কালিমাটি অনলাইন

ত্রয়োদশ বর্ষ / ষষ্ঠ সংখ্যা / ১৩৩

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

ত্রয়োদশ বর্ষ / ষষ্ঠ সংখ্যা / ১৩৩

বুধবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৫

গৌতম দে

 

সমকালীন ছোটগল্প


সম্ভাব্য ব্রেকিং নিউজ

রিপোর্টে করোনা পজেটিভ আসার পর পারিবারিক ডাক্তার শান্তনু মজুমদার বলেছিলেন, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার দরকার নেই। বাড়িতেই একটা ঘরে আইসোলেশনে রাখুন। কোনও ভয় নেই। ঠিক সেরে উঠবে। আর এই ওষুধগুলো খাওয়াবেন। বরং আপনারা সাবধানে থাকবেন। পারলে আপনারাও সকলে কোভিড পরীক্ষা করিয়ে নেবেন...।

সেইমতো চলছিল হাবলুর গোটা দিন। গোটা রাত। যত দিন যাচ্ছিল, তার চোখের সামনে একটু একটু করে নিভে যেতে লাগল সুন্দর দিনের আলো। এক গভীর অন্ধকার যেন তাকে গ্রাস করতে লাগল একটু একটু করে। পরিজনরা ভাবল, সে বুঝি মারা গেছে। সার নেই। সাড়া নেই। এই ভাবনা থেকেই রাতের অন্ধকারে চাদরে মুড়ে তাকে ফেলে দিয়ে আসল, বহু দূর এক সবুজ মাঠে।

দিনের আলো ফুটে উঠলে, সেই মাঠে অনেক তৃণভোজী প্রাণীরা ঘাস খেতে আসে। যত দিন যাচ্ছে, এই প্রাণীগুলোর সংখ্যা বাড়ছে। কেননা তাদের দেখভালের কেউ নেই। তার ওপর বেশির ভাগ মানুষের এখন আর রোজগারপাতিও নেই।

অতিমারির মড়ক লেগেছে। সর্বত্র। শ্মশানে ব্যাপক ভিড়। হইচই। কবরের জায়গার অভাব। নতুন শ্মশান, নতুন কবরের জায়গার খোঁজ চলছে প্রতিদিন প্রশাসনের তরফ থেকে। প্রশাসনের লোকজন সম্ভাব্য তারিখের টোকেন ধরিয়ে দিচ্ছে পরিজনদের হাতে। তবুও দিন দিন হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে সেইসব নিয়মকানুন।

অতীতের গল্প, উপন্যাস এবং ছায়াছবিতে দেখা গেছে, প্লেগ এবং কলেরায় আক্রান্ত পরিজনদের রেখে মানুষ পালাচ্ছে দূর কোনও নিরাপদ আস্তানায়। এখন যেন টাইম মেশিনে চেপে সেইসব চিত্রণ ফিরে এসেছে। কেউ কেউ রাতের অন্ধকারে করোনায় মৃত রোগীকে রাস্তার ধারে কিংবা মাঠে ফেলে পালাচ্ছে। কেউ বা আবার গঙ্গায় ভাসিয়ে দিচ্ছে। আধপোড়া লাশ জলে ভাসতে ভাসতে অজানা মুলুকে পাড়ি দিচ্ছে। এইসব খবর হচ্ছে। টিভিতে দেখছে তামাম জনগণ। ঠিক তেমনই হাবলুকে ফেলে পালিয়ে গেছে তার পরিজন।

হাবলু মরেনি। তার প্রাণবায়ু হঠাৎ ফিরেও এসেছে। চোখের পাতা খুলতেই সে চমকিত হল। চোখের সামনে দেখল সবুজ মাঠ। সেই সবুজ মাঠে রাশি রাশি তৃণভোজী প্রাণীরা পুষ্ট সবুজ ঘাস হাম হাম করে খাচ্ছে। খাচ্ছে আর প্রবলভাবে লেজ নাড়ছে।

হাবলু মনে মনে খুব পুলকিত হল। তারা যদি এই মহামারিতে বেঁচে থাকতে পারে, তাহলে সে কেন বাঁচবে না! ওদের খাওয়া দেখে তারও খুব খিদে পেয়ে গেল। এই কদিন সে কী খেয়েছিল, মনে করতে পারল না। একটা অদ্ভুত ঘোরের মধ্যে ছিল যেন! এখনও সেই ঘোর কাটেনি।

এইটুকু সে মনে করতে পারল, তার কোভিড রিপোর্ট পজেটিভ ছিল। তারপরই বাড়িতে একটা সুপ্ত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। করোনার সমস্ত সিমটম তার শরীরে তীব্রভাবে প্রকাশ। হাসপাতালে জায়গা নেই। ঠাঁই নেই কোথাও। অতএব বাড়িতেই থাকতে হবে। মরলে মরতে হবে বাড়িতেই।

ডাক্তাররাই শুধু অক্লান্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। নার্সদেরও সেই একই অবস্থা। নাওয়া-খাওয়ার আর বাঁধাধরা সময় নেই। এই করোনা যুদ্ধে হাজার হাজার ডাক্তার আর নার্স শহিদ হচ্ছেন। বলছে প্রশাসন।

জনগণের এখন আর তেমন হাহুতাশ নেই। কান্না নেই। দুঃখও নেই। সব যেন কেমন কেমন বোধহীন ব্যাপার স্যাপার চলছে চারদিকে। খালি ফোনাফুনি। পর পর প্রশ্ন। কেমন আছেন? ভালো না খারাপের দিকে? বাড়িতে না হাসপাতালে?

তারপর পাশ কাটিয়ে সটকে পড়া।

(২)

হাবলুদের সাকুল্যে দুটো ঘর। একটা ঘরে আইসোলেশন করে রাখা হয়েছিল হাবলুকে। ডাক্তারের নির্দেশে। আরেকটা ঘরে হাবলুর বাবা, মা এবং ছোট ভাই গাবলু, গাবলুর বউ দুলি, তাদের তিন বছরের ছেলে ডাবলুকে নিয়ে কোনওরকমে কুঁকড়েমুকড়ে থাকতে হয়েছিল। এমনভাবে থাকতে থাকতে প্রবল বিরক্ত হচ্ছিল কেউ কেউ। মাঝেমধ্যে দুলি কারণে অকারণে চিৎকার করে উঠছিল।

এক ঘরে জীবন। অন্য ঘরে মৃত্যু। বিরাজ করছে সমান তালে। যুদ্ধংদেহি মনোভাব। কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়তে রাজি নয়। লড়াই জারি আছে মাঝের দেয়ালের দুই পাশে। হাবলু লড়াই করছে। লড়াই করছে হাবলুর আপনজনরাও। জোরদার লড়াই।

পরিজনেরা ভেবেছিল, সে বুঝি মারা গেছে! সারা বিশ্ব জুড়ে স্বাস্থ্য পরিষেবা একেবারে ভেঙে পড়েছে। বাজারে হরেক নামের প্রতিষেধক এসেছে। সবাই এক বাক্যে বলছে, এই ভয়ংকর অতিমারিকে আটকানো যাবে এই ওষুধে। অ্যাতো পারসেন্ট তার সাফল্য। তবুও আটকানো যাচ্ছে না আক্রান্ত এবং মৃত্যুর চোরাস্রোত। চারদিকে ‘নাই’ ‘নাই’ হাহাকার। পাবলিক প্লেসে নতুন নতুন শ্মশান তৈরি হচ্ছে। কবরের জায়গাও।

এখন প্রতিটি পাড়া, প্রতিটি মহল্লা মৃতনগরীতে পরিণত হয়েছে। চারদিকে মৃতের স্তূপ। রাস্তাঘাটে মানুষের লাশ পড়ে রয়েছে দীর্ঘদিন। বাতাসে মানুষপচা গন্ধ। কুকুর-বিড়াল-শকুন মানুষের লাশের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিয়ে নিরাপদ দূরত্বে পাড়ি দিচ্ছে। চারিদিকে ভয়ার্ত মানুষের মুখ। প্রিয়জনদের হারিয়েও কান্না নেই। দুঃখ নেই। মায়া নেই। মুখে কোনও কথা নেই। কেবল নিঃশব্দ স্মৃতিচারণ। এক অদ্ভুত পরিস্থিতি বিশ্ব চরাচরে।

যাঁরা এখনও বেঁচে আছেন, তাঁরা সত্যি ভাগ্যবান। যেমন হাবলু। সে মরেও মরেনি। বহাল তবিয়তে বেঁচে আছে। তার এখন খুব খিদে পেয়েছে। কে দেবে তাকে খেতে? আশেপাশে তো কেউ নেই। কেবল পাখির ডাক। গোরু ছাগলের ডাক।

তাকে মৃত ভেবে বাড়ির লোকেরা এখানে ফেলে দিয়ে গেছে। কখন ফেলেছে? কোথায় ফেলেছে? জানে না সে। চারিদিকে বড় বড় চোখ করে তাকায়। জরিপ করে।

হাবলু এবার মাঠের ওপর উপুড় হয়ে শোয়। তারপর ওদের মতো করে একটু একটু করে সবুজ ঘাস খেতে থাকে। ভালোই লাগে। নোনতা নোনতা। মিঠি মিঠি। বেশ কিছু ঘাস খাওয়ার পর শরীরে বল ফিরে পায় হাবলু। খিদে মেটে। মাঠে চরতে বের হওয়া গোরু ছাগলগুলো লেজ নাড়তে নাড়তে হাবলুর নাগালের মধ্যে চলে আসে। হাবলুর ভালো লাগে দেখতে।

তার মনে অনেক প্রশ্ন জাগে। সেইসব প্রশ্নগুলোর উত্তর নিজের মনেই খুঁজতে থাকে।

(৩)

দুদিন পর হাবলুকে এইভাবে বাড়ি ফিরে আসতে দেখে সবাই অবাক হল। মিনিটখানেক কেউ কথা বলতে পারল না। হাবলুকে আগাপাশতলা পরখ করতে করতে হাবলুর বাবা বাবলু গিরি বললেন- তুই যে বেঁচে আছিস, আমি কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছি না এখনও...!

হাবলুর মা’র গলাতেও বাবার কথার প্রতিধ্বনি- হ্যাঁ রে খোকা, তোর বাবা ঠিক বলেছে। কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না। পরিষ্কার গলায় বললেন মা।

হাবলু অবাক হল।

একমাত্র ছোটভাই গাবলুও বলে উঠল- জানিস দাদা, তোর কি হয়েছিল?

জানি। হাবলু মাথা নাড়ায়।

বল তো কী?

করোনা নামক এক ভয়াবহ রোগ। হাবলু নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে বলল।

দুলি বলল- ডাক্তার তো সেরকমই বলেছিল। বলেছিল করোনার রিপোর্ট পজেটিভ।

তাও জানি।

ডাক্তারের কথামতো আমরা আপনাকে আলাদা করে রেখেছিলাম। দুলি গড়গড় করে বলতে লাগল-হাসপাতালে জায়গা নেই। অক্সিজেন নেই। চিকিৎসা নেই। রাশি রাশি টাকাও নেই আমাদের...।

সেও জানি। তাই তোমরা রাতের অন্ধকারে ফেলে রেখে এসেছ। ভেবেছ, আমি মারা গেছি! তাই তো!

হাবলুর বাবার গলার স্বর নরম হয়ে এল- ঠিক তাই। ভেবেছিলাম, তুই মারা গেছিস। তাই আমরা...।

ঠিকই করেছ। এখন তো রাস্তাঘাটে হাঁটা যাচ্ছে না। বাড়িতে আসতে আসতে অনেক জানা অজানা, চেনা অচেনা মানুষের লাশ রাস্তার ধারে আর ঝোপেঝাড়ে পড়ে থাকতে দেখলাম।

চেনা কাউকে দেখলি?

দেখলাম তো অনেককে। চ্যাটার্জির বাড়ির গণেশকাকা, বিশ্বাসবাড়ির বুড়িপিসি, হোসেনকাকাকেও দেখলাম। রাস্তার ধারে ফুটপাতের ওপর মরে পড়ে আছে। অনেকের চোখ নেই। কাক-শকুনে বোধহয় খেয়ে নিয়েছে। একটা কুকুর বুড়িপিসির হাত ধরে টানছে।

বলিস কী দাদা!

অবাক হলি? যেমন অবাক হলি আমাকে দেখে, তাই না?

হ্যাঁ দাদা। মুখে কিছু না বললেও গাবলু জিগ্যেস করল- তুই কীভাবে বেঁচে বাড়ি ফিরলি?

বলছি। বলছি। তার আগে এক গেলাস জল দে। অনেক দিন ফ্রিজের জল খাইনি। বলার সঙ্গে সঙ্গে দুলি এক গেলাস জল এনে ভাসুরের সামনে রেখে টুক করে সটকে পড়ল। হাবলু ঢকঢক করে জল খেয়ে ‘আহা’সূচক শব্দ বাতাসে ভাসিয়ে দিয়ে বলল- আমাকে বাঁচিয়ে দিয়েছে, মাঠের গোরু ছাগলগুলো...।

কীরকম? কীরকম? সমস্বরে বলে উঠল তারা।

লেজ নেড়ে নেড়ে গোরু ছাগলগুলো সবুজ ঘাস খাচ্ছিল। ওদের খাওয়া দেখতে দেখতে আমারও খিদে পেয়ে গেছিল খুব...।

খিদে তো পাবেই। গত পাঁচদিন তো তোর পেটে কিছু পড়েনি। বলেই হাবলুর মা আঁচলে চোখের জল মোছেন। কান্নার শব্দ হয় না। হাবলু স্পষ্ট দেখল, মায়ের চোখের পাতাগুলো দলা ধরে গেছে।

আহা থামো। থামো। ওর কথাগুলো শুনতে দাও। বাবলু গিরি ধমকে ওঠেন। তারপর বললেন- এবার বল।

তারপর আর কী! আশেপাশে মানুষের খাওয়ার মতো কিছু নেই। তাই বাধ্য হয়ে ওদের মতো ঘাস খেতে  শুরু করলাম। তারপর থেকে ম্যাজিকের মতো কাজ করতে শুরু করল শরীরের ভিতর। একটু একটু করে শরীরে বল ফিরে পেলাম। আর এও বুঝতে পারলাম, ভাইরাসটা বোধকরি খতম হয়ে গেছে।

বলিস কী!

অবাক হলে!

অবাক হবো না? তা বলে সবুজ দুব্বোঘাস...!

অবাকের কিছু নেই বাবা। হাবলু গলায় জোর এনে বলল- এইসব তৃণভোজী প্রাণীদের দুধ আর মাংস খেয়ে তো তাবড় বিশ্বের মানুষজন বড় হয়ে উঠেছে। বুদ্ধি হয়েছে। বোম বানিয়েছে। যুদ্ধ করছে। হাজার হাজার মানুষ মারছে এখনও...।

তা ঠিক। তা ঠিক।

আমাদের শরীরে শক্তি, সাহস আর বুদ্ধি জুগিয়েছে এরাই।

একদম ঠিক কথা বলেছিস দাদা। বাবলু ডানহাত ওপর নিচ করে বলল।

আবার দেখো, কুকুর বিড়ালের অসুখ হলেই ওরা কিন্তু ঘাসের কাছে যায়। সবুজ ঘাস খায়। তারপর ঠিক সুস্থ হয়ে ঘেউ ঘেউ মেউ মেউ করে...।

হ্যাঁ দাদা, ঠিক বলেছেন। আমি দেখেছি। দুলি বড় বড় চোখ করে বলল।

আমিও দেখেছি। বাবলু গিরি উৎসাহ নিয়ে বললেন।

মা’ও বললেন- আমিও দেখেছি।

(৪)

যাঁরা করোনা আতংককে সঙ্গে নিয়ে বেঁচে আছেন, তাঁদের কাছে ঝড়ের বেগে খবর হল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভাইরাসনাশক প্রতিষেধককে ল্যাং মেরে, ড্যাং ড্যাং করে বাড়ি ফিরে এসেছে, হাবলু নামক বছর চল্লিশের এক যুবক। বিভিন্ন মিডিয়াতে এই খবরটা পৌঁছতে দেরি করল না। একের পর এক সাক্ষাতকার দিতে দিতে হাবলু ক্লান্ত। ধ্বস্ত। এই সুযোগে বেকার হাবলু টাকা নিতে শুরু করল। আগে টাকা। পরে কথা। টাকা না দিলে আমি কোনও কথা বলব না।

বলুন এবার। এক সাংবাদিক জিগ্যেস করলেন- আপনি তো মারা গেছিলেন?

হ্যাঁ। বাড়ির লোকেরা তাই ভেবেছিল।

কীভাবে বেঁচে ফিরে এলেন?

এর কৃতিত্ব আমার পরিজনদের দিতে চাই। ওনারা ভেবেছিলেন, আমি মারা গেছি। ভাবাই স্বাভাবিক। আমিও ওদের জায়গায় থাকলে তাই ভাবতাম। দেখছেন তো সারা বিশ্বের কী অবস্থা। পিঁপড়ের মতো মানুষ মারা যাচ্ছে। অনেক দেশই সেইসব হিসেব-টিসেব লুকাচ্ছে। মড়কের চূড়ান্ত পর্যায়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা পাখার বাতাসের মতো একের পর এক ওয়েভের কথা বলছেন দিনরাত। পাবলিক খাচ্ছে আর ভয়ে সিঁটিয়ে যাচ্ছে। তার প্রভাবে মারাও যাচ্ছে টপাটপ। হাবলু একটু থামে। তারপর আবার বলতে শুরু করে- এই অবস্থার প্রেক্ষিতে পরিজন যখন আমায় গাছতলায় মৃত ভেবে রেখে এলো, তারপর থেকেই আমার নতুন জীবনে ফেরা শুরু হল।

সেটা কীরকম?

ফ্রেস অক্সিজেন পেতে লাগলাম। তারপর একটু একটু করে সবুজ ঘাস খেতে শুরু করলাম। শেষে অতিমারি এই বিষাক্ত ভাইরাসকে জয় করলাম। আমার মনে হল, এই সবুজ ঘাসের মধ্যে এমন কিছু পুষ্টিগুণ আছে যা আমাকে বেঁচে ফিরতে সাহায্য করেছে। তাই এখন আমি পুরোপুরি সুস্থ। আপনাদের মারফত দুনিয়ার সকল মানুষকে জানাতে চাই, আজ থেকেই আপনারাও ঘাস খাওয়া শুরু করে দিন।

(৫)

ব্রেকিং নিউজ। খবরটা ছড়িয়ে পড়ল সারা দেশে। দেশ থেকে বিদেশে। দলে দলে বিদেশি সাংবাদিকরাও আসতে শুরু করল হাবলুর কাছে। পার্টি আর প্রশাসন বলয়ের ঘেরাটোপে হাবলু আর হাবলুর পরিজনরা। তাদের দাবিমতো কোটি কোটি ডলার আসতে শুরু করল। হাবলুদের নতুন ঝাঁ চকচকে বাড়ি উঠল। গাড়ি হল। তাদের মনে এখন আর একটুও ভয় নেই।

ঘনঘন টিভিতে ব্রেকিং নিউজ। হাবলু দেখল, সমস্ত দেশের শক্তিশালী বীর রাষ্ট্রপ্রধান এবং ধনপতিরা সবুজ দুব্বো ঘাস চিবোচ্ছে। ক্ষণিকের জন্য তাদের হাতগুলো সত্যিকারের পা হয়ে গেছে। তারা একই সঙ্গে মিটিং ইটিং করছে। প্রত্যেকের পিছনে লেজ গজিয়ে উঠেছে আপনা আপনি। এ এক আশ্চর্য চিত্র!

গৃহপালিত জন্তুগুলো বিস্ময়ে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে। তাকিয়ে আছে আধামৃত আমজনতা...।

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন