কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

রবিবার, ১৭ মে, ২০২০

তৈমুর খান




কবিতার কালিমাটি ১০০


নিজেরই বিশেষ্যপদ 

কয়েকটি ছোবল শুধু, চারিপাশে ফণা দুলে ওঠে 
ক্ষতগুলি ঢেকে রাখি 
আরক্তিম সন্ধ্যায় তবু রক্ত ঝরে

নিজেরই বিশেষ্যপদ —
  সামাজিক, ব্যাকরণ সম্মত 
অথবা গৃহপালিত —
কেন সে আকাশে ওড়ে, অথবা কাঁপে বোধিকল্প জ্বরে?

বিহ্বল পড়শির কাছে স্বপ্ন চায়
 
স্বপ্নে এক বাদামি শরীর 
শরীরে স্রোতের ঢেউ 
আর আরশিজলে নার্সিসিজম্!

উপরন্তু প্রাচীন চাঁদ সহজিয়া জ্যোৎস্না বিলি করে
 
বোঝে না প্রবৃত্তিসাধ কেমন মৎস্য হয়ে 
ডুব মারে জলে

কয়েকটি ছোবল শুধু ক্ষত করে রাখে
 
সমস্ত জীবনইচ্ছাকে...

নিজেই নিজের আজ্ঞাবহ 

খড়ের শব্দ। শীতের রাত। জ্যোৎস্না নেই।
গান ঝরছে। অন্ধকারের তীব্র গান।
ধারণার রাস্তা আগলে কুকুরগুলি দৌড়ে গেল।
হল্লা নামল পথের মোড়ে।
বিরক্তি আজ। বন্ধ জানালা।
দুয়ারে সব মৃতমাছ। পর্দা ঠেলছে।
আসছ কেন? কে ডেকেছে? 
ভূমণ্ডলের নষ্ট প্রলাপ দিব্যি হাসছে।
রাঙা চোখের কোনো ইশারা দেখছি না আর।
তালপাতারা বাঁশি বাজাচ্ছে। গাছে গাছে।
ঠাণ্ডা বাতাস হাতুড়ির মতো উঠছে নামছে।
শুনশান ঘুম ওই পালাল। কুকুর-রগড় চলছে বেশ।
নিজেই নিজের আজ্ঞাবহ। জানালা খুলি।
আর কথার দোকান। দোকানে এসেছে চেতনাকুমারী।
বেশ রূপসী। ছলকাচ্ছে মৃদু গন্ধ।
কাতুকুতু। হিহি হিহি। লাফিয়ে নামছে শব্দগুলি।
এসবই খুব প্রাইভেসি।
ওই রক্ত ঝরল। আবার সঙ্গম। পরপর।
পর্দা নামাও দেখব না আর।  অনুভূতির দোকান 
বন্ধ। চোখ ফিরুক চোখের কাছে। বেশ অন্ধকার।
কুকুরগুলি দৌড়ে গেল...


সত্য ভেসে যাচ্ছে 

বন্যায় সত্য ভেসে যাচ্ছে
 
চারিপাশের থইথই জলে 
বাঁশি বাজাচ্ছে কোলাহল 


শহরে খুব মেঘ করেছে এখন 
ডানা বেয়ে নামছে ধোঁয়াশা 
ঘুমের পল্বলে অনুভূতির মৃদু মাছ 
                                       খেলে বেড়াচ্ছে 

দুর্যোগের নীল সমাগম পাল তুলে দিয়েছে
 
নৌকারা বোষ্টমীর গেরুয়ায় ঢেকেছে শরীর ধন 
সঙ্গমের ক্ষেতে শীৎকার 
                              ঝরে পড়ছে পাখিদের গান 

মাৎসর্যের বিকেলে নরম সংশয়
 
জেগে উঠছে বলে 
দরজা খুলে দিচ্ছে সব মিথ্যার আশ্রয় 


জোবচার্নকের সাথে দেখা হল 

জোবচার্নকের অট্টালিকায় আমাদের রাত 
যায় 
এই কোলকেতার রাত 

কুমুদ, তোমাকে কত ডাকি
 
ডেকে ডেকে চোখ সরোবর হয় 
তুমি ফোটো অন্যকারও জলে! 

তামাশা উড়িয়ে দিয়ে যন্ত্রযুগ
 
যন্ত্রণার মই বেয়ে উঠে আসে 
এই ঘরে আমার পিপাসা পায় খুব 

সারাদিন আকাঙ্ক্ষারা ঘোরে ফেরে।
 
কোথাও আশ্রয় দিলে নাকো কেউ 
জোবচার্নকের সাথে দেখা হল 
মধ্যরাতের হিল্লোলে, এই পানশালায় 

নিজেকে নীলঅশ্বের মতো ভাবি
 
দৌড়ই বেঘোর রাস্তায় একা একা 
মনে মনে সারারাত শব্দের সম্রাট 
শব্দে শব্দে আলো জ্বালি...



1 কমেন্টস্: