কবিতার কালিমাটি ১১৪ |
দূরের কথা
ট্রাম লাইনের
তার থেকে বিদ্যুৎ ঝিলিক দেয় না আর
দুঃস্থ বাসগুলি
গা জড়াজড়ি করে ঘুমোচ্ছে
রিকশা ও ভ্যানের
বাসি কিচিরমিচির
বহুতলে কী যেন এক সংকেত পাঠিয়েছিল
তোমার ঘুম ভেঙেছিল
এক নিঃস্বার্থ ভোরবেলায়
তোমার হাঁটুর
ব্যায়ামও বন্ধ রেখেছো বহুদিন
নগ্ন দেওয়ালের
ছবিগুলো পাল্টাবার সময় এসেছে
এখানে সূর্য
ওঠার কোনো নিয়ম থাকে না
এখানে জ্যোৎস্নায়
ভেজার জন্য ব্যালকনিতে গিয়ে দাঁড়াতে হয়
কিংবা অন্ধকারে সারস হয়ে ভেসে যেতে
হয় বহুদূর।
ধারণা
কোলাহল বেঁচে
আছে সবটুকু নিয়ে
কিছুটা অনন্ত
বুঝে ঠিক ধারণার কাছে চুপিচুপি বসে থেকো একা
একটা বরফ ঘরে
রাখা থাকে দু’মুঠো পলাশ
একটা বরফ ঘরে
কার বিষণ্ণতা?
সবটুকু এভাবেই
পথে নেমেছিল একদিন –-
কেউ তো দেখেনি
শুধু শূন্যের ভিতরে ঘুম জমতে জমতে পাথরের
কোলাহল মুক্ত
এই পৃথিবী সটান একই রাস্তা দিয়ে দৌড়োচ্ছে এখনও
ওই যে অনন্ত
একা হল অকস্মাৎ
সবটুকু বুঝে
নিতে ধারণার কাছে আরও বেশ নিচু হয়েছিল সেও।
চৌকো ঘর
দেওয়ালের চারদিকে
ফুলের তোড়ার মতো রংঝুরি আর
সোফার দু’পাশে
ম্লান আলোকমালা জলতরঙ্গের সুরে
অল্প অল্প করে
বুঝে নিতে শেখো তুমি
কীভাবে বিশাল
লাফ দিয়ে এই রাত্তির পেরোবে
কীভাবে জুতোর
ফিতে খুলে নিতে গিয়ে
হিতে বিপরীত
হল – এতদিনের জমানো সবটুকু প্রাণ
ম্রিয়মান হয়
ঠিক দাবার ছকের মতো
কিংবা জন্ম থেকে তুলে-নেওয়া
ঘোড়ার মতন
কতটা ছাউনি
ছিল মাথার ওপর দেখে নিয়ে
একদিন একা একা
পায়চারি সেরে রাতে ভাঙনের হা দেখেছো তুমি
অতলের চিরকুট
অনেকদূর পর্যন্ত বেসামাল কান্নায় ভেসেছে
কী নিশ্চিন্তে
সাদা-কালো জুড়ে নানা খেলা
খেলতে খেলতে
আজও ঘুমোয় নিভৃতে।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন