কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

মঙ্গলবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

জপমালা ঘোষ রায়




ঘড়ি ওয়াল

মানুষ কখন ঘড়িয়াল হয়, কখন ঘড়ি ও দেয়াল ধাক্কা দেয় হিমগ্ন সত্ত্বাকে এসব আমার একলা রাত্রির চাঁদের উল্টো পীঠের মাটি, জ্যোৎস্না বিমুখ অ্যান্টিজোন থেকে উঠে আসে। আমি নিজেই অ্যান্টিবডি তৈরি করি। অথচ আমাকে তো কোনো ঘড়িই সময় বলছে না। তার মানে কি ধরে নেবো সময় শেষ? কেউ তো বলছে না তুমি ভুল, তার মানে একটা সময়ের পর আমি ধরে নিতে পারি আমিই ঠিক। আমাকে চলে যেতেই হবে। অপেক্ষার কোন মানে থাকবে না। নাহলে শেষতম ট্রেনটাও ফেল করবো।

সব অক্ষরই মাত্রায় রেখেছি। আজ হঠাৎ প্রচন্ড  নেশাগ্রস্ত আমি সাড়ে তিনহাত ব্যবধানে দূটো স্লিপার রেখে মাঝখানে শুয়ে পড়লাম, ভূমি ফেটে গিয়ে লাভায় তলিয়ে যেতে থাকলাম... এটাকে তুমি তৃষ্ণার ক্যালরি ভাবতে পারো অথবা বিতৃষ্ণার টক্সিনস। আদরটাও যার অনাদরটাও তারই, এটাই যা প্রাপ্তি। প্রেমও যেমন করাল, প্রেমহীনতাও তেমনি আঘাত। আহত এবং আক্রান্ত মানবী আমি

ডাকলে যখন বিকেলের ঘাসে, বিকেলের বাস ধরার আগে, বারবার লৌকিক টেলিকথন বলল অলৌকিক উচ্চার্য। "তাড়াতাড়ি  এসো দেরী হয়ে যাবে" আমি তো দেরী করিনি। বঁধুয়া দ্বার খুললো না বলেই দাঁড়িয়ে আছি দেরীর প্রহরের খুঁটি ধরে। 

কারও কারও জীবনে মাইলস্টোন  এমন বুকভাঙা ভাবে পোঁতা থাকে এবং সেই অ্যান্টিজোন থেকে বেরোনো যায় না কোন অনিবার্য কারণে, এর মতো কষ্ট আর আছে বলে মনে হয় না। স্বপ্নেরাই জুড়ে থাকে সবটা। স্বপ্নপূরণ একটা কল্পনা মাত্র, যাত্রাপথ জুড়ে যেমন মঞ্জিলের স্বপ্ন, গন্তব্য একটা বিশ্বাস মাত্র। 


সোডিয়ামেই

চোখের জল না কি সোডিয়াম, পাখির কূজন নাকি হাহাকার, এরকম কোনো কবিতার নাম বা গান নয়, আসলে নামটা এমনি এমনিই এসে গেলো, যেন "বলে নাম বলে নাম অবিরাম ঘুরে ঘুরে হাওয়া..." 

আসলে মাথুরেই তো শেষ পদাবলী, ভাবসম্মেলন একটা ভার্চুয়াল জার্নি মাত্র। মিথ্যে সাজানো বর্ষাবসন্তের আততি ও আত্মরতি।  ইদানীং দৃষ্টি ও হৃদয়ের অসুখে আছি  বলে দূরদৃষ্টি কমেনি, এবং আমি অনুভব করতে পারছি চোখ একটা দিঘির নাম, যাতে ছোট্ট কুটো পড়লেও মনে হয় কোনো জাহাজ ভিড়লো। আমি অনুভব করতে পারছি, সুখ বা অসুখ যাই হোক, গলতে গলতে জ্বলে যাওয়া মোমবাতির অর্গাজমে শাক দিয়ে  ঢাকা দেওয়া মাছ, আঁশগন্ধের প্রদাহে রেখে দেওয়া থকথকে চন্দন। গার্হস্থ্যনির্মাণের ভিতর অনর্গল মিছিমিছি আউড়ে যাওয়া কানুর পীরিতি চন্দনের রীতি বাঁটিতে সৌরভময়, আসলে এর কোনো বাঁটোয়ারা হয় না বরাদ্দ অক্সিজেন নুনচিনি জল ডেক্সট্রোজ স্যালাইন কিছুতেই অলিন্দ খোলে না।

ইদানীং হৃদয়ের অসুখে আছি। 

আমি ওখানে যাই নি সহস্রাব্দ, অথচ কী করে জানি না ফসিল থেকে গেছে। যেন ফটোশপ থেকে খুবলে আনা কোনো অবয়ব অন্য কোথাও পেস্ট হয়ে গেছে তবু গর্ত থেকে গেছে। সেই গর্তের স্বখাত সলিল থেকে কেউ আমাকে "আলো আলো" বলে ডেকেছিল কি? বলেছিল "তুমি আমার উত্তর ও উত্তরণ"? 

ইদানীং  চোখের অসুখে ভুগছি।

নষ্ট কর্ণিয়া থেকে যা গড়িয়ে নামছে রাত ভোর, আলো? অশ্রু?  অথবা সোডিয়াম... 

শূন্য করে চ্যাঁচাও

যীশুর মুকুটে কতগুলো পেরেক ছিল সে হিসাব রাখে নি উন্মাদ হত্যাকারীরা। শুধু নিরীহ পেরেকসমূহ অনুভব  করেছিল কতটা ক্ষমার বিনিময়ে তারা কতটা রক্ত ঝরিয়েছে। অনুতপ্ত সেই পেরেকসমূহ আজও সভ্যতার গভীরে  নক্ষত্রের কুকুরের মত কাঁদে।
অফুরান দধীচির ২০৬ অস্থির ওপর কেউ মেপে দেবে এককাঠা সন্মান তার জন্য আমৃত্যু বেঁচে থাকতে হবে?
প্রশ্ন  থেকে গেল ওয়েবসাইটে ত্রিশঙ্কু... বাঁচার জন্য  বাঁচা, না কি বাঁচার মত বাঁচা? দুখজাগানিয়া ঘুমভাঙানিয়া স্মৃতির চোখের কোণে কি থকথক করবে ব্যর্থ কান্নার পিচুটি?
নক্ষত্রের কুকুর বারবার  ঘুরে ফিরে আসে... বিভিন্ন  ভঙ্গিমায় দাঁড়ায়...
হে তীক্ষ্ণ গাংচিল! তুমিও থেমো  না! চ্যাঁচাও... নিজেকে শূন্য করে  শিরা ফুলিয়ে  চ্যাঁচাও... ঢেকে দাও আর্ত কেঁউকেঁউ... ছায়াপথ জুড়ে  নিম্ন অন্ত্রের যন্ত্রণায় যোনি ফেটে যাচ্ছে  লুব্ধকের... 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন