কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

বুধবার, ১৩ জুলাই, ২০২২

সুরঙ্গমা ভট্টাচার্য

 

কবিতার কালিমাটি ১১৯


রবীন্দ্রনাথ ও আমি

 

যদি বলি রবীন্দ্রনাথ কদম ফুল ভালবাসতেন

ভালবাসতেন মাছভাজা খেতে

গরমে শান্তিনিকেতন

আর শীতকালে কালিম্পং যেতেন

কী রকম যেন সত্যি মনে হবে

পাশাপাশি শুয়ে থাকবে সওদাগর ও প্রকৃতিপ্রেমিক

বিদগ্ধজনেরা মাথা নাড়বেন

সাধু সাধু রবে ভরে উঠবে চারিদিক

তাঁর কাছ থেকে আংটি পেয়েছি কিনা সেটাও কেমন রহস্য রহস্য

তিনি আমাকে নিয়ে কোনো কবিতা লিখেছেন

কিম্বা এঁকেছেন কিনা কিছু পোর্ট্রেট

এসবও কেমন গোপন গোপন

তাঁকে নিয়ে অমৃতার সঙ্গে আমার কাজিয়া

এতো এখন সর্বজন বিদিতই

এসবই তো আমায় প্রতিষ্ঠা দিয়েছে

তদুপরি আমি সুন্দরি

ধনীর ঘরনী

আমি তাকে ভানুদাদা ডাকতাম

হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন

আমি লেডি ক্লিওপের্ট্রা বলছি...

 

হে মোর চিত্ত

ভোরের একটু আগেই শুরু হয়েছে পালাগান

বাঁশরী বাজছে

আমার একলা আকাশ বদলে যাচ্ছে ক্রমশ

তোমার কাছে এসে বন্দিশ ধরেছেন খাঁসাহেব

আজ আবার জোব্বা চড়িয়েছেন গায়ে কবিগুরু

তার ভারতীতে বসন্তোৎসব হোক না হোক উৎসব তো হচ্ছেই

নিকেতনের চারিদিকটা দেখে আসতে হবে

চারিদিকে কতটা জঞ্জাল জমা হল তার হদিশ একটা চাই। ব্লুপ্রিন্ট দিতে হবে প্রাক্তন ছাত্রদের। নন্দলাল, ও নন্দলাল কলাভবনে ছড়িয়ে থাকা ইতিউতি তোমার ছাত্ররা কই! চটপট ডাক দাও তাদের। সবাইকে এখনও ধরনীতে আটকে ফেলেনি সিওটুর দল অথবা

পাঁচিলে আটকে দেয়নি চায় পিপাসু গেরুয়া ফেনিল ঢেউ।

জঞ্জাল সাফ করতে হবে।

সবাই জানে আমার কোনও শিক্ষার ডিগ্রি ছিল না কখনও,

তবু নাইট ত্যাগ করেছি আমি

একে যদি বিদগ্ধরা শিক্ষা বলেন তাহলে তা ছিল প্রথাভাঙা প্রতিবাদের, স্বপ্রণীত

দেশের জন্য প্রথাবহির্ভূত এই শিক্ষার আয়োজন করেছি নিজের মত করে। তৈরি করেছি অবারিত শিক্ষালয়। নন্দলাল, ও নন্দলাল আর একবার তুলি ধর তো যা লাঙলের ফলার মত কর্ষণ করুক এই সমাজ সংসার ও সারবত্তাহীন রাজনীতি। মোহর গান গাও গান, জীবনের গান। ভেঙে দাও এ বাঁধন। শিক্ষাঅঙ্গনের চারিদিকে গজিয়ে ওঠা রাষ্ট্রের প্রাচীর। রঙের উৎসব হোক আমার শিক্ষাঙ্গনে। ফেরাও সে মুক্তির প্রাঙ্গন। হে আমার ছাত্ররা এসো সবাই, ভেঙে ফেলো এই ভয়াল ফ্যাসিবাদের সব আক্রোশ। এসো, দেখ আমার কষ্টের সাধনা যেন বিফলে না যায়। হে আমার উত্তরসূরীবৃন্দ আটকাও এই ধ্বংসলীলা। আমাকে তোমাদের মন থেকে বিস্মৃত করে ফেলার এই প্রয়াস ব্যর্থ করে দাও। রথী ও বৌমা কোথায় তোমরা এসো এসো সবাইকে নিয়ে তৈরি করো ব্যরিকেড।

সবার রঙে রঙ মেলানোর দিন আজ।

ভোরের রাগিণী বেজে উঠেছে..

হৃদয়ে বাঁধতে হবে রাঙা রাখির ডোর

ঘুম ভেঙে ব্যরিকেড তৈরির শপথ খুঁজছি আমিও।

সামিল হতে হবে আমাদের।

 

হে মোর চিত্ত পূণ্য তীর্থে জাগোরে ধীরে

এই ভারতের মহা মানবের সাগরতীরে।

 

মাইক্রো উদ্ভিদ

 

দরজাটা বন্ধ কেন?

আসলে আম, জাম, কাঁঠালের দেশে

মুখ লুকিয়ে শাল পিয়ালেরা...

অহংকারি সেগুন কার অপেক্ষায়?

নাকি অপেক্ষা শেষ

ফিরিয়ে দেবার বাহানা শুরু

মন বলে যদি কিছু থাকে অথবা হৃদয়

মস্তিষ্ক থেকে পিটুইটারির নির্য্যাস

জীববিজ্ঞানে মেটামরম্ফোসিস

আনবে জেনেও

সবে অমাবস্যা আজ

শুক্ল পক্ষের একাদশী আসতে

এখনো এগারো দিন বাকি...

শ্রাবণী তিথি কিন্তু সামনে

ভরা দিঘির বুকে

প্রথমার চাঁদনির ছোঁয়া

কাল সাড়ে নটার পর

উপচাবে দুধলি সন্ধ্যায়

 

প্রিয়বরেষু

 

তুমিই আমাকে আম জামের ছায়া পেতে

পাঠ নিতে বলে ছ

আমি তারপর থেকে

ক্রমাগত খুঁজে চলেছি

নিষ্ঠাবান আম বা জামের বন

সবটাই

উদ্ভিদবিদ্যা

যদিও

ওরা তাও তোমার সম্মতির  অপেক্ষায়

তারপর থেকেই

আম জাম কাঁঠালেরা

তুমি চাইলে প্রস্তুত

অবিশ্বাসী চোখের চাউনি

আমার দিকে ছুঁড়ে

 

কী মুন্ডমালিনী কিম্বা

জয় জয় শিব শম্ভু...

অথবা আইনস্টাইন, সত্যেন বোস

ভরা চোখ মেলে আমার দিকে তাকিয়ে

অবলা সংশয়ে,

শনশন হাওয়া বলে

আঃ হাত ছাড়ো আচার্য দুঃখিত হবেন হয়তো বা...


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন