কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

বুধবার, ১৭ মে, ২০২৩

অদিতি সেন চট্টোপাধ্যায়

 

সমকালীন ছোটগল্প


 

রাই


"আসলে কি জানো? তুমি, জীবনটাকে কীভাবে দেখছ, তার ওপর নির্ভর করেই তোমার জীবনটা ক্রমশ পালটে যেতে থাকে। তোমার হাতে ব্যাট, বোলিং-এন্ড থেকে বল উড়ে আসছে, এবং ভেবে দ্যাখো, সেকেন্ডের ফ্র‍্যাকশনের মধ্যে তোমাকে ডিসিশন নিতে হচ্ছে, তুমি কীভাবে বলটা খেলবে? খেলবে? না, ছেড়ে দেবে? ব্যাস, ওই একটা মুহূর্তই পরের মুহূর্তটাকে পালটে দিল। তুমি রান পেলে? পেলে না? আউট হলে? টিকে থাকলে? সব স্থির করে দিচ্ছে, তোমার ওই দেখার ধরনটা। ওটা না ঠিক থাকলে তুমি খেলবে কী করে? জীবনটা মস্ত বড় একটা খেলা রে বুড়ি! টি-টোয়েন্টি  তো নয়ই; পাঁচদিনের টেস্ট সিরিজও নয়, তার চেয়েও লম্বা টানা সিরিজ। রোজ নেট প্র‍্যাকটিস করতে হবে! কখনো জিতবি, কখনো হারবি; কিন্তু, টিকে থাকাটাই আসল। ক্রিজে জাঁকিয়ে টিকে থাকতে হবে। বুঝলি?"

এতগুলো কথা বলার সময় সুচেতা একবারও মুখ তুলে তাকায়নি। ছাদে, টুলে বসে, মন দিয়ে টবগুলোর মাটি আলগা করে দিচ্ছিল দাউলি দিয়ে খুঁচিয়ে। এবার দাউলি হাত থেকে রেখে মেয়ের দিকে তাকালো। সূর্য এখন পশ্চিমে হেলে পড়েছে। কনেদেখা আলোয় রাইয়ের মুখটা বড় করুণ, বড় মায়াবী হয়ে আছে। সুচেতা, রাইয়ের বাঁদিকের গাল থেকে চুলের গুচ্ছ টেনে কানের পিছনে দিয়ে দিল। সহজ ভাবে জিজ্ঞেস করল-

"কিছু খাবি? খিদে পেয়েছে?"

রাই দুদিকে মাথা নাড়লো। সুচেতা ছাদের কোণ থেকে আরেকটা টুল টেনে নিয়ে রাইকে বলল-

"বোস!"

রাই বাক্যব্যয় না করে বসে পড়লো। দুজনেই বসে থাকলো। কখনো রাই সুচেতার দিকে তাকালো, কখনো সুচেতা রাইয়ের দিকে তাকালো, কখনো দুজনেই দুজনের দিকে তাকালো, তারপর একসময় দুজনেই দুজনকে জড়িয়ে ধরে হু হু করে কেঁদে ফেললো।

খানিকটা কান্নাকাটির পর সুচেতা নিজের ওড়না দিয়ে রাইয়ের মুখটা মুছিয়ে দিল যত্ন করে। গালে একটা চুমু দিল। চুলের মধ্যে হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল-

"এতো সুন্দর চুলটার কী অবস্থা করেছিস, বুড়ি! কাল আমি শ্যাম্পু করিয়ে দেবো, কেমন?"

রাই ছদ্মরাগ দেখিয়ে বলল-

"একদম না! তুমি চোখে শ্যাম্পু ঢুকিয়ে দেবে। আমি নিজেই করে নেবো!"

দুজনেই হেসে উঠলো হা হা করে। প্রাণখোলা হাসি। যেন কতদিন ধরে বন্ধ হয়ে থাকা একটা ঘরের ভ্যাপসা বাতাস, জানলা দরজা খোলা পেয়ে হুস করে বেরিয়ে গেল।

ছাদের কোণ থেকে ভার্মিকম্পোস্টের থলেটা নিয়ে এলো সুচেতা। একমুঠ করে নিয়ে টবে টবে ছড়িয়ে দিতে দিতে বলল-

"সারই সারকথা, বুঝলি মা? গাছকে খাওয়াতে খাওয়াতে মাটিও একদিন জমিয়ে রাখা খনিজ ফুরিয়ে ফেলে। লড়াই করতে করতে জীবনও হারিয়ে ফেলে তার জীবনীশক্তি। জীবনেরও সার চাই বৈ কি! কিন্তু সেই সার তোমার ওই সিগারেট ফুঁকে কি তুমি পাবে? পাবে না। ও নেশা তোমায় আরো নিংড়ে নেবে। দেবে না কিছু। নেশা যদি করতেই হয়, ক্রিয়েটিভ কিছু করো। নিদেন পক্ষে আমার মতো চাষীও হয়ে যেতে পারো!"

বলেই আবার প্রাণখোলা হাসলো সুচেতা।

রাই ভাবছিল, কতদিন পর মা'কে এভাবে হাসতে দেখছে! ওর সেই পুরনো মা, অফিস থেকে ফিরেই হাসিতে হইহই করে বাড়িটা মাথায় তুলে নেওয়া মা! কোথায় হারিয়ে গেছিল? না কি, মা কোথাও হারায়নি, সে-ই হারিয়ে ফেলেছিল মা'কে? গত চার চারটে বছর ধরে আর কী কী হারিয়ে ফেলেছে সে? অথচ, মা' কে কিছু বলার আগেই মা কিন্তু সব বুঝে গেছিল। রাইয়ের বরং মনে হয় যে, রাই নিজে নিজেকে বুঝে ওঠার আগেই মা ওকে বুঝে ফেলেছিল। রাই তখনও যেন অন্ধকার একটা কুয়োর মধ্যে পড়ে ছিল। হাঁকপাঁক করছিল উঠে আসার জন্য, মরিয়া হয়ে গেছিল একটু আলোর রেখা দেখার জন্য। কিন্তু পারছিল না, কিছুতেই পারছিল না। আরো অতল অন্ধকারের মধ্যে তলিয়ে যাচ্ছিল। তখনই, অফিস থেকে ফিরে মা একদিন খুব জোর করল-

"আসার সময় দেখলাম একটা নতুন রেস্টুরেন্ট খুলেছে মোড়ের মাথায়। চল না, খেয়ে আসি!"

খুব অনিচ্ছুকভাবে রাই উঠে কোনোরকমে একটা জামা গলিয়ে নিল। মা আর অফিসের জামা পাল্টায়নি। তারপর রেস্টুরেন্টে খেতে খেতে মা আচমকাই, খুব আলতো হাতে যেন, বোমাটা ফাটালো-

"দেবারতিকে ভালোবাসিস?"

রাই হাঁ করে তাকিয়ে থাকলো কয়েক মুহূর্ত। হাতের কাঁটাচামচ স্থির।

"প্রেমে পড়েছিস, আর মায়ের কাছে ধরা পড়বি না, তাই হয় না কি? আর এতো চিন্তার কী আছে? সামান্য একটা প্রেমই তো! প্রোপোজ করে ফ্যাল শীগগির।"

"কিন্তু, মা..."

"আমি অলরেডি বাজিয়ে নিয়েছি, বুড়ি! সেম কেস।"

বলেই মুচকি হেসেছিল সুচেতা।

"কী? মানে, কীভাবে, মানে, উফফ, মা! তুমি, জাস্ট..." আনন্দে, উত্তেজনায়, সব পর্দা সরে যাওয়ার আকস্মিকতায় থরথর করে কেঁপে উঠেছিল রাই। আর ভেবেছিল, এতো সহজ? এতো সহজভাবে হয়ে গেল আত্মপ্রকাশ? মা যেন জাদুকর! যা ওকে জটিল প্যাঁচে জড়িয়ে ধরে ধীরে ধীরে নিস্তেজ করে দিচ্ছিল, মা কত সহজেই সেই প্যাঁচ খুলে দিল!

ইঞ্জিনিয়ারিংএর শেষ চারটে সেমেস্টার চুটিয়ে প্রেম করেছিল ওরা - রাই আর দেবারতি, রাইয়ের দেবু। সেই প্রেম পর্বে মায়ের থেকে কি একটু দূরে সরে গেছিল রাই? ওই সময়টায় মায়ের সঙ্গে কোনো ঘটনা ওর তেমন মনে পড়ে না কেন? লাস্ট সেমেস্টারে দুজনেই ক্যাম্পাসিং থেকে চাকরি পেলো। ট্রেইনিং পিরিয়ডে দেবুর পোস্টিং হায়দ্রাবাদে, রাইয়ের ব্যাঙ্গালোরে। এই অসহ ছ’মাস কাটতেই রাই প্রচুর খাটাখাটনি করে ইন্টারভিউ দিয়ে হায়দ্রাবাদে চাকরি জুটিয়ে ফেললো। ওরাও খুশি, সুচেতাও স্বস্তি পেল। কিন্তু, দেবারতির বাড়িতে যে তখনও পর্যন্ত ওদের সম্পর্কটার বিষয়ে কেউ কিছু জানে না, এটা নিয়ে রাইয়ের মনে খচখচানিটা ছিলই। ক্রমশ সেটা বাড়ছিল। রাই মাঝে মাঝেই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করতে চায়, আর দেবু যথারীতি 'পরে কথা বলবো এটা নিয়ে' বলে এড়িয়ে যায়। সেদিন শনিবার। ব্রেকফাস্টের পর জোর করেই রাই কথাবার্তা শুরু করল-

"তুমি বাড়িতে জানালে?"

দেবু নেটফ্লিক্সে মুভি সার্চ করতে করতে উত্তর দিল-

-"ঠিক সময়ে জানাবো।"

"ঠিক সময়টা কখন? আজ কাকীমা ফোন করেছিলেন সকালে। তুমি ঘুমোচ্ছিলে, তাই ফোনটা আমি ধরেছিলাম। তুমি তো বলোনি, যে তোমার জন্য পাত্র খোঁজা হচ্ছে?"

দেবু নির্লিপ্ত মুখে উত্তর দিল-

"খুঁজুক! তাতে আমার কী?"

"মানে!" রাই হতভম্ব। "বিয়ে ঠিক করে ফেললে তারপর তো তোমায় জানাতেই হবে! তখন তো কাকু-কাকীমার মান-সম্মান নিয়ে টানাটানি পড়বে!"

"সেটা আমি বুঝে নেব।"

"না। তোমার একার বোঝার মতো বিষয় এটা নয়। তুমি আজই জানাবে কাকীমাকে ফোন করে।"

হঠাৎই আচমকা কানের মধ্যে তীব্র যন্ত্রণার অনুভূতি নিয়ে রাই সোফা থেকে টলে পড়ে গেল। দেবু যে রাইয়ের কানপাশায় সপাটে একটি চড় মেরেছে, সেটা বুঝে উঠতে একটু সময় লাগলো রাইয়ের। হতভম্ব রাই মেঝেতেই বসে  থাকলো। কতক্ষণ এভাবে বসে ছিল, মনে নেই। তারপর দেবু এসে ক্ষমা টমা চেয়েছিল এবং কান্নাকাটির মধ্যে দিয়ে একটা মিটমাট হয়ে গেছিল। মাসখানেক পর, সামান্য একটা ভুল বোঝাবুঝি এবং তাই থেকে তর্কাতর্কির মাঝখানে দেবু রাইয়ের বাঁহাতটা মুচড়ে দিল। যন্ত্রণায় কাতরে উঠলো রাই।

রাই আবার সেই অন্ধকার কুয়োটার মধ্যে পড়ে গেছিল। খুব কেঁদেছিল সারারাত। রাতে মা'কে টেক্সট করে দিয়েছিল, "ঘুমাবো। খুব টায়ার্ড। কাল ফোন করবো"।

না, মা'কে কিছু বলতে পারেনি রাই। মা'র সঙ্গে কি মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়েছিল রাইয়ের, দেবুর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হবার পর? না হলে, মা'কে সে কেন বলতে পারেনি, যে জীবনে প্রথমবার সে মার খাচ্ছে! না কি, সে ভাবছিল, ওদের সম্পর্কটার মধ্যে কোথাও একটা ভুল আছে বটে, কিন্তু, আরেকটু সময় দিয়ে দেখাই যাক না, ভুলগুলো সব ঠিক হয়ে যায় কি না?

রাইয়ের গায়ে হাত তোলাটা দেবুর কাছে জলভাত হয়ে গেছিল। মার খাওয়াটাও রাইয়ের কাছে জলভাত হয়ে গেছিল কি? না হলে, পরবর্তী দীর্ঘ আঠারোটা মাস, সে কী করে কাটাতে পেরেছিল দেবুর সঙ্গে?

জানুয়ারির গোড়ায় দেবু একদিন ব্যাগ গোছাতে গোছাতে বললো, ভাইজ্যাগ যাচ্ছে, অফিসিয়াল ট্যুরে।

"কদিনের জন্য যাচ্ছ?"

"ঠিক নেই।"

রাই আর কিছু জিজ্ঞেস করেনি।

ঠিক তিনদিন পর, লাঞ্চ আওয়ারে ফেসবুকে ছবিগুলো দেখালো অমিত, রাইয়ের কলিগ। দেবারতি আর অনন্যার সমুদ্রস্নানের ছবি। রাই তড়িঘড়ি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে বুঝল, দেবারতি ওকে ব্লক করেছে। রাইয়ের মাথাটা টলে উঠলো। অমিত বলল-

"রাই, তুমি বাড়ি চলে যাও। আমি অফিসটা  ম্যানেজ করে নিচ্ছি।"

রাই টলতে টলতে ফিরল ওদের ভাড়ার ফ্ল্যাটে, যেটার দরজায় প্রথম দিন এসেই লিখেছিল 'হোম, সুইট হোম'। রাইয়ের মাথা হালকা, বুকের মধ্যে কয়েকখানা বালির বস্তা রেখে দিয়েছে কেউ। ওর মাথার মধ্যে তখন একটাই কথা ঘুরে ফিরে আসছে, চারবছর! চারবছর সময় ওর নষ্ট হয়ে গেল! এই চারবছর ও শুধুমাত্র তার প্রেম আর সেই প্রেমকে টিকিয়ে রাখার কথা ভেবেছে। মার খেয়েও ভেবে গেছে সব ঠিক হয়ে যাবে! সোফায় বসে নিজের গালে নিজে ঠাস করে একটা চড় মারলো রাই। ওর বুকের ভেতর থেকে অন্য কেউ যেন ডুকরে কেঁদে উঠলো 'মা' বলে। মা! মা! হ্যাঁ, মাকেই তো দরকার এখন! কোথায় এখন মা? মা কি অফিসে? রাই মা'কে ফোন করলো। মা ফোনটা ধরার  পর রাই একটাও কথা বলতে পারেনি। মা চুপচাপ রাইয়ের ফোঁপানি শুনেছে। তারপর শান্ত গলায় বলেছে, "বুড়ি, ফ্লাইটের টিকিট পাঠাচ্ছি। মেইল চেক করো। অফিসে ছুটির অ্যাপ্লিকেশন মেইল করো। বলো, মায়ের শরীর খারাপ। ফ্ল্যাট থেকে তোমার যা যা নেবার, ব্যাগে গুছিয়ে নাও। বাকি কথা সামনাসামনি হবে, কেমন বুড়ি মা?"

রাই আজ সকালে কলকাতা ফিরেছে। হায়দ্রাবাদ এয়ারপোর্টে বসেই বোর্ডিংয়ের কয়েক মুহূর্ত আগে অমিতের মেসেজ পেয়েছিল, "দেবু ফিরেছে। তোকে ফোনে না পেয়ে আমাকে কল করেছিল।" রাই ছোট্ট উত্তর দিয়েছিল, "ওকে"। সুচেতা এয়ারপোর্টে ছিল গাড়ি নিয়ে। গাড়িতে রাই দুবার সিগারেট ধরিয়েছে। সুচেতা দেখেও দেখেনি। নিঃশব্দে মেয়েকে দেখে গেছে শুধু। গত চারবছর ধরে বরুণের সঙ্গে তার দাম্পত্য সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে, শুধুমাত্র  মেয়ের সমকামিতা মেনে নেবার দোষে। আত্মীয় স্বজনরা ঠারেঠোরে অনেকেই অনেকরকমভাবে সুচেতাকে জ্ঞান দিয়ে  গেছে এবং সুচেতার কাছে পাত্তা না পেয়ে সবাই সরে গেছে পাশ থেকে। সুচেতা এখন অফিস আর বাগান নিয়ে সময় কাটায়। তার সবটুকু লড়াই তো শুধুমাত্র রাইকে জিতিয়ে দেবার জন্য। সেই রাইই কি হেরে যাচ্ছে আজ? একটা গভীর শ্বাস নিল সুচেতা, নাহ! সে বেঁচে থাকতে রাইকে হারতে দেবে না।

বাড়ি পৌঁছে সুচেতা রাইকে বলল-

"বুড়ি, তুমি স্নান করবে?"

রাই মাথা নেড়ে হ্যাঁ বলল।

"বেশ, তাহলে স্নান করে, খেয়ে নাও। তোমার জন্য অপুদি মাটনের ঝোল বানিয়েছে। তারপর লম্বা একটা ঘুম দিয়ে নাও।"

স্নান করে এসে রাই নিজের ঘরে, নিজের বিছানায় প্রায় আটমাস পর এসে বসলো। মায়ের সঙ্গে এই আটমাস ওর দেখা হয়নি। অথচ, ছোটবেলায়, মা অফিস থেকে ফিরতে পাঁচমিনিট দেরি করলেই ও বিরক্ত হয়ে যেত।

রাই ঘর থেকে বেরিয়ে এসে মা'র ঘরে ঢুকলো। মা ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়াচ্ছে। রাই পিছন থেকে গিয়ে মা’কে জড়িয়ে ধরলো। মায়ের গায়ে স্নানের গন্ধ। রাই এই গন্ধটায় নাক ডুবিয়ে রাখলো কিছুক্ষণ।

খেয়ে উঠতেই রাইয়ের শরীর ঝেঁপে ঘুম এসেছিল। কতদিন ভালো করে ঘুমায়নি ও। ঘুম ভেঙেছিলো যখন, তখন বিকেল হয়ে এসেছে। রাই উঠে আড়মোড়া ভেঙে মায়ের ঘরের দিকে যেতেই অপুদি বলেছিল, 'কাকীমা ছাদে গেছেন।'

মা-মেয়ের কথাবার্তার মধ্যেই সন্ধ্যা নেমেছে। সুচেতার ছাদবাগানে আলো হয়ে ফুটে আছে ফুলগুলো। অপু চা দিয়ে গেছে এখানেই। নীচে কলিংবেল বাজল। সুচেতা হেসে বলল, "তোর বাবা এত তাড়াতাড়ি ফিরল! দাঁড়া, ওপরে আসতে বলি।"

এমন সময় অপু উঠে এসে বলল-

"দেবুদিদিমণি এসছে। ড্রয়িংরুমে  বসিয়েছি।"

রাই স্বাভাবিক শান্ত স্বরে সুচেতাকে বলল-

"মা, চলো, ব্যাটিংটা কেমন শিখলাম, তার পরীক্ষাটা দিয়ে আসি।"


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন