কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

রবিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

প্রদীপ চক্রবর্তী

 

কবিতার কালিমাটি ১১৫


সালভাদর দালির রাহাখরচ জোগাতে গিয়ে

 

একজন অভাবী ছবি। লিলিফুল বিক্রেতা নিজের ক্যানভাস থেকে বেরিয়ে আসে  নিজেকে দৃশ্যের হতে হবে ভেবে।  

নদীর দাঁত দিয়ে ছিঁড়ে নেয় পশুদের রঙ।  

যারা আলোর অবেলায় আলোকে ভঙ্গিমায় পছন্দ করে

তো, এই মুহূর্তে কোন ভঙ্গিমাটি  স্তূপে জমে জমে শেকড়ের উঠানামায় আটকে গেছে?

অভাবী মুখরাটা নিয়ে কয়েক পা হেঁটে গাছ যখন স্থান কাল বদল করে, ভঙ্গিটি শিখে নেয় পাখি। অবিকল যুদ্ধবিমানের পিঠে এসে থামে দৃশ্যটি। ভেঙেচুরে যাওয়া গাছেদের পান্থশালায়

পাখিরা বসলো। উঠলো। জানলা বন্ধ করলো।

পাখিরা উঠলো। কিন্তু বসলো না। পর্দা নামিয়ে দিলো  

একটা অর্ধ সমাপ্ত টিলা। ডেকচেয়ার। শশী বসে আছে নটসম্রাট অহীন্দ্র চৌধুরীর মতো

কর্ক খোলে বিকেলের নদী। তার ওপারে অদৃশ্য, দুর্বোধ্য, চিতাবাঘের মতো ক্লোরোফর্মের ঘোর লাগা বাকি জীবনের শরণার্থী ছায়া...

আর কিছুতেই ক্যানভাস থেকে বেরিয়ে এলো

না...

 

ধ্বনি কুমার ধ্বনি কুমারী

 

ধ্বনির গিঁট কীভাবে খুলতে পারে বধির?

দুপুরের নিজস্ব শব্দে খেলা করছে অঘোর রমণীদের

নীল,

নিরবধি

জড়িপাড়ে --  বুকের ওড়িয়া হাওয়ায়

লাগে গুঁড়োজল,

যে মাথা নুইয়ে রাখে খন্দখানায়

তার স্পর্শে ধ্বনিও কি মনে মনে উচ্চারিত হবে?

 

দৃশ্য এক --- মাছের উপমা নেই

দৃশ্য দুই --- যখন সে ধড়মড় করে উঠে বসতে চাইবে জলের ওপর  

দৃশ্য তিন --- দুপুরে নিঝুম ঢেউ লতাগুল্মময় ঝোপঝাড়

দৃশ্য চার --- এক ধ্বনিহীন সাদাকালো মেশানো নদীর গিঁট ভেঙেছে

স্তব্ধ জ্যামিতির পাশে একা...

মনোমালিন্যের স্থলে

ধ্রুপদীবর্গের শব্দকোষ

কৃপাজীবী ক্লীবের,

শিলাশিল্পে গড়া ছায়াদল

দৃশ্য পাঁচ --- থালার উপর তরমুজ থেকে যেমন জল কাটে

আমার খুনিয়া ছায়ারা কাটছে ম্যুরাল,

অন্ধকার নড়ে উঠলো পাললিকা। হয়তো কোনও একটা গাছের নামে রেল  স্টেশনের নাম...  গুলাবি মিঠাই। লেডি ক্রিসেনথিমাম।

রাধাচূড়া। টমটম গাড়ি...

 

অসুখ

 

(১)

 

নিঃস্ব বুদ্বুদ কুড়োতে গেছে মেঘ,

 

সে কখন আসবে

আপাত বিষের যুগান্তকারী শামিয়ানা টানিয়ে

 

গাছেদের কোটরে পাখিদের চোখে তখন দেয়ালা

 

রোদ্দুরের পিঠে রোদ নিয়ে

ছায়াটি ভেঙে যাচ্ছে চিল চিৎকারে

 

অনেকদূরে ফেলে আসা ফাঁকাবাড়ির

হাড়গোড় বেরোনো

 

রক্তের অফুরন্ত নীলে নেমে

উত্তর দ্রাঘিমার দিকে

কেমন আছি ক্রীতদাস?

 

(২)  

 

ভাঙনে  ভাঙনে একদিন পাখি বুজে আসে

মনের খতিয়ান লুকিয়ে

পাখিদের তিলার্ধ দ্যুতি ফলাকাঙ্ক্ষী  

ন'ড়ে যায় ধীরে

 

শস্যকীট পিষে যায়

মানুষের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে ছেলেবেলা

 

ক্রমশ হাতদুটো হাওয়ার ভূমিকায় খোলে

পাঞ্চালীর বসন

বিদেহী যুবতী কবে উদ্বৃত্ত উড়ে যাবে

আমাদের প্রতিবেশীর শূন্যতা অপ্রাপ্তিবোধে

 

আলোর জুয়া খেলায় বনের পিপাসা

থাকে না…

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন