হাওয়া-ভুক
লোকটা পাগলাটে, ক্ষয়াটে। উসকোখুসকো চুল-দাড়ি আর হলদেটে হাসি নিয়ে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে দেখছিল আমাদের। একটু দূরে বৌ’টা বরং গোছানো। শুকনো কাঠ-পাতা জ্বেলে হ্যান্ডিলিয়ামের তোবড়ানো হাঁড়িতে কিছু একটা ফোটাচ্ছিল। স্থির চোখে ফ্যানা গুনছিল।
রবিবারের মজলিশে আমরা ক’জন ধূমপায়ী তখন রাস্তার মোড়ে। খাদ্যসামগ্রীর সাম্প্রতিকতম আগুন-দাম নিয়েই আলোচনার সূচনা। ‘শালা জিনিস-পত্রের কী দাম বেড়েছে রে, হু হু করে মাল বেড়িয়ে যাচ্ছে। এবার কত ডি.এ বাড়ছে, কিছু শুনলি?’ ‘তোরা তো সব পোষ্যপুত্র, সাধারণ মানুষগুলো কী করে দিন কাটাচ্ছে একটু অন্তত ভাব।’, ‘সরকার তো চেষ্টা করছে, কন্ট্রোলে আলু চাল...’। ‘ঢপের চপ’। সমীরণের হাত থেকে পোটেটো চিপ্সের প্যাকেটটা ছিনিয়ে নিল অনুপম। ‘বিশ্ব জুড়ে মন্দা... ইকোনমিক সাইকেল’। ‘যত সব চোর চোট্টা’। আমাদের মন্তব্যগুলোর মতো চিপ্সের প্যাকেটটাও অনেকক্ষণ ধরে হাওয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছিল এ হাত থেকে ও হাত। কেউই কব্জা করতে পারছিলাম না। এবার আবার আমার হাতে। লুফে নিলাম গাঢ় নীল রঙ। রঙচঙে ভাবনা। হলুদে বড় বড় লেটারিং। ফ্লেক্সিবেল। যেদিক দিয়েই ধরতে যাই, অন্যদিক ফেঁপে উঠে।
লোকটা এগিয়ে এলো, হাতের তালুতে বিড়ি ঠুকতে ঠুকতে বললে, ‘একটু আগুন হবে?’ সদ্য দু’এক টান দেওয়া ফিল্টার উইলস্টা বাড়িয়ে দিলাম। হাতের বিড়িটা দিব্যি কানের গোঁড়ায় গুঁজে রেখে সিগারেটটাই মুখে দিয়ে দিল লোকটা। হাঁটু মুড়ে বসে এমন মৌজ-টান দেওয়া শুরু করল যেন অমৃত গিলছে। রাগে বিরক্তিতে ঠোঁটের ডগায় চলে আসা খিস্তিগুলো তুলে ঝাড়তে যাব, ঠিক তখনই, ‘এই নিন ব্লেড’। যত্ন করে কাগজে মোড়া আধখানা ব্লেড আমাদের দিকে এগিয়ে দিল লোকটা। আলতো করে ব্লেডটা চালিয়ে দিতেই চিপ্সের মোড়কটা ফাঁসল। এক দঙ্গল হাওয়া ভক্ করে বেড়িয়ে গেলে ,নিচের কোণে একটুখানি পোটেটো। এত বড় প্যাকেটটা শুধু হাওয়া গুঁজে চালিয়ে দিয়েছে!
‘ঠোঙা যেমন হাওয়ায় ভরো, খিদে পেলে খাও বিড়ি। জুটলে খাওয়া মুখশুদ্ধি, মুখ দিয়েছেন হরি’।
হাসতে হাসতে ফুঁকতে ফুঁকতে সে বলে চলল, ‘বৌটার জন্য শুধু কষ্ট হয়, বড় প্যান প্যান করে, বিড়ি খাওয়া শিখতে পারল না এখনও। কী করে বুঝাই, বিড়ির এখনও তেমন দাম বাড়ে নি’।
পরে একা একা অনেক ভেবেছি, লেখক হলে, ‘চিপ্সের প্যাকেট আর আধপেটা পেট’ -- এই শিরোনামে কী দারুণই না একটা কবিতা বা গল্প হতে পারত...
লোকটা পাগলাটে, ক্ষয়াটে। উসকোখুসকো চুল-দাড়ি আর হলদেটে হাসি নিয়ে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে দেখছিল আমাদের। একটু দূরে বৌ’টা বরং গোছানো। শুকনো কাঠ-পাতা জ্বেলে হ্যান্ডিলিয়ামের তোবড়ানো হাঁড়িতে কিছু একটা ফোটাচ্ছিল। স্থির চোখে ফ্যানা গুনছিল।
রবিবারের মজলিশে আমরা ক’জন ধূমপায়ী তখন রাস্তার মোড়ে। খাদ্যসামগ্রীর সাম্প্রতিকতম আগুন-দাম নিয়েই আলোচনার সূচনা। ‘শালা জিনিস-পত্রের কী দাম বেড়েছে রে, হু হু করে মাল বেড়িয়ে যাচ্ছে। এবার কত ডি.এ বাড়ছে, কিছু শুনলি?’ ‘তোরা তো সব পোষ্যপুত্র, সাধারণ মানুষগুলো কী করে দিন কাটাচ্ছে একটু অন্তত ভাব।’, ‘সরকার তো চেষ্টা করছে, কন্ট্রোলে আলু চাল...’। ‘ঢপের চপ’। সমীরণের হাত থেকে পোটেটো চিপ্সের প্যাকেটটা ছিনিয়ে নিল অনুপম। ‘বিশ্ব জুড়ে মন্দা... ইকোনমিক সাইকেল’। ‘যত সব চোর চোট্টা’। আমাদের মন্তব্যগুলোর মতো চিপ্সের প্যাকেটটাও অনেকক্ষণ ধরে হাওয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছিল এ হাত থেকে ও হাত। কেউই কব্জা করতে পারছিলাম না। এবার আবার আমার হাতে। লুফে নিলাম গাঢ় নীল রঙ। রঙচঙে ভাবনা। হলুদে বড় বড় লেটারিং। ফ্লেক্সিবেল। যেদিক দিয়েই ধরতে যাই, অন্যদিক ফেঁপে উঠে।
লোকটা এগিয়ে এলো, হাতের তালুতে বিড়ি ঠুকতে ঠুকতে বললে, ‘একটু আগুন হবে?’ সদ্য দু’এক টান দেওয়া ফিল্টার উইলস্টা বাড়িয়ে দিলাম। হাতের বিড়িটা দিব্যি কানের গোঁড়ায় গুঁজে রেখে সিগারেটটাই মুখে দিয়ে দিল লোকটা। হাঁটু মুড়ে বসে এমন মৌজ-টান দেওয়া শুরু করল যেন অমৃত গিলছে। রাগে বিরক্তিতে ঠোঁটের ডগায় চলে আসা খিস্তিগুলো তুলে ঝাড়তে যাব, ঠিক তখনই, ‘এই নিন ব্লেড’। যত্ন করে কাগজে মোড়া আধখানা ব্লেড আমাদের দিকে এগিয়ে দিল লোকটা। আলতো করে ব্লেডটা চালিয়ে দিতেই চিপ্সের মোড়কটা ফাঁসল। এক দঙ্গল হাওয়া ভক্ করে বেড়িয়ে গেলে ,নিচের কোণে একটুখানি পোটেটো। এত বড় প্যাকেটটা শুধু হাওয়া গুঁজে চালিয়ে দিয়েছে!
‘ঠোঙা যেমন হাওয়ায় ভরো, খিদে পেলে খাও বিড়ি। জুটলে খাওয়া মুখশুদ্ধি, মুখ দিয়েছেন হরি’।
হাসতে হাসতে ফুঁকতে ফুঁকতে সে বলে চলল, ‘বৌটার জন্য শুধু কষ্ট হয়, বড় প্যান প্যান করে, বিড়ি খাওয়া শিখতে পারল না এখনও। কী করে বুঝাই, বিড়ির এখনও তেমন দাম বাড়ে নি’।
পরে একা একা অনেক ভেবেছি, লেখক হলে, ‘চিপ্সের প্যাকেট আর আধপেটা পেট’ -- এই শিরোনামে কী দারুণই না একটা কবিতা বা গল্প হতে পারত...
এই মন্তব্যটি লেখক দ্বারা সরানো হয়েছে।
উত্তরমুছুন‘সরকার তো চেষ্টা করছে, কন্ট্রোলে আলু চাল...’। ‘ঢপের চপ।' সমীরণের হাত থেকে পোটেটো চিপ্সের প্যাকেটটা ছিনিয়ে নিল অনুপম। ‘বিশ্ব জুড়ে মন্দা... ইকোনমিক সাইকেল’। ‘যত সব চোর চোট্টা।' আমাদের মন্তব্যগুলোর মতো চিপ্সের প্যাকেটটাও অনেকক্ষণ ধরে হাওয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছিল এ হাত থেকে ও হাত। কেউই কব্জা করতে পারছিলাম না। এবার আবার আমার হাতে। লুফে নিলাম গাঢ় নীল রঙ। রঙচঙে ভাবনা। হলুদে বড় বড় লেটারিং। ফ্লেক্সিবেল। যেদিক দিয়েই ধরতে যাই, অন্যদিক ফেঁপে উঠে।
উত্তরমুছুনকিছু শব্দ বাদ গেছে দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে দ্বিতীয় লাইন থেকে, যা হবে লিখে দিলাম,