কবিতার কালিমাটি ১০৫ |
যতিচিহ্ন - অনড়
অজস্র
ধন্যবাদ আর প্রণাম চিহ্নের আদলে আছো জড়িয়ে!
দেবনাগরী
লিপির হরফে তোমায়,
বাম
থেকে ডান পড়া যায় অবলীলায় -
মাঝে
মাঝে বাদ সাধে অনড় কিছু যতিচিহ্নে!
শেষ
বিকেলের জানলায় এক পৃথিবী আকাশ
আমায়
ডাকছে!
কেমন
দমবন্ধ, ধোঁয়াটে
হলুদ-লাল
সন্ধ্যামণি দুলছে মেঠো গন্ধে।
মাটি
শান্ত এখনও
তবু
মনে হয় একটা ঝড় উঠবে!
ধেয়ে
আসবে আদিম বন্যতায়,
গুহামানবের
মতো বিষাক্ত বল্লম-তীর নিয়ে!
উড়িয়ে
পুড়িয়ে দেবে যতকিছু স্বেচ্ছাচারে
তবু
এমন একটা ঝড় আসুক ধেয়ে।
দূরে
পশ্চিমে দেখা যায় সে ঝড় থমকে আছে
আদি
ব্রাহ্মী লিপির মাঝে
কিছু
অনড় যতিচিহ্নে!
মাঝে মাঝে
সমুদ্রের
পাশ ঘেঁষে হেঁটে গেলে
একটা
আঁশটে গন্ধ নাকে আসে
মাঝে
মাঝে!
আলোড়ন
তখন অস্থির বাতাসে
দিগন্ত
সমান নীল ঢেউ উঠে আছড়ে পড়ে
ভিজে
বালুতট ভরে যায় ঈশ্বরী জলছাপে।
কিছু
কিছু দৃশ্য জাগায় স্বর্গীয় অনুভূতি
মাঝে
মাঝে,
আর
ফ্রেমে বন্দি ঈশ্বর শুধু মুচকি হাসে!
ধুনো-ধূপের
গন্ধ তখন পারিপার্শ্বিক বাতাসে।
স্মৃতিকথা
বিকেল’টা
কেমন গড়িয়ে পড়লো টুপ করে সন্ধ্যের আলসেতে
যেখানে
হিমেল রোদ্দুর ছিল সকালে, চিকচিকে
অন্ধকার
হাতড়াই, ইতস্তত ছড়িয়ে থাকা টুকরো স্মৃতিগুলো ঝালিয়ে নিতে!
মুখ
নামিয়ে দেখি পুরনো বাড়িতে তখন জোনাকির মিছিল
অতীতের
না-ফেরা ছায়া’রা জুড়ে আছে স্পষ্ট অবয়বে!
হঠাৎ
ক্যানভাসে ফুটে উঠলো একটা ছবি
সাদা
পাতায় নীল সুলেখা কালি,
ল্যাপ্টানো
পিঁপড়ের সারি
হিজিবিজি
লেখারা সব একের পর এক ডিগবাজি!
মনে
পড়ছে,
লাল
মলাটে শিবরাম রচনাসমগ্র
উপহার
সে প্রথম হাতে পাওয়া
বাবার
দেওয়া!
আজও
আছে অখন্ড অবসরে,
বন্ধ
দরজার আড়ালে, বদ্ধ বাতাসে
চিলেকোঠা,
ঘুলঘুলি-
সারা
দুপুরের দোল খাওয়া ছুটি!
এখন
সারাদিনের
চুপ করে থাকা জানলায়
ঠেস
দিয়ে গল্পের ঢেউগুলো
জানান
দিয়ে যায়, ওরা নাকি কেউ ভালো নেই
আর
আমি... কী জানি কেমন আছি!
চাঁদের কাছে
সুখের
হঠাৎ চট’কা ভাঙে,
অঘোষিত
বজ্রপাতে!
সোহাগ
মুখে আবার কেমন মেঘ জমেছে!
চাঁদের
কাছে হাত পেতেছে বিলাস করে,
অভাগা
দিলো কলঙ্ক-ভাগ উজার করে।
এখন
মুখ, থমকে দাঁড়ায়,
স্বপ্ন
ভাঙে, অঝোর ঝরে!
কেবল
ছাল-বাকলের কলঙ্কদাগ, কুঠার জানে।
সময়
বুঝি বৃথাই গেল জ্যোৎস্না লোভে-
কত
কী যে করার ছিল বৃষ্টিজলে!
দু:খ
শুধু’ই মন জানে, শুধু মন’ই জানে!
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন