কথাকলমা
ফুটব ফুটব করছে এমন কুঁড়ির দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকলে সে নাকি ফোটে না। কারও চোখের সামনে ফুটতে তার কি লজ্জা হয়! কিংবা ঘৃণা অথবা রাগ বা ভয়? ফোটা মানে নিজের সারা শরীর উন্মুক্ত করে মেলে ধরা, সেকথা কি সেও জানে! আমার সন্দেহ কৌতূহল। ঠায় বসেছিলাম স্ফুটোনোন্মুখ সন্ধ্যাতারার কুঁড়িটার দিকে তাকিয়ে। সে না ফুটে যায় কোথায় দেখি! আছি তো আছিই একটা গোটা ঘন্টা, সত্যি, সে কিছুতেই ফুটল না। তবে কি আমার চোখে নির্লজ্জতা ছিল! ঘরে এসে ঘড়ি দেখি, এক ঘন্টা নয়, সেটা ছিল এক মিনিট সময়। প্রতীক্ষারত সময়, তখন থেকেই বুঝেছিলাম, বড় দীর্ঘ হয়। মিনিটটি ঘন্টা-সদৃশ। সময় এভাবেই তার ইলাস্টিসিটি রক্ষা করে। বাড়ে কমে, অবিন্যস্ত হয়, অতঃপর ঘন্টায় পৌঁছায়!
ঘন্টা বাজে। বাজে কথারা। কখনো বেসুরে, কখনো সুরে-সরগমে। কখনো আত্ম-কোলাহলে, কখনো তৈলমর্দনীয়তায়। কথারা বাজে কখনো বুকে মুখে সুখে অসুখে, বেদনার হাসান-হোসেনে কারবালায়...। কমলা মাসি দেবাংশু মেসোর জীবনকথায় এত সুর শুদ্ধ সরগমে আজীবন,-- একজন মারা গেছিলেন হাসপাতালে, একজন ঘরে, একই দিনে। মাঝের সময়টা ছিল দু’ঘন্টা। সেই দু’ঘন্টা সময়টা কি ছিল দীর্ঘ? না কি মাত্র কয়েকটা মিনিট! কে বলবে! সুরে বাজেনি, বুকে বেজেছিল কষ্টসানাই বলেই কি সীতা পাতালে! “পড়লো কথা সবার মাঝে, যার কথা তার গায়ে বাজে”। সে বাজা কী রকম? সুখের? অসুখের? সত্যের? মিথ্যার? প্রবঞ্চণার? সে বাজা রবিশংকর, নিখিল ব্যানার্জীর? না কি কন্যা বিদায়ের বিসমিল্লা খান! এসব জানার মধ্যে কত অজানা যে বসতি করে! আমার প্রেমিক যখন আমার ছোটবোনকে অচানক বিয়ের প্রস্তাব দেয়, যখন বিস্ময়ের দোরগোড়ায় এসে বুঝতে একটু সময় লাগে যে, ওদের এতদিনের খুনসুটি ঝগড়াঝাটি আসলে আমারই সামনে ওদের প্রেমকথা -- তখন বুকের মধ্যে বিক্রমের তবলার চাঁটি অ-চিৎকার-শব্দে...। বাজে, বড় বাজে। স্বপ্ন লহরীর ষোলমাত্রার তৃতালে হাতুড়ি। সালাম তোমাকে হে বহুরূপী কথাকলি। ‘কলি ফুটিতে চাহে ফোটে না’...। স্বপ্ন ছিল দেখার।
এরকম কত যে স্বপ্ন মন-বাগিচায়! স্বপ্ন ছিল এক বিশাল পরিবর্তনের, সারে জাহাঁ সে অচ্ছা, ভারত আবার জগৎ সভায়... এখন কত নম্বরে যেন! ভাবতেও লজ্জা। যারা লজ্জা পায় তাদের অসীম কষ্ট। নির্লজ্জরা কষ্টহীন। স্বপ্নে মজে ব্যাঙ্ক ব্যালেন্সের রাজকীয় পরিবর্তনের। স্বপ্নিল ভেবেছিল নিজেকে পরিবর্তন করবে। ড্রাগ নেবার সময় এলেই পরিবর্তনের কাঁথা-কম্বল ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে...! নিজের সঙ্গে তবু যুদ্ধপিস্তল সদাসর্বদা, রেখেছিল। মোবাইল ফোনে রেললাইন পারাপারে বড্ড সকাল সকাল...। মেডিক্যাল ফাইনালে বসতে, উহুঁ, পারেনি। স্বপ্নময়, বাবা-মা মোবাইল ফোনেই খবর পায়। জন্ম-মৃত্যু দু’য়েরই খতিয়ান রাখে ঐ নির্লিপ্ত শয়তান যন্ত্রটা। দিনে অন্ততঃ ১০০টা মৃত্যুখবর সে হাসিমুখে বয়ে বেড়ায়। সব ট্রেনের তলার খবর।
তলায় তলায় এরকম খেলা অখেলা, সারাবেলা। খেলতে খেলতে কত কী যে! বাইশ তলার খোলা জানালা থেকে টাটা মোটর্সের MD রহস্যখেলায় পড়ে যায় অথবা শশী থারুরের সুনন্দারা চলে যায়, বা যেতে হয় সুনন্দাদের। খেলা ভাঙার খেলা এসে দীঘলবেলা স্রোতে খেলাতে খেলাতে নিষ্ঠুর নিরুদ্দেশে নিয়ে যায় জোড়ের একজনকে, যারা স্বপ্নে ছিল একসাথে থাকার। স্বপ্ন! স্বপ্নদোষ। স্খলন পতন। হীন চতুরতা। কষ্ট বলতে কলম ভাঙে, কথা বলতে কলম ভাঙে। ভাঙা কলমে হীন স্বপ্নেরা, দীন কথারা প্রেতের মতো তা তা থৈ থৈ তা তা থৈ থৈ নিতি নৃত্যে...
ফুটব ফুটব করছে এমন কুঁড়ির দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকলে সে নাকি ফোটে না। কারও চোখের সামনে ফুটতে তার কি লজ্জা হয়! কিংবা ঘৃণা অথবা রাগ বা ভয়? ফোটা মানে নিজের সারা শরীর উন্মুক্ত করে মেলে ধরা, সেকথা কি সেও জানে! আমার সন্দেহ কৌতূহল। ঠায় বসেছিলাম স্ফুটোনোন্মুখ সন্ধ্যাতারার কুঁড়িটার দিকে তাকিয়ে। সে না ফুটে যায় কোথায় দেখি! আছি তো আছিই একটা গোটা ঘন্টা, সত্যি, সে কিছুতেই ফুটল না। তবে কি আমার চোখে নির্লজ্জতা ছিল! ঘরে এসে ঘড়ি দেখি, এক ঘন্টা নয়, সেটা ছিল এক মিনিট সময়। প্রতীক্ষারত সময়, তখন থেকেই বুঝেছিলাম, বড় দীর্ঘ হয়। মিনিটটি ঘন্টা-সদৃশ। সময় এভাবেই তার ইলাস্টিসিটি রক্ষা করে। বাড়ে কমে, অবিন্যস্ত হয়, অতঃপর ঘন্টায় পৌঁছায়!
ঘন্টা বাজে। বাজে কথারা। কখনো বেসুরে, কখনো সুরে-সরগমে। কখনো আত্ম-কোলাহলে, কখনো তৈলমর্দনীয়তায়। কথারা বাজে কখনো বুকে মুখে সুখে অসুখে, বেদনার হাসান-হোসেনে কারবালায়...। কমলা মাসি দেবাংশু মেসোর জীবনকথায় এত সুর শুদ্ধ সরগমে আজীবন,-- একজন মারা গেছিলেন হাসপাতালে, একজন ঘরে, একই দিনে। মাঝের সময়টা ছিল দু’ঘন্টা। সেই দু’ঘন্টা সময়টা কি ছিল দীর্ঘ? না কি মাত্র কয়েকটা মিনিট! কে বলবে! সুরে বাজেনি, বুকে বেজেছিল কষ্টসানাই বলেই কি সীতা পাতালে! “পড়লো কথা সবার মাঝে, যার কথা তার গায়ে বাজে”। সে বাজা কী রকম? সুখের? অসুখের? সত্যের? মিথ্যার? প্রবঞ্চণার? সে বাজা রবিশংকর, নিখিল ব্যানার্জীর? না কি কন্যা বিদায়ের বিসমিল্লা খান! এসব জানার মধ্যে কত অজানা যে বসতি করে! আমার প্রেমিক যখন আমার ছোটবোনকে অচানক বিয়ের প্রস্তাব দেয়, যখন বিস্ময়ের দোরগোড়ায় এসে বুঝতে একটু সময় লাগে যে, ওদের এতদিনের খুনসুটি ঝগড়াঝাটি আসলে আমারই সামনে ওদের প্রেমকথা -- তখন বুকের মধ্যে বিক্রমের তবলার চাঁটি অ-চিৎকার-শব্দে...। বাজে, বড় বাজে। স্বপ্ন লহরীর ষোলমাত্রার তৃতালে হাতুড়ি। সালাম তোমাকে হে বহুরূপী কথাকলি। ‘কলি ফুটিতে চাহে ফোটে না’...। স্বপ্ন ছিল দেখার।
এরকম কত যে স্বপ্ন মন-বাগিচায়! স্বপ্ন ছিল এক বিশাল পরিবর্তনের, সারে জাহাঁ সে অচ্ছা, ভারত আবার জগৎ সভায়... এখন কত নম্বরে যেন! ভাবতেও লজ্জা। যারা লজ্জা পায় তাদের অসীম কষ্ট। নির্লজ্জরা কষ্টহীন। স্বপ্নে মজে ব্যাঙ্ক ব্যালেন্সের রাজকীয় পরিবর্তনের। স্বপ্নিল ভেবেছিল নিজেকে পরিবর্তন করবে। ড্রাগ নেবার সময় এলেই পরিবর্তনের কাঁথা-কম্বল ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে...! নিজের সঙ্গে তবু যুদ্ধপিস্তল সদাসর্বদা, রেখেছিল। মোবাইল ফোনে রেললাইন পারাপারে বড্ড সকাল সকাল...। মেডিক্যাল ফাইনালে বসতে, উহুঁ, পারেনি। স্বপ্নময়, বাবা-মা মোবাইল ফোনেই খবর পায়। জন্ম-মৃত্যু দু’য়েরই খতিয়ান রাখে ঐ নির্লিপ্ত শয়তান যন্ত্রটা। দিনে অন্ততঃ ১০০টা মৃত্যুখবর সে হাসিমুখে বয়ে বেড়ায়। সব ট্রেনের তলার খবর।
তলায় তলায় এরকম খেলা অখেলা, সারাবেলা। খেলতে খেলতে কত কী যে! বাইশ তলার খোলা জানালা থেকে টাটা মোটর্সের MD রহস্যখেলায় পড়ে যায় অথবা শশী থারুরের সুনন্দারা চলে যায়, বা যেতে হয় সুনন্দাদের। খেলা ভাঙার খেলা এসে দীঘলবেলা স্রোতে খেলাতে খেলাতে নিষ্ঠুর নিরুদ্দেশে নিয়ে যায় জোড়ের একজনকে, যারা স্বপ্নে ছিল একসাথে থাকার। স্বপ্ন! স্বপ্নদোষ। স্খলন পতন। হীন চতুরতা। কষ্ট বলতে কলম ভাঙে, কথা বলতে কলম ভাঙে। ভাঙা কলমে হীন স্বপ্নেরা, দীন কথারা প্রেতের মতো তা তা থৈ থৈ তা তা থৈ থৈ নিতি নৃত্যে...
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন