কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

বুধবার, ১৭ মে, ২০২৩

গৌরাঙ্গ মোহান্ত

 

কবিতার কালিমাটি ১২৮


মহেঞ্জোদারোর নর্তকী

মহেঞ্জোদারোর নর্তকী ডান হাত নিতম্বে রেখে যে ত্রিভুজ নির্মাণ করে তার ভেতরে রয়েছে আকাশের পদ্মগন্ধী পথ। তরুণীর অলজ্জ দৃষ্টি শরীর ও সৌন্দর্যের পুরাণকে শাশ্বত বলে ঘোষণা করে। গ্রিসীয় আর্নে কিটস সৌন্দর্য ও যৌবন-অধীরতার ভেতর চিরজীবিতার বিভাস খুঁজে পেয়েছেন। শ্যামল বঙ্গে, পশ্চিম দ্বীপে, ঝরনা-মুখর পাহাড়ে ও আটলান্টিক সৈকতে সৌন্দর্য মোনালিসা-মূল্যের সমার্থক হয়ে ওঠে; অবশ্য মোনালিসার জন্য গীয়োম আপোলিনের প্রতিকূল আকাশের নিচে প্রতিদিন সকালে একটি গর্তে ভালুকের মতো হেঁটেছেন।

 

উজানধলের চারণ                  

বাজপাখির আনুগত্যে উপরিচর বিশ্বাসী ছিলেন; তার তীক্ষ্ণ ঠোঁটে তুলে দিয়েছিলেন বীর্যস্নিগ্ধ পল্লব, রানি ছুঁতে পারেন নি বীজপর্ণ, তবে মৎস্যগর্ভে সুবর্ণপদ্মের কিরণ ছড়িয়ে তা মৎস্যগন্ধার উপজনন নিশ্চিত করে; বসন্তে ধীবর-ডিঙির দাঁড় টেনে যখন সে চারণের কাছে যায় তখন উজানধলের কালনিকূলে জেগে ওঠে এক ময়ূরপঙ্খি যার গলুইয়ে সূর্যের পাশে বসে থাকে স্বর্ণকেশী সেলিনি।

 

নীলের ভেতরে উত্তরঙ্গ গান

আমার বাড়ি থেকে নৌকোয় নদী-জলধি পেরিয়ে নিশ্চিত দ্বীপে পৌঁছোনোর উপায় নেই বলে নদী খননের উদ্যোগ নিয়েছি; এ নদীর গতি হবে ঋজু কেননা সর্পিল গতির ভেতর কিছু সময় দংশিত হতে থাকে, নদীপথে দংশনের সুচিকিৎসা নেই; আমাকে দ্রুত পৌঁছে যেতে হবে গন্তব্যে, নীলের ভেতরে উত্তরঙ্গ গান কীভাবে মাছের সংবেদনাকে উদ্দীপ্ত করে তা অনুধাবনের জন্য আমাকে শঙ্খচিলের গান রেকর্ড করতে হবে; নদী ও সমুদ্র ব্যতীত ওদের গান কোথাও শ্রুতিগ্রাহ্য নয়, শুনেছি সমুদ্রগন্ধর্বী জয়তীর কণ্ঠ অনুকরণ করতে জানে, ভেবেছি সমুদ্রের আপাতবিনোদিনী কণ্ঠে যেনো দিগ্ভ্রম না ঘটে, সরলতম পথে আমি এগিয়ে যেতে চাই, নিজস্ব নদী কিংবা সমুদ্রে ভরাডুবির সম্ভাবনা থাকে না।

 

 

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন