কবিতার কালিমাটি ১২৮ |
তার নাম অন্তহীন
রাস্তা বিক্রি করে সংসার পাতা যায় একথা রাস্তাও জানে না, আমরা যারা নিত্যযাত্রী অগুন্তি নেশাগন্ধ নিয়ে বুঝতে পারি কান্না চাপা দিয়ে শেয়ালের আঁধারের সাথে বিনীতভাবে তেঁতুল পাতার মতো কেঁপেছি শুধু, অথচ বিষণ্ণ ছিল দামনের ভাঙা চোরা তলপেট – কুয়াশার ভিতর মুখের আদল
খড়কুটোর উপর শিরশিরে তাপ, তারপর নদীর দিকে হাঁটতে হাঁটতে বাঁক দেখা যায়, তার নাম অন্তহীন; অতুল মাঝির খোলা উর্ধাঙ্গে ঘামের স্রোত – জানতে পারে না বলেই সেই স্বপ্নের ওপারে কয়েকটি আধুলির বিকেল – সেখানেই তৃষ্ণার উপর কৃষ্ণচূড়া ঝরে
রোদ মাথায় নিয়ে নদীর যাওয়ার পথে সেই বিকেলে জ্বর আসে
দীর্ঘ রাত্রির পর
নোনাবাতাস বাতাস ভাসতে ভাসতে ফুল ফুটতে থাকে সমস্ত বেনাম আশ্রয়গুলির চালায়, শিরা উপশিরায় নিকানো উনুনের অবুঝ কষ্টের মতো নিজস্ব কবিতা জমিয়ে রাখছে বাঁধভাঙা দুপুর, তাকে ডাকাডাকি করতেই কতকগুলো কাদাখোঁচা পাখি উড়ে আবার ঠোঁটে ঠোঁট রাখে পরস্পর, গরম বাতাস আর ধুলো সরানো পাড়াগুলি নির্বাচিত শ্বাস প্রশ্বাস, উস্কোখুস্কো ছাই ওড়ে বাঁধের ধারে – কেঁপে ওঠে কপালের দাগ; গাছেরা নীরবে তাকে দিতি বলে ডাকে
এক আকাশের নীচে আমাদের ছেলেপুলে জমিয়ে রাখছে জীব; ঘামে ভেজা হাফশার্টের উষ্ণতার এইটুকু দ্যুতি নিয়ে যতসব খড়কুটো ন্যাতানো পাতা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে দীর্ঘ রাত্রির পর, নদী আর বৃক্ষ ছোঁয়া সবুজ মেঘের তরঙ্গরা অহরহ দিনের দ্বিতীয় প্রহরে উত্তপ্ত হয়ে উঠে - নয়ানজুলিতে চান সারে রমণী কাজললতা
আমিও খুব ভোর থেকেই ঘরবাড়ি খুঁজতে খুঁজতে অপর চান্দ্রমাসের শেষ রাস্তায় এসে পৌঁছোই
নোনারঙের খাল থেকে
ত্রিপলের নৌকাটি রোদ ঝলমলে সকাল থেকে বেরিয়ে আসে আলপথের বাঁকের দিকে, এই দৃশ্যের কাছে হনুমানের স্ট্যাচুটি নির্দিষ্ট কোনে সূর্যের দিকে পশ্চাৎপদ, এ রাস্তার কোনো কিনারা নেই – হরিত পাঁকে গড়িয়ে পড়তে পারি অনায়াসেই, তবুও ধুপ জ্বলনের গন্ধ আসছে নোনারঙের খাল থেকে – হঠাৎই রেশন বোঝাই মেশিন ভ্যানের চাকা দেখা যায় – আর সমস্ত অপেক্ষায় অমীমাংসিত শ্বাসমূল শাখামূল ঠেসমূল – কাঁপতে থাকে যন্ত্রণার দখিনা বাতাস
রাস্তা মাপতে কতবার প্যাডেলে চাপ দিতে হয় দিতি; মাটি ছুঁতে কাত হতে হয় এটা জেনেও – ডুবুরির ঠিকানা খুঁজে পাই না, তাকিয়ে থাকি কমলা আর রমলার দিকে – যে একটা দুটো ভেটুক তুলে জমা করছে উদরের চাহিদায়
অসমাপ্ত বাঁকগুলো পেরোতে পেরোতে আবার সেই ঢুকে যাচ্ছি নিউরোসিস দামন
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন