কবিতার কালিমাটি ১১৭ |
অন্তর্মুখী
(১)
বহুযুগ আগে
একটি ফুল ফুটেছিল
পথের ধারে,
হৃদয় মন
কেড়ে নিয়েছিল,
সেই ফুলের দেখা
মেলেনি আর,
চোখেও
পড়েনি কখনো
আর ওর মত কিছু;
সত্য না কল্পনার
বুদ্বুদ? না
দিবাস্বপ্নের মনোরম বিভ্রম,
যা অবিরাম পঠনে
ক্রমশ সত্যি
হয়ে যেতে পারে?
হয়তো স্বপ্নলোকে
বাস
তার, অন্য কোনো
লোকে, অনেক
অনেক দূরে,
অন্য
এক আকাশের নিচে।
হঠাৎ বাতাসে
ভেসে আসে সেই
চেনা
সুবাস, মন হয়
উদাস, চঞ্চল, হৃদয় হয়
বিহ্বল, প্রশ্ন
জাগে মনে,
স্বপ্নে কি
মেলে আদৌ কোনো সুবাস?
(২)
বোধোগম্য, বোধের
বাইরে,
হয়তো অন্য কোনোকিছু,
তোমায় প্রতিরাতে
নিয়ে যেত আবছায়া
অতীতের
দোরগোড়ায়।
অবচেতনে প্রস্ফুটিত হতো অনেক
অতি রমণীয় সব
রক্তগোলাপ,
যা পরক্ষণেই
ভয়াল দর্শন ফণাধর সাপ; তুমি
দংশিত হতে।
নদীর জলে
এ কার ছায়া
পড়ে? প্রিয়ংবদ সখার অতি প্রিয়
বিষণ্ণ মুখ,
থেকে থেকে হয়ে যায়
ভীতিকর, বিচিত্র
এক জলদানব; তুমি বিস্মৃতির
অন্ধকার চাইতে,
স্মৃতিচারণই এক
ভীষণ শাস্তি
যেন। তারপর একদিন হঠাৎ,
সমুদ্রের গভীরতম
তলদেশ থেকে
ভেসে আসে মোহন
সুরধ্বনি আর মন্দ্র এক স্বর;
সব জট খুলে
যায় একে একে;
অতীতে বিচরণ
এখন সহজ অনেক। তোমার
ভেতরে এখন বাঁধ
ভাঙা জল,
কুলুকুলু ধ্বনি,
আবারো বয়ে চলে দুর্বার স্রোতস্বিনী।
(৩)
আনন্দের সময়ে
আমি স্বস্তিতে
বাঁচি না বরং
দুঃখের সীমাহীন কাল রাত্রিতে
বাঁচি সূর্যোদয়ের
অপেক্ষায়।
কথোপকথন ইথারে
মিশে গেলে কিছু রেশ থেকে
যায় স্প্লিন্টারের
মতো, কিছু
ছুঁয়ে থাকে
যেন পাখীর নরম পালক, কিছু আবার
এদিক সেদিক
ছুটোছুটি করে,
তারপর পথ হারায়।
সময়টা বড় দ্রুত শেষ হয়ে
যায়, অশান্ত
হৃদয় কেবল এক
পলকের জন্য
বিরাম পায়, তারপর আবারো কোথাও
বেজে ওঠে শোপাঁ
তাঁর বিষাদের
সিম্ফোনি নিয়ে,
রাখে হাত আমার বুকের গভীরতম
প্রদেশে, যেখানে
তীরাহত ছোট্ট
এক পাখি কেঁদে
ফিরে যা রয়ে যায় অশ্রুত আজো।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন