চেনা মানুষের গু
পিনাকী সেন
‘চেনা লোকের গু-কে পৃথিবীতে সবচেয়ে ঘেন্না করি’। অনুপম লিখেছিল। অনুপম অসন্তুষ্ট হতে পারে। ক্ষুব্ধ, বিরক্তও। অনুমতি না নিয়েই উদ্ধৃতি কোট করে দিলাম। তবু সত্যটা স্বীকার করি। পুরো লেখাটার বিশেষ কিছুই এখন আর তেমন মনে নেই। বাক্য-বন্ধটি ছাড়া। দোষ অবশ্যই আমার, আমার অপটু স্মৃতির। শুধু অনুপম লিখেছিল বলেই ক’দিন ধরে মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে, ‘চেনা মানুষের গু ...’
সন্দীপদার মতো লোক আমি দেখিনি। ঘেন্না বলতে প্রায় কিছুই ছিল না। বলত, ‘সবই তোর মনে, যেমন দেখাবি তেমন’। নামখানা থেকে ফিরছি। ফেরার পথে জানতাম পরের স্টেশন কাকদ্বীপ আসলেই ভিড় থৈ থৈ। শিঙাড়া খেতে খেতে, ভাঙা শিঙাড়ার হলদেটে আলুর টুকরো বসার সিটে এমনভাবে সেঁটে দিয়েছিল, সঙ্গে নাক ভ্রূ কুঁচকে অব্যর্থ অভিনয়, সারা ট্রেনে ঠাসা ভিড় সত্ত্বেও আমাদের ধারে কাছে কেউ ঘেঁসে নি, দিব্যি হাওয়া খেতে খেতে ফাঁকা সিটে পুরো সময়। বলেছিল ‘দেখলি শব্দ বর্ণ গন্ধ সবই মনে, ভালো মন্দ বিচার, পুরনো সংস্কার’। ফাঁকা বুলি নয়। প্রমাণও পেয়েছি বহুবার। একবার সামার ভ্যাকেশনের পর সবাই মেসে ফিরেছি, কেউই বাথরুমে ঢুকতে পারছিলাম না। প্যানের মধ্যে কোন্ শালা কী ফেলেছে, আটকে গেছে, মলে জলে মাখামাখি থৈ থৈ। সন্দীপদা সটান গিয়ে হাত ঠুকিয়ে দিয়েছিল। বদমাইশি করে কেউ একটা আধলা ইট ফেলে রেখেছিল প্যানের গর্তে।
সন্দীপদাকে খুব গুরু মানতাম। সঙ্গে থাকতে থাকতে অনুভব পালটে গিয়েছিল। সেরিব্রাল অ্যাটাকের পর বাবা তখন একেবারে শয্যাশায়ী। বিছানাতেই যাবতীয় সংসার। মা’র ঘেন্না বরাবরই বেশি। বাবার বেলাই নয়, ছোটবেলায় আমিও যখন প্যান্ট নোংরা করে বাড়ি ফিরতাম, বকাবকি করতেন, নাকে কাপড় চাপা দিয়ে শাওয়ারের নিচে দাঁড় করিয়ে দিতেন ঠায়। অফিস যাওয়ার আগে বাবার বেডপ্যান আমিই সাফ করে দিয়ে যেতাম, কোনো কো্নোদিন আয়া না আসলে। বিছানা চাদর নোংরা করে ফেলতেন বাবা কখনও সখনও, অশক্ত শরীরে চেপে রাখতে না পেরে। চেপটে লেপটে জামাকাপড় একাকার। যত্ন করে সাবান ডেটল দিয়ে সাফ করে দিয়েছি। সমস্যা লাগে নি। বাবার চিরকালই কন্স্টিপেশন। খুব কসরৎ করে সাপোজিটারি দিয়ে তবে ক্লিয়ার হতো। সময় লাগত। শুয়ে থেকে থেকে অবস্থা আরও শোচনীয়, হাঁটা নেই চলা নেই। অস্বস্তিতে থাকতেন, বুঝতে পারতাম। মনে পড়ে শেষ মুহূর্তেই বোধহয় পুরোটা হাল্কা হতে পেরেছিলেন। একেবারে নরমাল, আরামে অসাড়ে, ঠিক যেমনটা চাইতেন। সুখী মানুষদের যেমনটা হয়। বেশ পুরুষ্টু টানা লম্বা অনেকখানি, আয়রন টনিক খেতেন বলে কুচকুচে কালো মখমল। অনুপম..., চেনা মানুষের গু.., ‘পৃথিবী থেকে কোনো বর্জ্যই বয়ে নিয়ে যেতে নেই অচিনে’। সন্দীপদা বলত।
পিনাকী সেন
‘চেনা লোকের গু-কে পৃথিবীতে সবচেয়ে ঘেন্না করি’। অনুপম লিখেছিল। অনুপম অসন্তুষ্ট হতে পারে। ক্ষুব্ধ, বিরক্তও। অনুমতি না নিয়েই উদ্ধৃতি কোট করে দিলাম। তবু সত্যটা স্বীকার করি। পুরো লেখাটার বিশেষ কিছুই এখন আর তেমন মনে নেই। বাক্য-বন্ধটি ছাড়া। দোষ অবশ্যই আমার, আমার অপটু স্মৃতির। শুধু অনুপম লিখেছিল বলেই ক’দিন ধরে মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে, ‘চেনা মানুষের গু ...’
সন্দীপদার মতো লোক আমি দেখিনি। ঘেন্না বলতে প্রায় কিছুই ছিল না। বলত, ‘সবই তোর মনে, যেমন দেখাবি তেমন’। নামখানা থেকে ফিরছি। ফেরার পথে জানতাম পরের স্টেশন কাকদ্বীপ আসলেই ভিড় থৈ থৈ। শিঙাড়া খেতে খেতে, ভাঙা শিঙাড়ার হলদেটে আলুর টুকরো বসার সিটে এমনভাবে সেঁটে দিয়েছিল, সঙ্গে নাক ভ্রূ কুঁচকে অব্যর্থ অভিনয়, সারা ট্রেনে ঠাসা ভিড় সত্ত্বেও আমাদের ধারে কাছে কেউ ঘেঁসে নি, দিব্যি হাওয়া খেতে খেতে ফাঁকা সিটে পুরো সময়। বলেছিল ‘দেখলি শব্দ বর্ণ গন্ধ সবই মনে, ভালো মন্দ বিচার, পুরনো সংস্কার’। ফাঁকা বুলি নয়। প্রমাণও পেয়েছি বহুবার। একবার সামার ভ্যাকেশনের পর সবাই মেসে ফিরেছি, কেউই বাথরুমে ঢুকতে পারছিলাম না। প্যানের মধ্যে কোন্ শালা কী ফেলেছে, আটকে গেছে, মলে জলে মাখামাখি থৈ থৈ। সন্দীপদা সটান গিয়ে হাত ঠুকিয়ে দিয়েছিল। বদমাইশি করে কেউ একটা আধলা ইট ফেলে রেখেছিল প্যানের গর্তে।
সন্দীপদাকে খুব গুরু মানতাম। সঙ্গে থাকতে থাকতে অনুভব পালটে গিয়েছিল। সেরিব্রাল অ্যাটাকের পর বাবা তখন একেবারে শয্যাশায়ী। বিছানাতেই যাবতীয় সংসার। মা’র ঘেন্না বরাবরই বেশি। বাবার বেলাই নয়, ছোটবেলায় আমিও যখন প্যান্ট নোংরা করে বাড়ি ফিরতাম, বকাবকি করতেন, নাকে কাপড় চাপা দিয়ে শাওয়ারের নিচে দাঁড় করিয়ে দিতেন ঠায়। অফিস যাওয়ার আগে বাবার বেডপ্যান আমিই সাফ করে দিয়ে যেতাম, কোনো কো্নোদিন আয়া না আসলে। বিছানা চাদর নোংরা করে ফেলতেন বাবা কখনও সখনও, অশক্ত শরীরে চেপে রাখতে না পেরে। চেপটে লেপটে জামাকাপড় একাকার। যত্ন করে সাবান ডেটল দিয়ে সাফ করে দিয়েছি। সমস্যা লাগে নি। বাবার চিরকালই কন্স্টিপেশন। খুব কসরৎ করে সাপোজিটারি দিয়ে তবে ক্লিয়ার হতো। সময় লাগত। শুয়ে থেকে থেকে অবস্থা আরও শোচনীয়, হাঁটা নেই চলা নেই। অস্বস্তিতে থাকতেন, বুঝতে পারতাম। মনে পড়ে শেষ মুহূর্তেই বোধহয় পুরোটা হাল্কা হতে পেরেছিলেন। একেবারে নরমাল, আরামে অসাড়ে, ঠিক যেমনটা চাইতেন। সুখী মানুষদের যেমনটা হয়। বেশ পুরুষ্টু টানা লম্বা অনেকখানি, আয়রন টনিক খেতেন বলে কুচকুচে কালো মখমল। অনুপম..., চেনা মানুষের গু.., ‘পৃথিবী থেকে কোনো বর্জ্যই বয়ে নিয়ে যেতে নেই অচিনে’। সন্দীপদা বলত।
Bhalo laglo! -- Sujoy
উত্তরমুছুনধন্যবাদ...
উত্তরমুছুন