কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

বুধবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৩

এলিজাবেথ বিশপ-এর কবিতা

 

প্রতিবেশী সাহিত্য

 

এলিজাবেথ বিশপ-এর কবিতা       

 

(অনুবাদ : বাণী চক্রবর্তী)   




 

কবি পরিচিতি : এলিজাবেথ বিশপ একজন আমেরিকান কবি ও ছোট গল্পের লেখক। তিনি ১৯১১ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৭৯ তে মারা যান। পুলিত্জার, ন্যাশনাল বুক এওয়ার্ড সহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। অনেকে তাকে বিংশ শতাব্দীর ‘পিউরলি গিফটেড’ কবি মনে করেন।

 

Mountain (পর্বত)

 

সন্ধ্যায় আমার পেছনে কিছু থাকে…

একমুহূর্তের জন্য ভয়ে অথবা ব্যথায়

নড়বড় করতে করতে থামি… জ্বলে উঠি!

আমার বয়স কত জানি না!

 

সকালের স্থিতি আলাদা…

একটা খোলা কিতাব থাকে সামনে,

এত সামনে যে আরামদায়কভাবে পড়া যায় না।

বল আমার বয়স কত!

 

এরপর উপত্যকার চারপাস!

অপ্রতিরোধ্য কুয়াশা কানে

তুলোর মতো ঢুকে পড়ে!

আমার বয়স ত' জানি না…

 

নালিশ করতে চাইনা… ওরা বলে

আমার দোষ!

কেউ আমাকে কিছুই জানায় না

বল আমি কত বছরের!

 

গভীরতম সীমারেখা ও

ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং

আবছা হয়ে যায় পুরনো উল্কির মতো!

আমার বয়স জানি না।

ছায়া নিচে নেমে আসে…

আলো আরোহন করে…

 

ওহ আলোর মতো শিশুরা!

হাতে পায়ের কসরতের পর ওপরে ওঠো!

 

One art (একটা আর্ট)

 

কিছু হারানোর কলায় সিদ্ধ হওয়া

কোনো কঠিন ব্যাপার নয়।

এমন অনেক কিছু জীবনে ভরে থাকে

কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে নয়… যা হারিয়ে গেলে

কোনো বড় ক্ষতি হবে না!

 

প্রতিদিন কিছু হারাই…

দরোজার চাবি হারিয়ে বিব্রত হই,

অথবা খারাপ কাটা ঘন্টাগুলোও হারায়!

হারানোর কলায় সিদ্ধ হওয়া

কঠিন ব্যাপার নয়!

 

তাহলে আরও দ্রুত হারানোর

অভ্যেস করে দেখো না…

জায়গা, নাম, কোথায় ঘুরতে যাবে?

এগুলো কিছুই কোনো ক্ষতি করে না!

মায়ের ঘড়ি হারিয়ে ফেলেছি…

দেখ, আমার তিনটে আবাসনও চলে গেছে,

হারানোর কলায় সিদ্ধ হওয়া

কোনো কঠিন ব্যাপার নয়!

 

দুটো শহর হারিয়ে ফেলেছি…

তার চেয়েও বড় কিছু রাজত্ব,

দুটো নদী একটি মহাদেশ

সর্বদা মনে আসে…

কিন্তু সেটাও বড় ক্ষতি নয়!

 

এমনকি তোমাকে হারিয়েও

(যার আওয়াজ, যার রসিকতা ও অঙ্গভঙ্গী

আমার ভালবাসার ছিল)

মিথ্যে বলব না… এটা প্রত্যক্ষ!

হারানোর কলা আয়ত্ত্ব করা খুব  

কঠিন ব্যাপার নয়…

যদিও এটা ধ্বংসস্তুপের মতো হয়ে যায়!

 

Two mornings and two Evenings (দুটো সকাল দুটো সন্ধ্যা)

 

আমি এপার্টমেন্টের প্রত্যেকটা ঘড়ি

লক্ষ্য করি… কিছু কাঁটা আবার

নাটকীয় ভাবে একটাই দিক - দর্শন করে

কিছু আবার অন্যদিক।

যেন এক সরল অজ্ঞ মুখের কারসাজি!

 

সময় একটা তারার মতো…

এতটাই ভিন্ন ভিন্ন পথে চলে যে

দিনগুলো শহর থেকে শহরস্থলী

চক্রাকারে ঘোরে।

নক্ষত্রগুলোর চারিপাশের বৃত্ত

একে অপরকে ছাড়িয়ে যায়।

 

হাল্কা শীত পায়রার প্রসারিত ডানার মতো

যা কি-না মৃত স্যাঁতসেঁতে পালকের সমষ্টি!

 

নিচের প্রাঙ্গণে দেখ…

সব বাড়িগুলো একইভাবে তৈরি,

যেখানে চতুষ্কোণ ছাদের মাথায়

অলংকৃত মাটির হাঁড়িগুলো বসানো।

সেখানেই পায়রাগুলো ঘুরে বেড়ায়!

এটা আত্মচিন্তনের মতো, গভীরে দেখা

অথবা অতীতের স্মৃতি রোমন্থন!

 

চতুর্ভুজের ভেতর একটা নক্ষত্র…

একটা স্মৃতি!

 

 

 

 

 

 

 

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন