কবিতার কালিমাটি ১১৬ |
বিপরীত যাপন
পরিত্যক্ত জীবনের
উপর জন্মানো দূর্বা, সবুজ-সতেজ
আমি দুঃখ পেলে
ওরা তিরতির করে কেঁপে ওঠে খুশিতে
খুব অবাক লাগে।
আমাকে শুষে
কী চমৎকার জীবনের বিপরীত যাপন!
ওদের হাসি সুন্দর,
নড়ে ওঠা সুন্দর
সংগত কারণেই
আমার দুঃখ সুন্দর।
আমরা মিলেমিশে
কেবল এই সৌন্দর্যটাই উপভোগ করতে পারি।
জীবন্ত মোনালিসা
মৃতদের সংসারে
থাকি, ঝিমঝিম আধমরা ঘোরে। মরা ঘর, পোড়া ইটের দেওয়াল, মৃত গাছের আসবাবে ভরা। কৃত্রিম
মরা বাতাস, কখনো বা দেহের কোথাও পাই জীবিত সঙ্গীর মৃত নিঃশ্বাস। কিছু মরা ফুল চেয়ে
থাকে ফুলদানি থেকে।
শুধু দেওয়ালে
ঝুলে থাকা ছবিটা, ‘মোনালিসা’, তাকে আমার জীবন্ত মনে হয়।
উদাস প্রণয়কালে,
একজোড়া পলাতকা চোখ দেখায়, দেখি-
মাংসল চিত্র
মোনালিসা দাঁড়িয়ে দুয়ারের কাছে। আমায় ডেকে ফেরে, হৃদয় বাঁচানোর পথে প্রান্তরে।
বিশ্বাস
সাজানো সংসারে
অলিখিত গাঢ় অনটন
আমাদের রোজগার
একপিঠে টাকার মতোন,
দুজনের দেহজুড়ে
অভাবের শাণিত ছোরা
নিজেদের খুন
করে হই রোজ খুনি আমরা।
নিবেদন
এই যে, শহুরে
মনের মানুষ…
হৃদয় খুঁড়ে
প্রেম ফলাতে জানিস?
আমি গাঁয়ের
চাষী মেয়ে, ওই বুকটা জুড়ে চাষ করতে দিবি?
বুকটা আমায়
দিবি? মূল্য দেবো।
ওই কঠিন বুকের
পাহাড় কেটে ঝর্ণা দেবো
বনফুলের গন্ধ
দেবো
শুকিয়ে দেবো
জমানো ব্যথার নীলচে নদী।
খুব কষ্ট করে,
নষ্ট করে সাজিয়ে দেবো
নতুন আশায় বাঁচতে
দেবো
স্বপ্ন দেবো,
শক্তি দেবো, ছোট্ট ভুলে শাস্তি দেবো
রাগ ভাঙাবো,
মান ভাঙাবো, তুমুল প্রেমের গান শোনাবো।
নিয়ম করে রাখবো
খেয়াল, অনিয়মে যত্ন নেবো
প্রেমের তাপে
পুড়িয়ে দেবো, মুড়িয়ে দেবো খুব আদরে।
আরও দেবো মস্ত
হৃদয়, মদ্য দীঘি
ক্লান্ত হলেই
ডুবে যাবি গভীর অতল
সাঁতরে যাবি
এপার-ওপার ডুব সাঁতারে
তৃষ্ণা পেলেই
দীঘির জলে চুমুক দিবি।
বল না, খুব
আপন করে আমার হবি!
তুই কেবলই আমার
হবি!
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন