কবিতার কালিমাটি ১৪৮ |
গৌরীগঙ্গা
প্রান্তরে পাগল ঘোরে ধুলো ঘেঁটে
হারিয়ে যাওয়াকে খুঁজে চলে
এ জীবনে স্বল্প সঞ্চয়ে চাই দীর্ঘরেখা
সুখ
সেও কী আর এক পাগলামি নয়?
কে কাকে গৌরী দেয় গঙ্গা মেপে রাখে
শিরার শীতল খাঁজে লেখা থাকে অক্ষরগণনা
আমি আর দু’চার দিন দেখে নিয়ে বাঁকাচোরা
স্রোতে
যে কয়টি ফুল বাকি ঢেলে দিয়ে যাব
তবে তুমি বা কেমন যে একদিনও তরল
ভিক্ষায়
নবনীত চোখেই মাখো না!
প্রবাহের স্বাদ
হিরণ্ময় ঘুমের কাছে ঋণশোধ হলে
একটি প্রণাম রাখি ফুলের চতুষ্কোণ
ছুঁয়ে।
জীবনের শেষে থাকে বাতাসের ক্লান্ত
শ্রমদান;
তবুও কী কিছু আলো কিছু রঙ
পৃথিবীতে ফিরে ফিরে বকেয়া হিসেব
নিতে আসে!
এ-জীবনে খেলা থাকে, হয়তো বা সকলেই
খেলে,
প্রবাহের স্বাদ নিতে রোদ মেখে হাঁটা
জন্মদিনে চড়া রঙ -- বিবাহের প্রজাপতি
আঁকা।
অতিজীবনের হাতছানি ঘিরে বয়স দীর্ঘ
হয়,
সন্দিহান প্রেতাত্মায় ঝুঁকে যায়
বৃক্ষের ডাল।
আমাদের প্রিয়জন যারা ছিল কুয়াশায়
দূরে -- কিছুটা গহিনে
তাদেরকেও কাছে ডাকি,
কিছু কিছু প্রিয় গল্প বলাবলি করি।
নীল দীর্ঘশ্বাস
হ্রদের জলেও থাকে নীল দীর্ঘশ্বাস
লুকিয়ে থাকে রোদগ্রস্ত পর্দার আড়াল
বয়সের উন্মনা টানে ক্রমশ বিঁধে
যায়
অলস প্রতীকের যৌন যোগ্যতার ফাঁস।
সহায়সম্বলহীন বাতাসে ভর করে
রবারগাছের পালাপ্রতিবেশীরচিত প্রতিক্রিয়াহীনতার
নীচে
শরণার্থীর দল দাঁড়িয়ে থাকে ব্যাসার্ধের
গায়ে।
নজরে দীর্ঘ চাঁদ কালান্তরে নিব্যূর্ঢ়
স্বত্বভাগ
গোত্র ভুল বলেছ বলেই তুমি স্তোত্রহীন
ব্যাসবাক্যে ভুল থাকলে সমাস নির্ণয়ে
ভুল হয়।
দোতলায় চমৎকার জায়গা ছিল রঙিন জালের
পর্দায়
ঊনবিংশ শতকের হুরিপরিদের চোখ ঘোরাফেরা
করে।
বাতিস্তম্ভের নীচে দাঁড়িয়ে
খুঁজে বেড়াচ্ছি আস্ফালনের সমাধানসূত্র
তারপর আর কোনোদিন নীরবে বৃষ্টি
হল না মন্দিরে
করুণাধারার নামে কাটাকুটি খেলা
চলল নষ্টমেলায়।
স্ফটিকাতুর
মা ও মেয়ের সম্মিলিত আমন্ত্রণে
ডিশ থেকে ডিশ অ্যান্টেনায়
উঠে যাচ্ছে ভোজলালসার গন্ধ
বিকেলের রোদ অবিকৃত
ঘাস ওঠা চাতালে ফটকিরি আড্ডা।
মুন্সিবাজারে কেনা ফুলের নজরানার
চৌপাট হল রাতদুপুরের লুকোচুরি
ধুপছাঁও গোরুর গাড়ির হুকুমনামায়
ভাদ্র তার শিরস্ত্রাণ খোলে।
ডাহুক ডাহুক পুকুরে রোমকূপের মিসডকল
কিস্তিমাৎ ফেরত চাইতে গিয়ে
মাথা তুলল নাভির দক্ষিণ।
বর্ণমালায় মানুষের রঙ
বিবর্ণমালায় মানুষীর গন্ধ
স্বপ্নবুনোটে এক গভীর ইনসমনিয়া
উইমেনস কলেজের এক বিল্ডিং দীর্ঘশ্বাস!
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন