কালিমাটি অনলাইন

ত্রয়োদশ বর্ষ / ষষ্ঠ সংখ্যা / ১৩৩

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

ত্রয়োদশ বর্ষ / ষষ্ঠ সংখ্যা / ১৩৩

বুধবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৫

গোলাম কিবরিয়া পিনু

 

কবিতার কালিমাটি ১৪৮


টিস্যু পেপার

 

টিস্যু পেপারের মতন

ব্যবহৃত হওয়ার পর তুমিও পড়ে থাকবে

      ময়লার ঝুড়িতে!

তেজপাতাও হয়ে পড়ে পরিত্যাজ্য

পায়েসের কাছ থেকে!

 

পরিত্রাণ ও পরিত্যাগের মধ্যে--

        কতটুকু থাকে ব্যবধান!

অগ্নি ও জ্বালানির তো একই গান!

 

টিস্যুপেপারও ছিল তরতাজা গাছের অংশ

নিরীহ গাছের অংশ বংশচ্যূত হয়ে

খণ্ড ও বিখণ্ড হয়ে

চলে গিয়েছে লরিতে করে কারখানায়!

চেরাইকলে উঠেছে--

আজব কারখানায়--কে কখন কাকে কীযে বানায়!

 

পাতিল

 

পাতিল বাতিল করার সময় হয়েছে এখন

তারপরও বাতিল করছো না কেন?

এ পাতিলে তরকারি পুড়ে যায়

        সিদ্ধ হয় না আলু--

        জ্বাল দেওয়া যায় না দুধ

এমন কি পানি ফুটানো যায় না

জল-তেল মিলমেশ করে রাখা যায় না!

 

এর এনামেল নষ্ট হয়ে গেছে--

মরচে ধরেছে

সে এখন তাপমাত্রা ধরে রাখতে পারে না!

সে এখন তাপশক্তি সহ্য করতে পারে না!

 

এলুমিনিয়ামের পাতিল

    লৌহমিশ্রিত পাতিল

     ইস্পাতমিশ্রিত পাতিল

        রূপোর পাতিল

এমন কি সোনার পাতিল

সে-ও বাতিল হয়ে যেতে পারে--

 যদি তা দিয়ে তাপানো না যায়

  যদি তা দিয়ে তাতানো না যায়

    যদি তা দিয়ে ভাপানো না যায়

রসুইঘরে এ পাতিল রেখে কার কী লাভ?

 

আমরা জোংরাখোটা

 

শামুক কুড়িয়ে পুড়িয়ে চুন তৈরি করি

   আমরা জোংরাখোটা

      আমাদের নখমোটা।

 

আমরা বাদ্য বাজাই নৈবদ্য সাজাই

   নদীতে নদীতে যাই

      সাগরে সাগরে যাই

      আমাদের পায়ে কাদা।

 

দেউড়ি থেকে দেউটি জ্বালিয়ে ঘুরি

      জুটি বেঁধে রুটি খাই

                 --দৃষ্টি চলে যায় দূরে

হিমশীতল দিনেও জলে নামি

     হৃদয়তাপ দিয়ে ঝাঁপ খুলি,

সাপের ভীতিতে বিহ্বল হই না

মগ্ন হয়ে শামুক কুড়াই

        আমরা জোংরাখোটা।

 

বুকভাঙা কষ্ট নিয়ে বুকভাঙা জলে নামি

পানিকাক-কাদাখোঁচা-বালিহাঁস দেখে,

আলোআঁধারিতে থাকি--

পান থেকে চুন খসে কিন্তু চুন থেকে

        আমরা খসি না

      আমরা জোংরাখোটা।

 


2 কমেন্টস্: