কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

বুধবার, ১৩ মার্চ, ২০১৩

অরুণাভ ঘোষ

অলিখিত


যা খুশি তাই লিখবে বলে আদিত্য বসেছিল তার টেবিলে। কাগজ কলম নিয়ে। সন্ধ্যাবেলা ঘরের সব আলো নিভিয়ে শুধু টেবিল ল্যাম্পটা জ্বেলে দিয়েছিল। সাদা কাগজের উপরে রাখা কলম। এদিক থেকে গড়িয়ে দিলে ওদিকে যায়। ওদিক থেকে গড়িয়ে দিলে এদিকে আসে। কাগজটাকে খুব উজ্জ্বল লাগে টেবিল ল্যাম্পের জোরালো আলোয়।

আঙুল দিয়ে কলমটাকে কাগজের উপরে ধরলে দারুণ ছায়া পড়ে। কিছুক্ষণ ছায়া দিয়ে ছবি বানায় আদিত্য। তারপরে আবার চুপ করে সাদা কাগজের দিকে তাকিয়ে থাকে। বাংলা আর ইংরাজী বর্ণমালার প্রচুর অক্ষর তাদের আগের আর পরের যতিচিহ্ন সমেত খেলা করে যায় কাগজের উপরে। আদিত্যর মনে হয়, এগুলো সব ঐ কলমের নিব থেকে বেরোবার জন্য অপেক্ষায় বসে। সীমিত অক্ষর, যতিচিহ্ন দিয়ে আরো সীমায়িত। তবু সীমাহীন শব্দ। কথা শেষ হয়ে গেলেও আরো কত শব্দ পড়ে থাকে? আদিত্য ভাবতে থাকে। Words with their heavy body of meanings...

আদিত্যর গল্প লিখতে ইচ্ছে করে। সুদর্শনার জীবনের একটি সকাল নিয়ে। একটি সকাল, যখন সে আদিত্যর সঙ্গে দেখা করার জন্য খুব ভোর থেকে প্রস্তুতি নিয়েছিল। একটি সকাল, যখন সে সব প্রতিবন্ধকতা অস্বীকার করে এসে দাঁড়িয়েছিল ইউনিভার্সিটির গেটে। একটি সকাল, যেদিন আদিত্য পৌঁছতে পারেনি।

হঠাৎ কাগজটাকে খুব ছোট মনে হয় আদিত্যর। কলমটাকে খুব কৃপণ। সব কথাতেই যতিচিহ্ন লাগে কি? কাগজটার প্রতি কেমন যেন একটা করুণা হয় তার। টেবিল ল্যাম্প নিভিয়ে ঘরের অন্য আলোগুলো জ্বালিয়ে দেয় সে। কাগজটাকে খুব যত্নে ভাঁজ করে। তারপর সেটাকে জানালা গলিয়ে ফেলে দেয়। অক্ষম অকিঞ্চিৎকর কাগজ আর কোনোদিন দরকার হবে না বলে মনে হয় তার!


1 কমেন্টস্:

  1. সব বিখ্যাত কবিদের কবিতা রয়েছে | ব্লগ থেকে লেখা পড়তে চোখের খুব কষ্ট হয়| তবু আমার কয়েকজন প্রিয় কবির কবিতা পড়া হল | দিশারী মুখোপাধ্যায়

    উত্তরমুছুন