কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

শনিবার, ৮ জুন, ২০১৯

তাপসকিরণ রায়




এই যে গাছের মত

এই যে গাছের মত পাশাপাশি দাঁড়িয়ে
আজ কত যুগ পার হয়ে গেলো
আশপাশ তোর শরীরের আনাচে কানাচে
সে সব তিল জরুলগুলির কথা বলে দিতে পারি,
কিন্তু তোমায় আর জানা হল কোই!
আজ সেইখানে থেম আছি মাটির শিকড়ে
জীবন যেভাবে থাকে,
তার বাহির দৃশ্যে বুঝি
তার অনেকটাই শেষ হয়ে যায়
অথচ এক দিন দেখো তুমি--
অভ্যন্তর ব্যথা থেকেই শুরু হবার কথা ছিল।
শেষ ও শুরুর মাঝের ঠিকানা হারিয়ে গেছে।

একান্তে চুমু খাওয়ার

একান্তে চুমু খাওয়ার সকালের মাঝে যে দুঃখ লুকিয়েছিল--
তা আমি জানতে চাইনি।
খোলস পাল্টে ফেলে তা থেকে বেরিয়ে আসা আর বুঝি হল না।
সে ঠিকানা কোথায় রেখে গেছো তুমি ?
হাসির মধ্যে দুঃখ লুকিয়েছো--
দুঃখের মাঝ থেকে উঠে আসে তোমার অভ্যস্ত হাসিগুলি !
আমি তো ভাবি ঝুঝি তুমি সুখেই আছো।
কি হবে তোমার ঠিকানা চেয়ে !
আতুর দুঃখগুলির মাঝে সর্বহারা একটা দিক--
ভাবনার জড়তায়, ভাত ঘুমের আলস্যে,
না জানতে চাওয়ার অভিমান থেমে থাকে।

যেটুকু দুঃখ পেয়েছি

যেটুকু দুঃখ পেয়েছি সেটুকুই থেকে গেছে বুকের গহনে।
সুখগুলি ভোগ হয়ে যায়--তাই বুঝি ফুরিয়ে যায় অনায়াসে--
দুঃখগুলি জমা রাখি আপন প্যাটারায়, চিঠির তরঙ্গ থেকে
কখনো উঠে আসে অতীতের রাখাঢাকা সব কিছু--
এমন দুঃখ আছে তুমি তাতে স্বপ্ন হয়ে থাকো--
অফুরান সময়ে কখনো তুমি তাকে খুলে দেখতে বসো  
সুখগুলি কর্পূর হয়ে উড়ে যায়,
তার গন্ধ বুঝি পড়ে থাকে বিষাদ ছাপের মাঝে।
সে সব স্মৃতিগুলি গায়ে আর মাখা যায় না।
দুঃখগুলি আশপাশ মাছির মত উড়ে বেড়ায়।
ধরে নেবার ভ্রমে সে সুখটুকু উবে যায়।
আমের রস ও গন্ধে আমোদ সে সব গায়ে লাগা মাছি।
শরীর ঘৃন্যতার মাঝে ম ম এই মাছির ঘৃণ্যতা।

লালঘুড়ি

আমি ফাঁদ পাতি।
শরীর সুখের খাঁচায় বাঁধি তোমার শিল্পশরীর।
তোমায় না পেলেও চিত্ররূপ ধরা আছে আমার চোখআয়নায়।
যখন চাই খুলে ধরি সে বুকের কাছছবি।
তাকে হাসাই। খিল খিল উছলে পড়ে সে--
হাসির লালপানা বসন্ত ঠোঁটে আমি ঠোঁট রাখি।
পিয়াসী কৃষ্ণচূড়া বাতাসি ঝাঁপে কেঁপে ওঠে বাসন্তী হাওয়া।
আমি মুখ রাখি। হে বসন্ত, তুমিও লাল মাছি
ছিদ্র কেটে ঢুকে যাও রন্ধ্রপথে
সাঁওতালী মেয়ের ঘ্রাণে উদাম লালভ সে মাটি ছিল।
অবশেষে শ্রান্তি--আইয়াশী মনের ভাসান হয়।
তোমার মৌবনের উদ্ধত ছবিকে পরিস্ফুট করে দিয়ে  
পাশ দিয়ে চলেযায় ধর্ষকামীর দল।
আড়ালে দেখে নিই দৃশ্যাবলীর ঘন সমীকরণ।
সুতো গুটিয়ে নিয়ে বিপর্যস্ত লাল ঘুড়ি দেখি।

ফকির

একটা জাগায় আমি ফেটে পড়ি,
অন্য জাগায় সে সব দৃশ্যাবলীর ভিডিও চালিয়ে
কতটা হাড় সর্বনাশা দেখি!
একাধারে বোধ ও দৃশ্য লালিত হয়
নির্লিপ্ত গান ধরি--
আমি যে ফকির, বাতাস ধরে খাই
আমি সাথেও নাই, আবার পাছেও নাই।


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন