কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

বুধবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৩

বিদ্যুৎলেখা ঘোষ

 

কালিমাটির ঝুরোগল্প ১২১


সূর্য জেগে আছে তবুও রাত

মেজোভাই 'চন্দ্রযান দুই' প্রাণ ফিরে পেয়ে সিগন্যাল পাঠানো শুরু করে এবার বোন 'চন্দ্রযান তিন'এর অভিযান পথকে সুগম করে তুলছে। পৃথিবী ঘিরে পঞ্চম অক্ষপথ ঘুরে  মহিমান্বিত অন্ধকারে সে ছুটে চলেছে দ্রুততমবেগে একলা, আরেক একলা ক্রমশ দূরে সরে যাওয়া অভিমানিনীর কাছে। পোড়া গ্রীষ্মকালের পর কলকাতা বৃষ্টি ভিজছে আজকাল। মহাশূন্যের আঁধার এসে মিশেছে আধ পৃথিবী অনুভবের রংপুরে। পূর্ণিমা রাত তবুও কালো জল রঙে নিঝুম। কিছু মৃদু ও নীরব একটানা সুর ভাসছে। জানলা খুললেই যে আমগাছ, তার পাতায় পাতায় টুপটাপ মধ্যলয় বাজছে অনবরত।

ইয়ারফোন কানে সে শুনেছিলো  'কুছ না কহো'। তার ঠিক আগে শুনেছে 'দিল হুম হুম করে'। এরপর প্লে- লিস্টে আছে 'তুহি রে…'। বর্ষাকাল এলে এই গানগুলোই বেশি শোনে লোকজন। এই ঘুরঘুট্টে রাতে সেও  একলা। বিয়ে অবশ্য হয়েছিল। বাচ্চা মানুষ হচ্ছে সহোদরা বোনের কাছে। যমদূত হঠাৎ করে নিয়ে গেছে তার জীবন পথের সাথীকে। চাইলেই সে এরপর  নানারকম সাইকাডেলিক আনন্দে আত্মহারা হতে পারতো, কিন্তু না। মাঝে মাঝে একটা নিপানন্দেই নিরানন্দ কাটায়। ফ্রি সেক্সের অফার এলে পেঁচো মাতলামি শুরু করে। ঝঞ্ঝাটের ভয়ে দ্বিতীয়বার উক্ত ব্যক্তিটি ধারেকাছে ঘেঁষে না। অ্যালকোহল ব্ল্যাকআউট হোক না হোক  সবসময় ত্রাতার ভুমিকা পালন করে। হিপ্পোক্যাম্পাস আর গৌরীদেবী কখন যেন গলাগলি করে ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে!

বর্ষাকাল, তাই যার যখন প্রোমোশন হবে তার উপরে খাঁড়া ঝুলিয়েই রাখা হয়। পার্টির শুরুতে কলিগদের ছেলে মেয়েদের ভালো খবর শুনে বাহবা দেওয়া নেওয়া চলে। নাচাগানা, পেগ চালু হলে বাঁহাতে পেগ আর ডানহাতে কাটি কাবাবের গায় ছোট ছোট কামড় বসাতে বসাতে নাচের ভান করছে সে। এরকম সময়গুলো   খানিকক্ষণ সবটা ভুলতে পারার অবসর। কিন্তু, মাটি হয়ে গেল। পঙ্কজ হঠাৎ ওকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো। কোভিড ওর স্ত্রীকে ছিনিয়ে নিয়েছে। পেগের কল্যাণে বুক ঠেলে বেরোনো যত কান্নার মিছিল কোনোরকম সব সামলে পার্টি হল থেকে সে বেরিয়ে এলো।  

পরের দিন কাউকে কিছু না বলে সে রওনা দিলো চান্ডিল আরেকজন কলিগকে নিয়ে। এক ফ্যামিলির নয়, আধারকার্ড সাক্ষী। বেশি ভাড়া দিয়ে হোটেলে রুম নিতে হল। হোটেল মালিক কারণ জানতে চাইলে সে বললো - চুদবো বলে এসেছি। হোটেল মালিক আরও আগ্রহী হয়ে মাল সাপ্লাই দেবে কিনা জানতে চাইলো। সে বললো, দুজনেই তো আছিই…। আইন ও আমাদের মতো লোকদের কিছু ছিঁড়বে না। রাতের শ্মশান  দারুন লাগে। ওখানেই বসবো খানিকক্ষণ। যাবেন নাকি? আমার পার্টনার এখন ঘুমে কাদা। মাথা নেড়ে না বলে মালিক যেন একটু বেশ মুষড়ে পড়লো।

 

 

 

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন