কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

মঙ্গলবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

রোসালিয়া দে কাস্ত্রো




প্রতিবেশী সাহিত্য



রোসালিয়া দে কাস্ত্রোর কবিতা                     

(অনুবাদ : জয়া চৌধুরী)  




কবি পরিচিতিঃ

২৪ শে ফেব্রুয়ারী ১৮৩৭ স্পেনের গালিসিয়া প্রদেশে জন্ম হয় গালিসীয় রোম্যান্টিক কবি ও ঔপন্যাসিক রোসালিয়া দে কাস্ত্রোর। ঊনবিংশ শতকে গালিসিয়ায় বসে কোন মহিলার লেখালেখি করা যে কী ভীষণ দুরূহ কাজ ছিল তা আজকের দিনে বোঝা কঠিন। সারা জীবন তাঁকে আলোড়িত করেছে দরিদ্র  শ্রেণীর দুঃখ। বিশেষত মহিলাদের স্বাধীনতায় আমূল বিশ্বাসী ছিলেন তিনি। ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সারা জীবন সোচ্চার থেকেছেন তিনি।  তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কান্তারেস গাইয়েগোস’ বা ‘গালিসীয় সঙ্গীত’ প্রথম  প্রকাশের  দিনটি গালিসীয় সাহিত্য দিবস হিসাবে আজও পালিত হয় স্পেন দেশে। ‘আ মি মাদ্রেঃ’ বা ‘মায়ের প্রতি’, ‘লা আইখা দে মার’ বা ‘সমুদ্রকন্যা’  ইত্যাদি তাঁর  উল্লেখযোগ্য কীর্তি। ১৮৮৫ সালে প্রয়াত হন এই মরমীয়া কবি।



SOLEDAD (নিঃসঙ্গতা)  

একটি শান্ত নদী, এক সরু ফুটপাথ,
এক নির্জন প্রান্তর ও একটি পাইন গাছ,
আর একটি মরচে পড়া পুরনো সেতু
সেই বিস্তীর্ণ মধুর একাকীত্বকে করছে পরিপূরণ।

নির্জনতা কী? এই পৃথিবীকে পূর্ণ করে তোলার জন্য
কখনও কখনও এক একলা ভাবনাই যথেষ্ট।
আর তাই আজ, সৌন্দর্যে কাতর হয়ে, খুঁজে পেলে
পরিত্যক্ত এই সেতু, নদী, আর একলা পাইন বৃক্ষ।

মেঘ নেই, ফুল নেই ওই যারা ভালবেসেছিল;
এটাই তুমি, আমার হৃৎপিণ্ড দুঃখী কিংবা সৌভাগ্যময়,
যন্ত্রণা ও সুখ তো আগেই হয়ে আছে রেফারি।


UNA VEZ TUVE UN CLAVO (একবার আমার একটা পেরেক ফুটেছিল)

 

একবার আমার একটা পেরেক ছিল

সেটা ফুটেছিল হৃৎপিণ্ডে,

আর আমি আমার ভাল মনেও পড়ে না ওটা সেই সোনার পেরেকটাই

ছিল কী না, কিংবা লোহার অথবা প্রেমের।

শুধু জানি ওটা আমায় বিদ্ধ করেছিল আমূল গহীনে,

আমার এত কষ্ট হয়েছিল উথালপাথাল,

যে আমি সারাদিনরাত ধরে না থেমে কেবল কেঁদে গিয়েছিলাম

মাগদালেন যেমনটি কেঁদেছিলেন প্রবল উন্মাদনায়।

“প্রভু, যা কিছু পারো তুমি সব

একবার ঈশ্বরকে প্রশ্ন কোরো-

আমায় সাহস দাও এক ঝটকায় এমন করে গেঁথে থাকা

পেরেকটাকে উপড়ে ফেলতে পারি।”

আর ওটা ঈশ্বরই দিয়েছিলেন, তাকে উপড়ে ফেলো।

কিন্তু... কে ভেবে থাকতে পারত একথা?... তারপর

আমার আর এমন উথালপাথাল লাগছিল না

জানিই নি আমি সেটা কোন যন্ত্রণাও ছিল কী না;

কেবল জানতাম যে পেরেকটা কোথা ফোটে নি

সেকথা জানি না,

আর হয়ত... হয়ত সেই যন্ত্রণার

একাকীত্বটুকুই ছিল... ভগবান মঙ্গলময়!

এই মরণশীল পাঁক যা ঢেকে রেখেছে আত্মাকে,

এসব কে বুঝবে... ঈশ্বর!...

 

 

NEGRA SOMBRA (কালো ছায়া)

 

যখন ভাবি তুমি পালিয়ে যাও
সেই কালো ছায়া থেকে যা আমায় ঢেকে রাখে,
আপাদমস্তক,
ফিরে ফিরে তা উপহাসের পাত্র করে তোলে আমায়।

যদি ভাবি তুমি চলে গেছ,
যার আড়াল থেকে উঁকি দাও তুমি সেই সূর্যের কাছেই চলে গেছ,
এবং তুমি নিজেই সেই নক্ষত্র যা ঝিকমক করে,
এবং তুমিই সেই ঝড় যে আমায় হাওয়ায় উড়িয়ে নিয়েছ।

যদি ওরা গান গায়, তুমিই সেই যে গান গেয়েছে,
ওরা যদি কাঁদে, তুমিই সে যে কেঁদেছ,
এবং নদীর কলস্বর তুমি
এবং রাত আর ভোর।

সব কিছুর মাঝে তুমি থাকো এবং তুমিই তো সর্বস্ব,
আমার জন্য আমার নিজস্ব কালজামের ভেতর,
কখনও আমায় ফেলে যেও না তুমি,
আমার সেই ছায়াটি যা চিরকাল আমায় আশ্চর্য করে চলে।



 

 




0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন