কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

বুধবার, ১৭ মে, ২০২৩

মধুবাণী ঘোষ

 

ভালোবাসার কথা বলতে এলাম: প্রাণের মানুষ ১৮




সকালে ঘুম ভাঙতেই মনে পড়ল আজ একটা লম্বা সফরের দিন। মিসৌলা থেকে সিয়াটলের দূরত্ত্ব ৪৭৫ মাইল । লাঞ্চ ব্রেক সমেত ঘন্টা আটেকের রাস্তা। লাঞ্চ ব্রেক ভাবতেই মনের কোণায়, ঘরের ফ্রিজে রাখা লেটার (Later) স্যান্ডুইচ উঁকি মেরে গেলো। বিছানা থেকে উঠে পড়বার জন্য ওইটুকু উঁকিই যথেষ্ট।

জানালার বাইরে ভোর হচ্ছে ক্লার্ক নদীর জলে। চা বিস্কুট খেতে খেতে মনটা একটু খারাপ হচ্ছিলো বটে। বাজের সঙ্গে এইটেই আমার শেষ সফর। সিয়াটল পৌঁছে বাজকে ফিরিয়ে দিতে হবে সিয়াটল-টাকোমা  এয়ারপোর্টের  থ্রিফটি কার রেন্টালের গ্যারাজে। ওর সঙ্গে এইটুকুই ছিল আমার পথ চলা। তারপরে অন্য সওয়ারী, অন্য বাহন...  অন্যতর পথ চলা।

স্নান সেরে, জিনিসপত্র গুছিয়ে একতলার ব্রেকফাস্ট লাউঞ্জে গিয়ে দেখি কেউ কোত্থাও নেই। অতএব হট ব্রেকফাস্ট নেই। আমি একটা কলা আর এক বাটি দুধ কর্নফ্লেক্স খেয়ে, কাউন্টারে  চাবি ফেরত দিয়ে জিনিসপত্র গাড়িতে তুললাম। খুব ইচ্ছে করছিল বাজের সঙ্গে এই শেষ সফরের আগে একটা ছবি তুলতে। কিন্তু পার্কিং লট শুনশান। এতো সকালে জনমনিষ্যি নেই। আমি চুপচাপ এদিক ওদিক তাকাচ্ছি, হঠাৎ একটা গাড়ি এসে থামলো। একজন ভদ্রমহিলা হাতে একটা কালো ব্যাগ নিয়ে নামলেন। পোশাক দেখে মনে হল উনি চিকিৎসাবৃত্তির সঙ্গে যুক্ত আছেন।

‘Hi! Good morning. Would you be so kind to take a photograph of me? I am leaving town and would like to send a picture to my family.’

কারণ জানাবার কোনো কারণ ছিলো না তবু একটা অশ্বত্থামা হত ইতি গজ গোছের কথা বললাম।

‘Oh…Hi! Sure. Where would you like to stand?

উনি হয়তো ভেবেছিলেন আমি হোটেলটা পরিবারকে দেখাতে চাইছি। সেইমতো ক্যামেরা তাক করেছিলেন।

‘Right next to my car if that’s OK.’

উনি ক্যামেরা ঘোরালেন।

‘Sounds good to me.’

কছবি উঠলো। পরিবারকে পাঠানোর ছবিতে ওনার ক্যামেরার ফোকাস থাকলো আমার ওপরে। আমার পেছনদিকের পাহাড়ে তখন প্রথম আলো। উনি জানালেন যে উনি একজন নার্স। কাছাকাছি একটা হসপিটালে নাইট ডিউটি করার পর এই হোটেলেই ওদের ব্রেকফাস্ট খাবার ব্যবস্থা রয়েছে। আমি ওনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে রওনা দিলাম। আজ অনেকটা পথ যেতে হবে।

ইন্টারস্টেট ৯০র এই অঞ্চলটা যে কি সুন্দর তা বোধ হয় লিখে বোঝানো যাবে না। দুপাশে পাহাড় আর পাইনের জঙ্গল। তার মাঝটুকু  দিয়ে রাস্তা। পাশে কখনো নদী কখনো ঝর্ণা। ফ্রেঞ্চটাউন বলে একটা শহরের পাশ দিয়ে চলেছে বাজ। ১৮৫৮ সালে দুজন ফ্রেঞ্চ ক্যানাডিয়ান এই শহরের পত্তন করেন। সেখানে এক হ্রদের সঙ্গে দেখা। তার নাম ফ্রেঞ্চটাউন পন্ড। চোখ জুড়িয়ে যায় এমন সবুজ এই অঞ্চল। নেটিভ আমেরিকানরা ক্লার্ক ফর্ক নদীর পার্শবর্তী এই এলাকার নাম দিয়েছিলো কুয়া এলথ (qua elth) বা প্রশান্তি (Tranquility)। প্রাণের ভেতর যেন কেউ জলে ভেজা নরম হাত রেখেছে। তুমি আর নেই সে তুমি।

'ভুলে যাও তুমি পূর্বেও ছিলে

মনে করো এই বিশ্ব নিখিলে

এবারই প্রথম তুমি৷

এর আগে তুমি কোথাও ছিলে না

ছিলে না আকাশে, নদী জলে ঘাসে

ছিলে না পাথরে ঝর্ণার পাশে৷

এবারই প্রথম তুমি৷

এর আগে তুমি কিছুতে ছিলে না৷

ফুলেও ছিলে না, ফলেও ছিলে না

নাকে মুখে চোখে চুলেও ছিলে না৷

এবারই প্রথম তুমি৷

এর আগে তুমি এখানে ছিলে না

এর আগে তুমি সেখানে ছিলে না

এর আগে তুমি কোথাও ছিলে না৷

এবারই প্রথম তুমি৷

রাতের পুণ্য লগনে ছিলে না

নীল নবঘন গগনে ছিলে না৷

এবারই প্রথম তুমি৷

এর আগে তুমি তুমিও ছিলে না৷

এবারই প্রথম তুমি৷'

মাঝে মাঝেই দেখা হচ্ছে ক্লার্ক ফর্কের সঙ্গে। সে বেশির ভাগ সময়েই আমার বাঁ দিকে থাকে আর কখনো কখনো ডান  দিকে এসে 'টুকি' বলে চলে যায়। এই গোটা পথে অনেকবার আমার ঘড়ির সময় বদলে বদলে গেছে। বস্টনের তুলনায় আমি এখন দু ঘন্টা পিছিয়ে রয়েছি। আজকে দিনের শেষে সেটা বেড়ে হবে তিন ঘন্টা। তাই বোধহয় এখানে আমার কাক ভোরে ঘুম থেকে উঠতে কোনোই অসুবিধে হয়  না আর ব্রেকফাস্টের অব্যবহিত পড়েই খিদে খিদে পায়। ১৮৬৪ সালে আব্রাহাম লিঙ্কন বলেছিলেন, 'আমার সবচেয়ে প্রিয় রাজ্য এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। সে হবে নিখুঁত আর তার নাম হবে মন্টানা।' ('My favorite state has not yet been invented. It will be called Montana, and it will be perfect.') এই পথ দিয়ে যেতে যেতে আন্দাজ করতে পারছিলাম তিনি এমন দরাজ প্রশংসা কেন করেছিলেন।

বাজ চলেছে লোলো ন্যাশনাল ফরেস্ট ভেদ করে। এই এলাকার নাম মিনারেল কাউন্টি। এর ইতিহাসে রয়েছে খনিজের স্বাক্ষর। ১৮৬০ সাল  থেকে এই অঞ্চলে মানুষ এসেছে সোনার খোঁজে। পরে এই অঞ্চলে পশুপালন হয়ে দাঁড়ায় তাদের রুটি রুজির নির্মাণ। বর্তমানে তার  সঙ্গে যোগ হয়েছে  পর্যটন। ক্লার্ক ফর্ক নদীতে হোয়াইট ওয়াটার রাফটিং আর এই আশ্চর্য্য সুন্দর এলাকায় অবসর কাটাতে আসে নানা বয়সের মানুষ। অলিভারভিল বলে একটা শহর পেরোনো মাত্র ঘড়ি পটাং করে এক লাফে এক ঘন্টা পিছিয়ে গেল। এদিকে বাঁ দিকে তাকিয়ে দেখি ক্লার্ক ফর্ক নদী বেপাত্তা। তার জায়গায় বয়ে চলেছে সেন্ট রেজিস নদী। বিটার রুট পাহাড়ে জন্মে, মিনারেল কাউন্টির মাঝখান দিয়ে বয়ে গিয়ে, এই নদী মিশে যায় ক্লার্ক ফর্কের সঙ্গে। পথের পাশে খুব একটা জনবসতি নেই। কেবল পাহাড় আর জঙ্গল। মাঝে মাঝে কয়েকটা জেনারেল স্টোরের সাইন দেখা যাচ্ছে। পর্যটকেরা সেখান থেকে তাদের পথের রসদ সংগ্রহ করে নেয়। এর মধ্যেই  লুকআউট পাস এসে পড়ল আর দেখলাম আমি  নতুন রাজ্য আইডাহো (Idaho) তে পৌঁছে গেছি।

তা এই দুই রাজ্যের সীমানা নিয়ে জল ঘোলা কম হয়নি। কথিত আছে যে কন্টিনেন্টাল ডিভাইড ধরে আইডাহো আর মন্টানার সীমানা নির্ধারণ করবার দায়িত্বে ছিলেন কয়েকজন সার্ভেয়র। হয় তারা ভুলভাল ম্যাপ বা যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেছিলেন, নতুবা মদ-গাঁজা খেয়ে অপ্রকৃতিস্থ ছিলেন, নতুবা মন্টানার নেতাদের কাছ থেকে ঘুষঘাষ  নিয়েছিলেন। যাই হোক, তারা নীচের  দিকটায় কন্টিনেন্টাল ডিভাইড অনুযায়ী সীমানা নির্ধারণ করলেও ওপরপানে এসে হঠাৎ বাঁ দিকে কান্নি মেরে বিটার রুট পর্বতমালা বরাবর সীমানার লাইন এঁকেছিলেন। তার ফলে মিসৌলা, বাট ইত্যাদি সোনায় ভরপুর এলাকা চলে যায় মন্টানার ভাগ্যে আর আইডাহোর  মুন্ডুটা শুঁটকোপানা  কানখাড়া খরগোশের মত দেখাতে থাকে ।

পথ চলতে চলতে পৌঁছলাম ঐতিহাসিক মুলান রোডে। এই রাস্তা হলো আমেরিকার প্রথম রাস্তা যেটা রকি মাউন্টেইন আর প্রশান্ত মহাসাগরের তীরবর্তী অঞ্চলকে যুক্ত করেছিল। মার্কিন সেনানীর তৈরী এই রাস্তা নির্মাণের দায়িত্ত্বে ছিলেন লিউটেনান্ট জন মুলান। এই রাস্তা তৈরী হয়েছিল মিলিটারি ওয়াগন চলাচলের জন্য। জন মুলান এই অঞ্চলের নেটিভ আমেরিকান ফ্ল্যাটহেডদের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপন করে এই কাজ সম্পন্ন করেন। এই এলাকায় পরবর্তী কালে  ইন্টারস্টেট ৯০ এই মুলান রোডকে অনুসরণ করেই এগিয়েছে। এখানে  মুলান রোড চলে গ্যাছে আইডাহো প্যানহ্যান্ডল ন্যাশনাল ফরেস্টের বুক চিড়ে। অনেকক্ষণ পথ চলেছি। ক্লান্ত লাগছিলো। এইখানে বাজকে দাঁড় করিয়ে একটু জল খেলাম। হাঁটাহাঁটি করলাম। জঙ্গলের পাইন, বার্চ, স্প্রুস গাছের গন্ধ, ঝর্ণার আওয়াজ, পাখির ডাক.... ঘুরে ঘুরে আসছিলো আমার কাছে।

'সে আসে আমার কাছে ঘুরে ঘুরে যেন এক

স্রোতস্বিনী নদীর সুবাস, ভালোবাসা সে যেন হৃদয়ে শুধু

ঘুরে ঘুরে কথা কয়, চোখের ভিতর হতে সুগভীর চোখের

ভিতরে, সে আসে প্রতিদিন জানালায় ভোরের রোদের মতো

বাহুলগ্ন আমার প্রেমিকা;

সে আসে প্রত্যহ এই আলোকিত উজ্জ্বল শহরে, ইতিহাস

আরো সব কিংবদন্তী কথা কয় আমার স্মৃতিতে, সে আসে

দূর থেকে মনে হয় শ্যামল ছায়ায় ভরা যেন এক

হরিণীর চোখ, অথবা রোদের সুরভিমাখা হেমন্তের শিশির সকাল

সে আসে আমার কাছে নুয়ে পড়ে আমলকী বন;

সে আসে আমার কাছে ভরে ওঠে বছরের শূন্য খামার

নদীতে সহসা ওড়ে মাছরঙ নায়ের বাদাম

ক্ষেতের দরাজ দেহ সিক্ত করে মেঘের মৈথুন,

সে আসে আমার কাছে

ফুটে ওঠে নিসর্গের নিবিড় কদম

সে আসে আমার কাছে ঘুরে ঘুরে নদীর স্রোতের মতো

জলে-ভাসা ভেলা।'

আমার পথের পাশে পাল্টে যাচ্ছে দৃশ্যাবলী। আমার ডানদিক  দিয়ে বয়ে যাচ্ছে কোর ডেলেন (Coeur d'Alene) নদী।  সেই নদীর  চলনপথে বিশাল কোর ডেলেন হ্রদ। এই লেকে শীতকালে সামন মাছ শিকার করতে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে ঈগল পাখি ( Bald Eagle)... তাদের মাথায় রুপোর মুকুট, গায়ে তামার পাতের ঝলকানি। এই হ্রদেই সুস্বাদু চিনুক সামনের যাতায়াত। হ্রদ পেরোতেই এক নতুন নদী আমার সঙ্গে সঙ্গে চলতে শুরু করল। তার নাম স্পোকেন (Spokane)। সে চুপচাপ আমার সঙ্গে স্পোকেন শহর পর্যন্ত গেল। তার পর নিজের খেয়ালে উত্তরপানে বাঁক  নিয়ে চলল কলম্বিয়া নদীর সঙ্গে দেখা করতে। এর মধ্যে আবার রাজ্যবদল। আমি এখন ওয়াশিংটন স্টেটে। পাহাড়ের সবুজ কমে আসছে। এবার আবার কেমন একটা রুক্ষ উপত্যকা দিয়ে চলেছে বাজ।

স্প্রেগ লেক (Sprague Lake) পেরোনোর সময় বেশ  অস্থির লাগছিলো। বুঝলাম প্রচন্ড খিদে পেয়েছে। সকালের দুধ কলা কর্নফ্লেক্স হজম হয়ে গ্যাছে অনেকক্ষণ। ঠোঙার বাদাম আর শুকনো ফল  চিবিয়ে আর ঠেকা দেওয়া যাচ্ছে না। আড় চোখে পাশের সিটের লেটার (Later) স্যান্ডউইচের দিকে  চাইছিলাম বারবার। একে এবার নাউ করে ফেলার সময় এসেছে। পরের রেস্ট স্টেশন স্র্যাগ (Schrag)। গাছের তলায় বাজকে দাঁড় করিয়ে দেখি রেস্ট এরিয়ার বাইরে  গাছের ছায়ায় কয়েকটা টেবিল চেয়ার পাতা রয়েছে। আমি একটা বেঞ্চিতে বসে ফ্লাস্কের চা সহযোগে ভবিষ্যৎ আর বর্তমানের ভেতরে একটা সংযোগ ঘটালাম।

আবার পথ চলেছি সিয়াটল অভিমুখে। হঠাৎ ক্ষণিকের জন্য কলম্বিয়া নদীর সঙ্গে দেখে। সে আমার সঙ্গে পথ চলেনি। দেখা দিয়েছিল মাত্র। এর পর  আমার সঙ্গে সঙ্গে  এল য়াকিমা (Yakima ) নদী। সে কিচেলাস (Keechelus) লেক পর্যন্ত  এসে হাওয়া । কিচেলাস শব্দের অর্থ কম মাছ। নেটিভ আমেরিকানরা এই লেকে মাছ ধরতে এসে খুব একটা সুবিধে করতে পারেনি। নামেই তার প্রমান।এর পরেই এলো  স্নুক্বলমি  (Snoqualmie) পাস। এর পর থেকেই রাস্তাটা যে কি চমৎকার তা বোঝাই কি করে। এই পাস্ দিয়ে ইন্টারস্টেট ৯০ চলে গেছে ক্যাসকেড পর্বতমালার ভেতর দিয়ে। আমি দু চোখ ভরে সেই পাহাড়, জঙ্গল আর নদীর রূপ দেখতে দেখতে চলেছি। সেই অতুলনীয় অনুভব আমি ব্যক্ত করি কি করে?

'সখি কি পুছসি অনুভব মোয়।

সেহো পিরিতি অনুরাগ বখানইত

তিলে তিলে  নূতুন হোয় ৷

জনম অবধি হম রূপ নিহারিল

নয়ন ন তিরপিত ভেল ।

সোহা মধুর বোল শ্রবণহি শুনল

শ্রুতিপথে  পরশ ন গেল ॥

কত মধু যামিনিয রভসে গমাওল

ন বুঝল কৈসন কেল।

লাখ লাখ যুগ হিয় হিয় রাখল

তইও হিয়া জুড়ল ন গেল ॥'

সখি আমার অনুভবের কথা আর কি জিজ্ঞাসা করছ? সেই প্রেম ও অনুরাগের কথা তিল তিল করে নূতনতর হয়। জন্মাবধি আমি তার রূপ দেখেছি কিন্তু তবু আমার দু নয়ন অতৃপ্ত।তার মধুর বাণী আমি শুনেছি কিন্তু তবু আমার শ্রুতিপথ তার স্পর্শের পিয়াসী। কত মধুযামিনী মিলনের আনন্দে  লিপ্ত রয়েছি কিন্তু তবু  আমি প্রেম আস্বাদনে বঞ্চিত। লক্ষ লক্ষ যুগ  ধরে হৃদয়ে হৃদয় রেখেছি তবু আমার হৃদয় তৃষিত ।

এমনি করে পথ চলতে চলতে বিকেল তিনটে নাগাদ সিয়াটল পৌঁছলাম। একটা পেট্রল পাম্পে বাজকে শেষ বারের মতো পেট পুরে খাইয়ে দাইয়ে, গা মাথা জল দিয়ে মুছিয়ে সিয়াটল-টাকোমা এয়ারপোর্টের থ্রিফটি কার রেন্টালের গ্যারাজে ফেরত দিয়ে দিলাম। নামবার সময়ে ওর কাছে আমার যেটুকু চিহ্ন, যেটুকু স্পর্শ ছিল... সবটুকু মুছে দিলাম। এলিভেটরের বোতাম টিপে দাঁড়িয়ে আছি। ট্যাক্সি আসবে ওপরের তলায়। একবার শুধু পেছন ফিরে বাজকে দেখলাম।

'অবান্তর স্মৃতি মধ্যে আছে

তোমার মুখ অশ্রু ঝলোমলো

লিখিও উহা ফিরৎ চাহো কিনা?'

(সমাপ্ত)

 

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন