কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

বুধবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২২

তৈমুর খান

 

কবিতার কালিমাটি ১১৬


স্মৃতির সাইকেল

       

স্মৃতির সাইকেল গড়ে যাচ্ছে

                              গড়ে গড়ে যাচ্ছে

কাঁচা রাস্তার ধূসর কলতলায়

                               এসে থামছে

নতুন শাড়ির গন্ধ , জলভরা কলসির

                                 আওয়াজ

বেণী দুলছে, বেণী দুলছে

               সরস্বতী, এভাবে এলে আজ?

 

উদাস সাইকেল চেয়ে আছে—

পিপাসা পেয়েছে তোমার?

না! না!

পিপাসারা লুকিয়ে আছে

ভেতরে ভেতরে তাদের কান্না!

শুনতে পায় না কেউ আর?

 

কলসি চলে যাচ্ছে, কলাপাতা রঙ্

                        কোমরে দুলতে দুলতে...

কিছু বলতে?

না! না!  সেরকম কিছু নয়—

অথচ দুর্দান্ত ঝড় বইছে বিস্ময়

চলতে চলতে সাইকেল পড়ে যাচ্ছে

                                রাস্তায়

দূরে কোকিল ডাকছে

ঝরে পড়ছে বসন্তের গান

সাইকেল কথা বলছে একা একা

সাইকেলের অশ্রুজলে ভেজা গূঢ় অভিমান।

 

এই বৃহন্নলা শহর

 

দু একটা মশকরা বেশ হাসতে হাসতে যাচ্ছে

তাদের নিপতিত ছায়ায় প্রজাপতি উড়ানের মায়া

রঙ্ ফলছে সকাল সকাল

 

বিস্ময় চিহ্নের কাছে এসে দাঁড়ালাম

ঘোর লাগে, উদ্বেগের ধাক্কায়

দম আটকে যাবার উপক্রম

 

কিছুটা আলোর কেশর ঘোড়ার উদ্ধত স্ফুলিঙ্গ

মৈথুনের জাবর কেটে ফেরে

পোশাকের ছবিতে আকাশ নামে

আকাশে চাঁদের প্রসন্ন লীলা

 

দেখতে দেখতে সময় সংবাদ

ঘুরে যাচ্ছে।

সময়ের মজানে এই বৃহন্নলা শহর

যানবাহনের চোখে ধাতব প্রাজ্ঞতা লেপে দেয়

করুণ সংঘাতে সূর্য এলোমেলো

রোদের ভাষায় ডেকে ডেকে যায়

 

গর্জন কুড়িয়ে ঘরে ফিরি

বোধের দেওয়ালে বেজে ওঠে তালি

জেগে ওঠে বৃহন্নলা ভোর

 

উপলক্ষ

 

একটু বেঁচে থাকা আর একটু হলুদ মাখা

শুধু বিবাহের আয়োজন —

তোমাতে আমাতে সঙ্গম

গঙ্গা-যমুনা হয়ে বয়ে যাওয়া

আর কিছু নেই প্রয়োজন...

 

শুভেচ্ছা

 

ঘরে ভাত নেই

তোমার পাঠানো শুভেচ্ছা খাই আজ

ভাত নয়, শুভেচ্ছা দেয় সুশীল সমাজ!

 

মুখ

 

পৃথিবী জুড়ে ধর্মরা ঘর বানাচ্ছে

পৃথিবী জুড়ে মানবেরা মরে যাচ্ছে

বহুদিন পর কোনো প্রত্নসন্ধানী

এই পথে আয়না নিয়ে এলে

ইতিহাসেরা মুখ দেখবে:

 

কোথাও রক্তাক্ত মুখ

কোথাও  বিদ্বেষের নৃশংস গর্জন…

 

জাগরণ

 

ভোর হবে বলে রাত জেগে আছি

জাগরণগুলি তবে কার কাছে শোবে?

এক অদ্ভুত বিশ্বাসে

আমাদের কষ্টগুলি

ঘর ঘর জাগরণ পোষে!

 

শেষরাতের স্বপ্ন

 

বিচক্ষণ ধ্বংসের রাতে

মুঠো খুলে দেখি

কার ছোঁয়া লেগে আছে হাতে!

 

পরিপ্রেক্ষিত

 

মুখ ভার।

      ঘনঘোর এ-মনের আকাশের নিচে

                                   নষ্ট ময়ূরগুলি

                                                নাচে।

 

নিষিদ্ধ রমণী

 

কার হাত আমাকে রোজ টানে!

নিষিদ্ধ রমণী

দেখা হয় স্বপ্নের বাগানে।

 

 

 

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন