কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

রবিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

তথাগত চট্টোপাধ্যায়

 

সমকালীন ছোটগল্প


ছল

 

রাত পৌনে দশটা ক্যাবটা বাঁদিকে ঘুরতেই প্রবাল দেখল দুরন্ত গতিতে ছুটে চলেছে গাড়ির পর গাড়ি।

ক্যাবের মধ্যে প্রবালের মা স্থির হয়ে কিছুতেই বসে থাকতে পারছেন না ভারসাম্যহীন তাঁর শরীর। অবসন্ন এবং প্রায় অচেতন অবস্থা। জড়িয়ে যাচ্ছে বাক্যও। হাতে ধরা জলের বোতলটা কখন যেন গড়িয়ে পড়েছে নীচে। প্রবাল ড্রাইভারকে বলল, একটু তাড়াতাড়ি চালিয়ে ভাই। দেখছেন তো মায়ের অবস্থা।

রাস্তার ওপারে অনেকগুলো সুপার-স্পেশালিটি হাসপাতাল। সবই বেসরকারি। ঠিক পাশাপাশি না হলেও তাদের পারস্পরিক দূরত্বও খুব বেশী নয়। আলোয়  আলোয় ভরে আছে হাসপাতাল বিল্ডিং-এর লম্বা, ঋজু কাঠামো। ইউ-টার্নের  সামনে আসতেই ট্রাফিকের বাতি লাল হল। প্রায় মিনিটখানেকের ধাক্কা। প্রবালের মা  ক্যাবের সিটের উপর ক্রমশনুয়ে পড়ছেক্যাব চালক জিজ্ঞাসা করল, কোন হাসপাতালে যাবেন দাদা?

প্রশ্নটা প্রবালের বিভ্রান্তি বরং বেড়ে গেল। এদিককার হাসপাতালে এর আগে কখনো আসেনি সেআসার কোনও প্রয়োজনও হয়নি তবে শুনেছে এখানে ঢুকলে নাকি মানুষের সর্বস্বান্ত হতে বেশি সময় লাগে না। সে চালককে বলল, সামনে যে হাসপাতাল দেখবেন সেখানেই চলুন।

এমন ঘটনা যে ঘটতে পারে প্রবাল ভাবেইনি। দীর্ঘ সময় ধরে মায়ের রক্তচাপ এবং সুগার নিয়ন্ত্রণের ওষুধ চলছে। সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ে ডাক্তার পরিতোষ দত্তর কাছে নিয়মিত চেকআপ করাতে নিয়ে যায় প্রবাল। সুচিকিৎসক ডাক্তার দত্ত বেশ অভিজ্ঞ ফিজিসিয়ান। তাঁর চিকিৎসায় মায়ের রক্তচাপ, সুগারের মাত্রা অনেকটাই স্থিতিশীল। তবুও কখনও কখনও সুগার বেড়ে যায়। ওঠানামা করে রক্তচাপও। ডাক্তার দত্ত তখন ওষুধের মাত্রা পাল্টে দেন বা ওষুধ পরিবর্তন করে দেন। তাঁর কঠোর নির্দেশে খাওয়াদাওয়ার নিয়ন্ত্রণ তো বটেই, বাড়িতে সুগার পরিমাপের মেশিন কিনে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হয়। কিন্তু জানুয়ারির শেষের দিকে মায়ের সুগার হঠাৎ বেড়ে যায়। দাদার অসুস্থতার খবর পেয়ে ডাক্তার দত্ত তখন জলপাইগুড়িতে - নিজের গ্রামের বাড়িতে গেছেন। কবে ফিরবেন ঠিক নেই। প্রবাল বাধ্য হয়েই ঢাকুরিয়ায় ডাক্তার ডি.কে. পাত্রের ক্লিনিকে নিয়ে গেছিল মাকে। ডাক্তার পাত্রের খবরটা দিয়েছিল অফিসেরই এক সহকর্মী। রক্তচাপ এবং সুগারের ওষুধ বদলে দিয়েছিলেন তিনি। পরিবর্তিত সেই ওষুধই চলছিল বেশ কদিন। কিন্তু আজ সন্ধের পর হঠাৎই মা শারীরিক শক্তি হারিয়ে ফেলেন। ততক্ষণে অবশ্য প্রবাল অফিস থেকে ফিরে এসেছে। অবস্থার ক্রমাবনতি দেখে হাসপাতালে নিয়ে আসাই উচিৎ মনে করেছে সে।

ট্র্যাফিক সিগন্যাল সবুজ হতেই বুলেটের মত ছিটকে বেরল ক্যাব। চালক বলল, বাঁদিকেই আগরওয়াল সুপার-স্পেশালিটি হাসপাতাল। ওখানেই চলুন, এমারজেন্সিতে নিয়ে যাচ্ছি। প্রবাল মাথা নেড়ে সায় দিল।

রাত হলে এই রাস্তায় সব গাড়িই অত্যন্ত দ্রুতবেগে চলে। পেছনে ধেয়ে আসা গাড়ির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রবালের ভাড়া করা ক্যাবও ছুটছিল প্রচন্ড জোরে।  শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সিটে বসে উত্তেজনা আর উদ্বেগে কুলকুল করে ঘামছে প্রবাল

এমারজেন্সির সামনে গাড়ি পৌঁছতেই ঝট্‌ করে গাড়ির দরজা খুলে প্রবাল বের  হল। মাকে ক্যাবের ভেতরে রেখেই দৌড়ে গেল এমারজেন্সি বিভাগে। দেওয়ালে টাঙানো বিশাল ঘড়িতে তখন রাত প্রায় দশটা। হাসপাতাল চত্বর স্বাভাবিকভাবেই অনেক ফাঁকা, শুনশান হয়ে এসেছে। চারপাশে এলোমেলোভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে তিন-চারজন লোক। তাদের চোখে মুখে উত্তেজনার স্পষ্ট ছাপ। বোঝা যাচ্ছে এদের কোনও নিকটাত্মীয় নিশ্চয়ই এখানে ভর্তি আছে। ঝকঝকে মার্বেলের মেঝেতে ময়লার চিহ্নমাত্র নেই। দেওয়ালে উচ্চশ্রেণীর সুন্দর রঙ।

এমারজেন্সির দরজা ঠেলে ভেতরে ঢোকে প্রবাল। তিনজন লোক হাল্কা আলোচনায় ব্যস্ত। হাতে তাদের চওড়া সেলফোন। প্রত্যেকের গলা সচিত্র পরিচয়পত্র। তাদেরই একজন এগিয়ে এল জিজ্ঞাসু চোখে। প্রবাল সংক্ষেপে সব বলতেই লোকটা তার দাড়িতে হাত বুলিয়ে দুপাশে মাথা নাড়তে নাড়তে বলল, এই মুহূর্তে এমারজেন্সিতে জায়গা নেই।

কথাটা শুনে প্রবালের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। তীব্র হতাশায় একটু জোরের সঙ্গেই সে বলল, আপনি একবার পেশেন্টের অবস্থা দেখুন। একটা কিছু ব্যবস্থা করে দিন প্লীজ। তা না হলে মাকে বাঁচাতে পারব না।

ডানদিকের চেয়ার বসে থাকা মাঝবয়সী ভদ্রলোক এবার বললেন, কী হয়েছে দিবাকর?

দিবাকর নামের ছেলেটি কিছু বলার আগেই প্রবাল গড়গড়িয়ে সব বলে গেল। দিবাকর আবার বলল, এমারজেন্সিতে কিন্তু একটা বেডও ফাঁকা নেই।

ভদ্রলোক সেকথার উত্তর না দিয়ে প্রবালকে বললেন, কোথায় আপনার পেশেন্ট?

কথায় প্রবাল একটু আশার আলো দেখতে পেল যেন। সোৎসাহে বলল, আমার মা। বাইরে ক্যাবে বসে।

ঠিক আছে। চলুন একবার দেখি।

প্রবাল ছুটে গেল দরজার দিকে। ক্যাবচালক গাড়ির বাইরে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেভদ্রলোক আসতেই সে গাড়ির দরজা খুলে দিল। মায়ের দেহ প্রায় কোলাপ্স করে যাবার মত অবস্থা।

আপনার মায়ের কি মেডিক্লেম করা আছে?

প্রবাল তৎপর হয়ে বলল, হ্যাঁ আছে তো। কর্পোরেট মেডিক্লেম। লোকটি একটু ভুরু কোঁচকালেন। বললেন, একটা ব্যবস্থা করা যায়। কিন্তু আপনি কি পারবেন সামলাতে? এ যা অবস্থা দেখছি তাতে আপনার মাকে আই.সি.ইউ. তে রেখে চিকিৎসা করতে হবে। সুগার ফল্‌ করলে এমনটা হতে পারে, তবে ডাক্তার না দেখলে কিছুই নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। রোগীকে জেনারেল বেডে রাখা ঝুঁকি নেওয়া যাবে না। সমস্ত আনুষঙ্গিক খরচ মিলিয়ে ডেইলি বিশ থেকে তিরিশ হাজার টাকা লাগতে পারে। পারবেন তো?

টাকার অঙ্কটা শুনে প্রবাল শুধু স্তম্ভিত নয়, নির্বাক হয়ে গেল।

কত টাকার কভারেজের মেডিক্লেম আছে আপনার মায়ের?

প্রবাল বলল, দু’লাখ।

ওতে কি হবে? চার পাঁচদিনে টাকা শেষ হয়ে যাবে। আমরা কেউ জানি না ওঁকে কদিন আই.সি.ইউতে রাখতে হবে।

প্রবাল বলল, টাকার জোগান দিতে পারলে কি এমারজেন্সিতে বেড পাওয়া যাবে? এই একটু আগেই তো শুনলাম বেড নেই।

সরাসরি এই প্রশ্নে লোকটি বেশ বিব্রতবললেন, দেখুন ভাই, আপনার সঙ্গে তর্কের সময় আমার নেই। আমরা পরিষেবা তো আর বিনা পয়সায় দিতে পারি না! যা বললাম তাতে যদি সন্মত হন তাহলে অ্যাডমিশনের একটা চেষ্টা করা  যেতে পারে।

বীতশ্রদ্ধ হয়ে প্রবাল ড্রাইভারকে বলল, বেরিয়ে চল ভাই এখান থেকে। পাশে আর কি হাসপাতাল আছে দেখি।

ক্যাবের মধ্যে আধশোয়া অবস্থায় থাকা প্রবালের মায়ের অবস্থার অবনতি হয়েই চলছিল। প্রবল আতঙ্কে কেঁপে ওঠে প্রবাল তেষ্টায় তার গলা শুকিয়ে আসছে। কিন্তু পাশে রাখা জলের বোতল তখন ফাঁকা।

সে চালককে বলল, জলের বোতল আছে নাকি ভাই?

আছে দাদা।

ঠাণ্ডা জল গলায় ঢালল প্রবাল। তেষ্টা মিটল। কিন্তু উদ্বেগ বেড়েই চলল দ্রুত। মাথার পেছনে একটা তীক্ষ্ণ আর তীব্র যন্ত্রণার অনুভূতি টের পাচ্ছে সে এবং সেটা উত্তরোত্তর বাড়ছে।

ড্রাইভার বলল, আর একটু দূরেই সিটি জেনারেল হসপিটাল। চিন্তা করবেন না। একটা উপায় নিশ্চয়ই হবে ওখানে।

খবরের কাগজে প্রবাল পড়েছিল উত্তরবঙ্গের এক নামী হাসপাতাল কলকাতায় তাদের শাখা খুলেছে ‘সিটি জেনারেল হসপিটাল’ নাম নিয়ে। খুব পুরনো নয়। মেরেকেটে বছর দুয়েক হবে হয়ত।

(২)

সিটি জেনারেল হাসপাতালে এত রাতেও পরিষেবা অনেকটাই চালু। ডাক্তার বীরেন সরখেলের তত্বাবধানে মাকে আপৎকালীন বিভাগে ভর্তি করতে পারল প্রবালঘড়ির কাঁটা এগিয়ে যাচ্ছে সামনের দিকে। ক্রমশ ফাঁকা হয়ে আসছে হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগ। কর্তৃপক্ষ প্রবালকে অনুরোধ জানাল রাতে হাসপাতালে থেকে যাওয়ার জন্য

প্রবাল অ্যাডমিশন কাউন্টারের বিপরীত দিকে সোফায় বস। এতক্ষণ সে মোবাইল দেখার সময় পায়নি। সোফায় শুয়ে ফোন বের করে দেখতে পেল চারটে মিসড্‌ কল করে বসে আছে সহধর্মিণী অনন্যা। সব জানিয়ে শেষে প্রবাল বলল, আজ রাতে মেয়েকে নিয়ে একাই কাটাও। কাল সকালে ফিরব।

প্রবালের ক্লান্ত এবং অবসন্ন শরীরে চোখ জুড়ে নেমে আসছিল ঘুম। তবুও নিস্তব্ধ হলঘরে প্রায় জোর করেই প্রবাল জেগে রইল সারারাত।

বিপদ কেটে যাবার আভাস পাওয়া গেল দিন দুয়েকের মধ্যেই। মাকে আই.সি.ইউ-তে ভর্তি করতেই হয়েছিল। ডাক্তার সরখেল বলেছিলেন,  হাইপোগ্লাইসিমিয়া অর্থাৎ রক্তে সুগার মাত্রাতিরিক্তভাবে কমে যাওয়াই এই প্রবীণার প্রাণসংশয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। হারিয়েছিলেন দৈহিক সাম্যাবস্থা। নির্দিষ্ট মাত্রার নিচে নেমে গিয়েছিল পটাশিয়ামের পরিমাণও। ডাক্তার ডি.কে. পাত্রের দেওয়া সুগার এবং প্রেশারের ওষুধ বদলে দিয়েছিলেন ডাক্তার সরখেল। যত বিপত্তি যে ওই ওষুধ খাওয়ার ফলেই হয়েছিল তা আর অস্পষ্ট ছিল না। তবে সিটি জেনারেল হাসপাতালের অনবদ্য পরিষেবা আর পারদর্শিতায় মা চারদিনের মাথায় বেরিয়ে এসেছিলেন আই.সি.ইউ. থেকে জেনারেল বেডে

আগরওয়াল সুপার-স্পেশালিটি হাসপাতাল দাবী করেছিল দৈনিক কুড়ি থেকে তিরিশ হাজার টাকা। সিটি জেনারেল হাসপাতালেদিনে খরচ হল সওয়া লাখের সামান্য বেশী। মেডিক্লেমের সুবিধা থাকায় বেঁচে গেল প্রবালমনে মনে ইশ্বরকে প্রণাম জানিয়েছিল সে

(৩)

এ ঘটনার পর কেটে গেছে চারমাস। ডাক্তার পরিতোষ দত্ত জলপাইগুড়ি থেকে ফিরে আসার পর নিয়মিত ওষুধ আর নির্দিষ্ট সময় অন্তর তাঁর পর্যবেক্ষণে প্রবালের মা অনেক স্বাভাবিক হয়ে উঠেছেন। এই সময় প্রবাল কাজের চাপে বেশ জেরবার হয়ে পড়েরোজ না হলেও প্রায়ই অফিস থেকে বেরোতে রাত সাতটা সাড়ে সাতটা হয়ে যায়। এক বুধবার সে অফিস থেকে বেরিয়ে দ্যাখে তুমুল বৃষ্টি হয়ে চলেছে

জুন মাস। প্রবল বর্ষণ অস্বাভাবিক নয়। ক্লান্ত শরীরে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে আর ভাল লাগছিল না প্রবালেরএক্সাইড মোড় থেকে অনেক কষ্টে একটা ট্যাক্সি পাওয়া গেলেও যাদবপুর পর্যন্ত যেতে প্রায় ডবল ভাড়া দাবী করে বসল চালক। বর্ষণসিক্ত রাতে প্রবাল খানিকটা বাধ্য হয়েই রাজি হয়ে গেল

ট্যাক্সিতে উঠে সিটে হেলান দিয়ে হাত-পা ছড়িয়ে বসল প্রবাল। বাইরে অবিরাম বর্ষণে রাস্তায় জল জমে গেছেমাঝে মাঝেই হচ্ছে ট্র্যাফিক জ্যাম। ঢাকুরিয়ার কাছে গাড়ির গতি আচমকা শ্লথ হয়ে গেল। বৃষ্টির মধ্যে হঠাৎ গাড়ি থামাল ড্রাইভারসামনে কিছু লোকের জটলা। সংবাদ মাধ্যমের একটা বড় গাড়িও দেখা  যাচ্ছে। জনাকয়েক আবার বেশ উত্তেজিত। গাড়ির কাচ নামাল প্রবাল

জনতার কোলাহলের শব্দ এবার স্পষ্ট সে নেমে এল গাড়ি থেকে। ভিজতে ভিজতে সামনে এগিয়ে একজন লোককে সামনে দেখে জিজ্ঞেস করল, কী হয়েছে দাদা এখানে? এত ভীড় কেন?

লোকটি বলল, জানেন না? এখানে একজন ভুয়ো ডাক্তার ধরা পড়েছে যে! আজ সন্ধ্যেয় মদ্যপান করে রোগী দেখতে বসেছিল। একজন পেশেন্টের সঙ্গে অভব্য আচরণ করেছে সে!

প্রবাল স্তম্ভিত। ঘটনাটা তার কাছে রীতিমত অপ্রত্যাশিত। ভুয়ো ডাক্তার? প্রবাল বলল, কী নাম ভাই ঐ ডাক্তারের? জানা গেছে?

জানি না দাদা। আমি এই সবে এলাম।

বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে আর ভিজতে পারছে না প্রবাল। ফিরে এল ট্যাক্সিতে। ড্রাইভারও ট্যাক্সি নিয়ে দ্রুত বেরিয়ে এল ঐ জায়গা থেকে। গাড়িতে বসে রুমালে মোড়া স্মার্ট ফোনটা বের করে প্রবাল চোখ রাখল একটি জনপ্রিয় বাংলা নিউজ চ্যানেলের অ্যাপসে

মোবাইলের স্ক্রিনে বড় বড় অক্ষরে ফ্ল্যাশ নিউজের আকারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ  খবর –

ঢাকুরিয়ায় নিজের চেম্বারে জনৈক রোগীর সঙ্গে মদ্যপ অবস্থায় অভব্য আচরণ  করায় জনৈক ডি.কে. পাত্র গ্রেফতার। জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা গেছে তিনি ভুয়ো ডিগ্রী নিয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসা করছিলেন, তার রেজিস্ট্রেশন নম্বরটিও জাল”…

ট্যাক্সি এগিয়ে যাচ্ছে। মোবাইল থেকে চোখ সরিয়ে প্রবাল তাকিয়ে আছে বৃষ্টিস্নাত শহরের দিকে। এ শহর আর কত অবিশ্বাস, কত প্রতারণা, কত ভণ্ডামির সাক্ষী হবে! মনে পড়ছে ফেব্রুয়ারি মাসের সেই ফেলে আসা রাতে মায়ের জীবন সংশয়ের অবস্থা। তার চোখে চরম বিস্ময়। সামাজিক এই অবক্ষয়ের কথা ভাবতে ভাবতে কার্যত আতঙ্কিত হয়ে পড়ে প্রবাল। তার ক্লান্ত, শ্রান্ত শরীর আরও যেন অবসন্ন হয়ে আসছে


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন