কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৪

২০) সুমন্ত চট্টোপাধ্যায়

ধোঁয়াজাল

ধোঁয়ায় উড়ে যায় মৌমাছিরা
পড়ে থাকে কেবল সতীত্বটুকু
নিংড়ে নেওয়া মোচড়ের মুদ্রাদোষে
বড়ো হয় কেরোসিনের ছিদ্র,
হাঁ হাঁ করা রসনার রসায়ন
আগুনের জিভ রাখে নরম ঘাড়ে

নাগরদোলা থেকে স্তন উপচানোর ভয়
ঘুমের শিকলে দুঃস্বপ্নের বুদ্বুদ
জমে আলগা শালপাতার ওপর
ছেঁড়া পরোটার মতো দেশ
কথা বলে টকে যাওয়া টক শো
কসমেটিক্সের চোখ মুখ নেড়ে
সবাই সবাইকে বোঝাতে চায়
পচনের যতিচিহ্ন ভ্রূক্ষেপহীন,
নিরক্ষরেখা আঁচড়ে বল বিকৃতি
হাতুড়ে চাহিদারা যেভাবেই হোক
জার্সি বদলায় মাতব্বর দেওয়াল
সালতামামির লাজুক হাসি চুঁইয়ে
তিল তিল করে সাজানো শরীর
ধোঁয়ায় উড়ে যায় মৌমাছিরা



ক্রসব্রীড

বাতাসে গুঁড়ো গুঁড়ো শুক্রাণু ছয়লাপ
চুনকাম দেওয়ালে সিরিশ কাগজের ঘষায়
বুদ্বুদ বেয়ে নেমে আসে মাকড়সা
কড়িকাঠ থেকে ক্যাকটাসের মাথায়

আলকাতরা মোড়ানো কচি রাস্তারা
জুতোর তলায় তলায় খামচে ধরে
সরু শসার ছিপি আঁটা চোখ
ধ্বজভঙ্গের বিজ্ঞাপন তিনমাথার মোড়ে

চাহিদার দর্শনে একটু থিতু হওয়া
কঠিনের তারল্য জমে পাথর
শিশিরভেজা বল সীমানা ছুঁতেই
চিৎকার ওঠে ইটভাটার ভেতর




মরীচিকা

এক এক করে খুলতে খুলতে
ডুবে যাওয়ার সময়
ছায়াকেও নিয়ে গেল
বাঁধন সুখের লোভ দেখিয়ে

মনে আছে
কালো আকাশের পিঠে কেমন
ধোঁয়া দিয়ে উল্কি এঁকেছিলাম
জোনাকির দেহ থেকে
আলো খুবলে নেওয়া রাতে
অস্ফুট চিৎকার
গড়িয়ে পড়েছিল বিন্দু বিন্দু
তরল কাঁটাঝোপের জানু বেয়ে

চোখের মোহনায় আলোর রেখা বহুদূর,
অথচ ভালো লেগেছিল
টলটলে জলের ওপর
নিশ্চল ভাবনার মরীচিকা



চেয়ার

পরিত্যক্ত দালানের নিঝুম দোতলা,
নৈঋত কোণে জ্যোৎস্না ফালি
বাসর দেওয়ালের রাত চেয়ার
একবার আলো একবার ছায়া
জনহীন আওয়াজ দুলে চলে
রক্তে ঘনিয়ে আসা কাষ্ঠল
শিরা-উপশিরার মসৃণ শীৎকার-
মাতাল জড়ানো আগাছার নেশা
ধরিয়ে পাগল চুর তলানি
শরীরে হাওয়াকার ইতিহাস,
ফাঁকা চেয়ার দোলা থামে না।

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন