কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

রবিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

তৌহীদা ইয়াকুব

 

কবিতার কালিমাটি ১১৫


দিনগুলো

 

কিছু লেখা হলো না,

জানালার কাছে বসে ছিন্ন মেঘের মতো

মুছে গেছে অনর্থক দিন।

এবং দিনের পর আরো অনেক দিন।

মাঝে মাঝে শুধু ছাইরঙা সময়ের ভেতর

পুরনো বারান্দা উঠে আসে।

শামখোল পাখির শান্ত বিলের মতো।

 

কোন হাতছানি নেই, ছিলো না,

থেমে আছে কবেকার স্মৃতিহীন ছেঁড়াখোঁড়া রাত।

অতীতের মুখগুলো সরে যাচ্ছে দূরে

চারপাশ নিঃশ্চুপ,

বিড়ালটা আরো কাছ ঘেঁষে ঘুমায়।

 

অথচ আমারো ভাল লেগেছিলো

বইমেলা, ঝলমলে বিকেল

কবিতা ও খদ্দরের পাঞ্জাবি।

 

নভেম্বর ও বেগুনী অর্কিড

 

আমাদের সহজাত দিন শেষ হয়ে যায়

এবার কথার বাইরে সময় , সময়ের বাইরে

পুলক ও স্পর্শ।

 

কন্ঠশীলনের যথার্থতা নিয়ে

ললিত বাকবাকুমে

আসক্তি জড়ানো চরাচর।

 

কখনও জীবন একা বলে, একা একা চলে

কখনও জীবন বাহুল্য, মুখরিত উৎসবে।

 

অনাদরের সাথে বিদ্বেষ মিশে গেলে

অচেনা ভাষার মতো পড়ে থাকে

পারস্পরিক যোগ।

গভীর থেকে ভেঙ্গে গেলে আকুলতা

নিরর্থক ও কর্কশ স্বর শোনা যাবে।

 

অসুখের দিন শেষ হয়ে এলে

নভেম্বরের প্রতিটি ফোঁটায় হিম নেমে আসে

হাওয়ার চুমুতে ঠোঁট নিয়ম ভুলে গেছে

চিমনিতে অরণ্য পোড়ে আর

ফরাসি সুগন্ধি নিয়ে জানালায়

দুলে উঠে বেগুনী অর্কিড।

 

অনুজ্জ্বল অবস্থান

 

নির্ভার কিছু খুঁজে নিয়ে নিঃশ্বাসে বাঁচো

মূঢ় নয়  তবু হয়ে থাকা, কতটা সময়?

 

ঘাড়ে ধরে বসিয়ে দেয়,

বসা মানে বোধের গহিন

বারমাস, ঋতুদের চেনা গন্ধে বেভুল 

ওখানে মিহি শব্দে ফুটে উঠা ভোর

ওখানে রাত্রির গায়ে শিশির বিষাদ,

মুখোশের মুখে অবিরাম খেদ

আঙুলে আঙুলে মাপা

বৃত্তান্ত ও বিভেদ।

 

নদী ও বায়োগ্রাফি  

 

নান্দনিক নামগুলোর একটি কীর্তনখোলা 

হায় ও নদী আমার ছিলো না কখনো

কর্ণফুলীতে ফ্রক পরা বাচ্চা মেয়েটার মুখের ছবি

স্রোতের টানে লম্বা হতে হতে হারিয়ে গেছে।

 

তারপর ছোট বড় অনর্থক ঢেউ অভিজ্ঞান

যমুনার লোণা সন্তরণ আলপথ ধরে  

বেরিয়েছে পায়ে পায়ে পৃথিবীর পথে।

 

নভেম্বরে এসে বদলে গেলে সময়

হিম হাওয়ার স্রোতে কেবলই রাত্রি নেমে আসে

হাজার বছরের গির্জার শেষ ধ্বনি

বেজে উঠে থেমে গেছে শিশির ফোটা অন্ধকারে।

“লা তেত”এর পাশে যেটুকু আলো ও আনন্দ

তা দিয়ে সাজিয়েছি আমাদের ব্যক্তিগত জমিন,

জানালা সমেত সুষম গৃহস্থের মাধবীকুঞ্জ   

একদিন এসবও ছেড়ে যেতে হবে দূরে

এ দুর্মর সত্যও মনে মনে বলিনি আমাকে।

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন