই

হলুদ শিফনের তলদেশে রাখি আমার অপার্থিব কাদাচিহ্ন

বিছানার কখনো কখনো রাসায়নিক প্রশমন দেখা দিলেই পালকটির সর্বভুক নেশা জেগে ওঠে ককটেল রাতে

এই সতী পাঠের গভীর নেশা কিছুটা বনচাঁড়ালের মতো

একসাথে পাশাপাশি বসে মুনীর ঋষি ব্লেডের ঘনত্ব মেপে যান আমাদের সব পরকীয়ার হলুদ সুপারি পাতার নিচে নিকোটিন সংক্রমণ লুকানো থাকে

পিঠে বসে থাকা রেস্পিরাটরি অর্গানের নেশাতুর ঘুম ভাঙলো

আমি মায়ের দীর্ঘ কোলের কাছে থাকা রাতের এমলোডিপিন চোখে এক শর্বরীর মহাভারত পড়ে চলি

কারণ ধৃতরাষ্ট্রের রাতটুকুও শেষ হয়ে যেতে পারে মায়ের মতো মায়ের কোন চোখের ছাপ রাখতে পারিনি ক্যালেন্ডারের পাতায়

লম্ব বৃত্তাকার দেশলাই বাক্স শুধু আগুন ও যৌনগন্ধ বুঝে

 

নৈঋত সঞ্জীবন অথবা ক্যাকটাস বারান্দা

 

অসম্পৃক্ত দ্রবণের মতো আমি কতোবার এই পাহাড়ের ঘুমঘোরের নেশা পাল্টে ফেলি ফারেনহাইট তাপে

আমার জিভে তখন এক আকাশের লীনতাপ কুয়াশার মতো আমাকেই জড়িয়ে ধরে শীতলতম রাতে

শিমুল তুমি আমাকে বিদুরের কাছে থাকা সঞ্জীবন মন্ত্র পাঠিয়ে আমার দেহের সব ক্ষেত্রফলে দাহ বীজ লাগিয়ে দাও

তোমার অঙ্কুরোদগমের নৈঋতে গজিয়ে উঠছে আপেলের মতো সমতল ক্ষেত্রফল

তুমি সব ক্যাকটাসের বৃতি পাঠ পড়ে নাও দক্ষিণের এক হাঁটু বৈকালিক জলে

আমি অন্ধ হতে হতে বাড়ির সব দরজা থেকে মৃত্যুর গা ভর্তি গয়না খুলে রাখি দেরাজের গোপন কুঠুরিতে, সম্ভাবনাময় ঠোঁট চকচকে

আমি ও আমার স্টিলের গোপন কুঠুরি মৃতপ্রায় গন্ধ শুঁকে রাখি কিছু  গর্ভনিরোধক জটিল সুষুম্নার কিউমুলোনিম্বাস

লুকিয়ে লুকিয়ে আমার সন্তানও সব বাৎসায়ন পাঠ পড়ে নেয় আমি কিছু দূর গিয়ে ধূলিকণার মতো পুড়িয়ে ফেলি মায়ের সকল পরিধেয়

গভীর রাতের মা কখনো এসরাজ বাজিয়ে বাড়ি ফিরবে না রাতের বিড়ি খেতে খেতে

 

কার্বোনেটেড পাটিগণিত অথবা ময়ূরাক্ষী

 

মা বড় কার্বোনেটেড ছায়াছবি হয়ে ঝুলে আছে আমার ঈশ্বরীদের সাথে অথচ তার ফসফরাসের কনাগুলো আমার যৌনঘরের দ্রবীভূত ল্যাকটেট দানার মতো

বাবার পেটে থাকা সূক্ষ্ম মূলরোমের দাগে আমি জরায়ুজ কঠিন তিল বীজের ক্ষেত্রফল বের করে আনি, ময়ূরাক্ষীর পেটে সূর্যাস্তের গন্ধ থাকে নিম পাতার মতো

আমি কিছু সমান্তরাল ছায়াপথ খুঁজি পাখিদের ডানা ভেঙ্গে

জিভে সব গণিতের অপনয়ন ব্যবচ্ছেদ করি দৈর্ঘ্যহীন সুতো দিয়ে

একলা ভয় পাই না জ্যোৎস্নার পাটিগণিত চাঁদকে

আসলে কখনো কখনো অসম্পৃক্ত বিষধর সাপ ভেবে পান করি ইন্দ্রের গোখরো দাঁত

আমার বিবস্ত্র পশম চাদরের রোগ থেকে আয়না রঙের পরজীবীরা আমার ছাদে আগুন পোহায়, পাতাবাহারের শীত রোগ আছে

আমি তাদের লালাভ ঠোঁটে কালো মাটি দিয়ে শ্যাওলা রঙ দেখি আমার সাথে কেমন আমার পোশাকটি মৃত্যুর ৩০ ডিগ্রি কোণে ঢলে পড়ে

আমি মাঝারি সাইজের একটি বক্ষবন্ধনী কিনে আনি দোতলা বস্ত্রালয় থেকে, আমার নিলয়ে তখন কালো রক্তের লাবডুব

আমি ঠাণ্ডা জলে ভিজে গ্রিলিন্টাস বি এম খাই মধ্যরাতে

 

বক্ষবন্ধনী অথবা নিষিক্ত হৃদরোগী

 

নয়নতারা বস্ত্রালয়ের অনেক উঁচুতে থাকা তাম্র বর্ণের শিফন চাঁদটি পক্ষাঘাত গ্ৰস্ত হয়ে পড়ে হৃদরোগীটির মতো

নেফারতিতি ঘুমোলেন দক্ষিণ বারান্দায়

৮৩ বর্গসেমি সাইজের বক্ষবন্ধনী তলপেটে পুরে বাড়ি ফিরছেন  রাতের প্রসব বেদনা সেরে ,

মেথারজিন সব রক্তের স্রোত বন্ধ করতে পারে না কারণ তার ঠোঁটে সেগুনের রোঁয়া আছে, ভিস্কোসিটির আর্দ্রতা আছে মায়ের মৃত্যুর পর, আমরা আগুন জ্বালাই আগুন দিয়ে

সকলের একবার বাৎসরিক পিচ্ছিল রোগ আছে, অগ্রহায়ণের দিন সব ধানক্ষেতের রং করা শিরদাঁড়া দিয়ে কবিতার সায়াহ্নবেলায় নেমে যাচ্ছে

পটীয়সী নারীর পেটে থাকা অ্যালুমিনিয়াম পারদের মণিকর্ণিকা একাকী কৃষ্ণের নামে ধ্যানমগ্ন হন অপ্রাকৃত রাশির মতো

এখন কোন কবিতার প্রচ্ছদে হিমোগ্লোবিন রজঃস্রাব থাকে না

আমি শ্যাওলার মতো রজঃস্রাব খাই

বাবার ধাতবপিঠে থাকা সর্বনাম উদ্যানটি নিরালম্ব নদীর পাড় ধরে নেমে যায় অচিন্ত্য নগরের দিকে

বমি হয় আমাদের, কোন পরকীয়া নেই বলে

সকলেই আগুনের পিঠে চতুর্ভুজ চিতা পোড়াচ্ছে অথচ আগুনের কোন উদরদেশ নেই

 

বল্মীক অথবা গণিত বিশারদ

 

বৈষ্ণব পুরুষটি বারবার ঈশ্বরীয় নামতা পড়াচ্ছেন অবচেতন প্রাণীকে

কুকুরটি কাউকে রেতঃপাত দেখায় না মহাপ্রস্থান কালের শীঘ্রপতন ঊষালগ্নে

আমার গোপন নারীটির কোন অন্তর্বাসে বেঁধে রাখার মতলব নেই কখনো বাড়ির দেয়াল থেকে আমার চৌকাঠ, বারান্দা পেরিয়ে কুলগাছটিকে স্বতন্ত্র সুপুরুষ মনে হয়

এক সোনার কাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে বিশ্বেশ্বর

আমি অর্জুনের বাকলে থেকে নেমে নিষিদ্ধ পঞ্চম দিনের পাঞ্চজন্য বাজাতে বাজাতে অনন্ত বিজয় সেরে আসি

পোখরাজ কাঠের ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে আমি মৃত ছায়াপথ আমার ঠোঁটের রক্ত এবারও আগুন গিলে খাচ্ছে আমি কখনো চৈতন্য ঠাকুরকে বৈবস্বত প্রদেশে পাঠিয়ে

আশুতোষ হয়ে যাই

চেয়ে দেখো বল্মীকের ন্যায় ঝুলে আছে গোপন অন্তর্বাস শ্রীচৈতন্য নেশাখোর আদিভৌতিক সমাক্ষরেখাগুলি কী অদ্ভুত প্যাঁচানো

মায়াজাল ছিন্ন করে আমি মরুৎ ব্যোমে মিশে যাচ্ছি রাশির মতো কাকতালীয় দোষ বিষধর পুরুষটির প্রার্থনা করলাম

বিশ্বেশ্বর দেখছি আমার নাভির তলায় প্রতিটি রাতে আমার মতো কেউ জেগে থাকে

শ্রীরাধা নৃত্য করতে করতে পরাবৃত্তের সূচক ছুঁয়ে ফেলছেন আদিম গোপীবল্লভ অনন্ত বিষাদের পরেও একটি ধুম্রশলাকা জ্বালিয়ে তৃষিত তুলসী পাতার নৌকা পাহারা দিচ্ছেন

এ শরীর, এ অঙ্গাণু, এ ক্ষেত্রজ ভূমি, গাণিতিক জীবকোষ

ক্ষেত্রজ্ঞ তিনি গণিত বিশারদ

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন