কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

শনিবার, ১৪ মে, ২০২২

দেবযানী বন্দ্যোপাধ্যায়

 

কবিতার কালিমাটি ১১৭


নাওয়ে ভেজা গল্প কাহিনী

 

গোপন আস্তানার কাছে রয়ে গেছে দো-মোহনা  ভাঙা কারবার

মাঠে জাগে ভাঙা চাঁদ, সুপ্ত তার, তেরছা কোনো চাউনি জোড়া চোখ

বৃষ্টি আসে বাঁয়ে...

অস্বস্তিকর ঘুমের বাঁকে, পা গুটোনো শরীরের  ভাঁজে

নির্মেদ কাহিনীর বাস

সে কি জেনেছিল ফাঁকা-একলা ঘরে এক দশক বন্ধ থাকার কারণ?

রাস্তা পথ ঘাট নির্জীব,

দেখা হয় না আর কোনো হাওয়ায় উড্ডীন দিনের সাথে,

বর্ষাকাল চলেছে সমানে –

 

আজ হাঁটা শুরু হল, বহুদূর চলে যাবে পথ,

আলপথ,

খোলা মাঠ রূপালী জীবন্ত কত রাত,

বাঁকা পথে পড়ে থাকা নীরব চোখের দিনলিপি

 

দূরের পারানি কড়ি নাও বেয়ে চলেছি এমনি

ধুলো গাছ, আলপথ

বৃষ্টি ভেজা, কাক ভেজা হয়ে যায়, ক্রমশ, কেবল...

 

এখন এমত বাঁচি

 

এখন এমত বাঁচি।

ঘুম ভাঙ্গার কাল পেরোয় রোদ, সূর্য

জানালার ফাঁক দিয়ে এসে মুখে পড়ে।

বদ্ধ ঘর তবু –

সূর্য ছাড়ে না, সারাদিন কাজের পাহাড় -

তার কাছে বসে থাকে নির্লিপ্ত আলো।

 

জমা ঘর, বই খাতা, অথচ কী বাঁক খুঁজে, খুঁজে পায় ঘড়ি,

পুরনো জমানো জল, ছোট খাটো কাঠ, লেপের ভাঁজের কাছে ধুলো,

শীত চলে গেছে কবে, দাবদাহ রোদে পুড়ে ছাই।

মুহূর্তের তার ভেসে এক তারে আবার একার,

জেগে ওঠে ঘর, কানা বারান্দা, টেবিলের কাঠ,

জেগে ওঠে তার, এসব যদিও জল, জলের রেশ।

গভীর গভীর মোহ সময় পেরোয়।

টুকরো মুহূর্তময় সময় পেরোয়।

আমি না আমির মুহূর্ত পার্থিবময়।

ঘর বাড়ি, সন্ধ্যে ছাদ, শান্ত রাস্তা পড়ে, নির্জন পাড়ে

রাতের ঘুম থেকে আর এক ঘুমের দিকে, সূর্য যাত্রা করে,

মুখে এসে পড়ে।

 

চিরকালীন

 

তোমার ক্ষত, আমার মৃত্যুভয়, তোমার বুকে বাজে।

দিন রাত বয়ে চলে অনন্ত দুপুর জোড়া ঘুমে

হাতের কাছের হাত পড়ে থাকে পাশে...

ছোঁয়ার নিয়ম জানে অমোঘ ওষুধ

দিন রাত মেলে ধরে বৃষ্টি নদী বয়।

জীবন শেষের ওই মৃত্যু দুয়ার খোলা থাকে -

প্রশ্ন জেগে ওঠে

অনন্ত কাল জুড়ে -

আর আজ রাতে এই মৃদু হওয়া বয়...

 

বহু যুগ আগে এক পূর্ণিমা রাতে শাক্যমুনি বসেছিল ধ্যানে

জীবনের জরা রোগ মৃত্যু,

ঘরের দুয়ার ছেড়ে পথে পথে,

বহু পথ বহু ঝড়,

সত্য কোথায়?

চারিদিকে মৃত্যুমিছিল,

এমনই দৃশ্য সব করেছিল আহত, রাজপুত্রকে,

ঘর ছেড়ে বসেছে অস্থির।

অনন্ত অন্ধকার বয়ে যায়

আকাশ পার করা মলিন বাতাস।

অন্ধকারে জেগে ওঠে ধী আর মৃত্যুমিছিল।

কোন আদি কন্দরে, কোন সে প্রাচীনকাল জুড়ে,

ভীত মন ঈশ্বর খোঁজে-

ঈশ্বর? কোথায়? মৃত্যুই বা কি?

বহুদূর পার করে যে সূর্য্ আলো আসে, অর্থ কি তার?

কত যুগ পার করে কতো দিন যায়।

বোধ মাঝে জেগে ওঠে অন্ধকার আলো। শীতল বাতাস।

রোদ ঝড় বৃষ্টি পার করে যায়।

ভয় কাকে বলে? আসলে ভয় কি?

মৃত্যু আসল ভয়। মৃত্যু ভয়। এই তো কথা শেষ।

এই তো খেলার ছলে বলা। সন্ধ্যে হয়ে আসে। শান্ত বাতাস, কালও দেখেছি-

বিকেল শান্ত ছিল, ছিল আকাশ জুড়ে দক্ষিণ হাওয়া।

বয়ে গেল এ পারের খুঁটি বেয়ে ওই পারে। ওই দূর পারে।

 

দিনলিপি ৩

 

কেন তুমি পুড়িয়েছ পা? গন্ধ মাদন যেন ভেঙ্গে ফেলবে রাতে।

তোমার ক্ষত, আমার মৃত্যুভয় তোমার বুকে বাজে।

দিন রাত বয়ে চলে অনন্ত দুপুর জোড়া ঘুমে

হাতের কাছের হাত পড়ে থাকে পাশে...

ছোঁয়ার নিয়ম জানে অমোঘ ওষুধ

দিন রাত মেলে ধরে বৃষ্টি নদী বয়।

জীবন শেষের ওই মৃত্যু দুয়ার খোলা থাকে

তবুও তো রাতেই আজ মিহি হওয়া বয়।

মুহূর্তের খাঁজ ভাঁজ জীবন জুড়েই সে তো চোরা নদী বয়,

নদীর পায়ের কাছে পা

আঙ্গুলে আঙ্গুল জোড়া কারসাজি খেলে।

এ তো গেল রাত ঘুমে বৃষ্টির আগের খবর,

বন্ধ দরজা পাশে চোরা নদী বয়।

আকাশে তারারা আজ জেগে জেগে থাকে

রাত হয় রাত ঘুমে আকাশ এখন

অন্ধকারে রাত জোড়া তারা ছেয়ে যায়...

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন