কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

রবিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

মধুশ্রী সেন সান্যাল

 

কবিতার কালিমাটি ১১৫


অরুণাচলে

 

স্বর্গের রাস্তায়

ছায়াচ্ছন্ন ভাষা

পাহাড়ে-জঙ্গলে

 

সবুজ নকশার

কবেকার খাঁজে

গুল্মবীজ ঘ্রাণ

 

পাইনের ছায়ায়

ঝরনার ফিসফাস

অদ্ভুত ইশারা

 

আকাশ বিহ্বল

স্মৃতির কুয়াশা

উদ্দাম রঙ্গায়

 

সমতলবাসী ওরা

ঈশ্বরের বাড়ি ঘুরে

উপমা, রূপকে

গড়াতে গড়াতে

নামছে নিচে

 

আর

কত

নিচে!

 

পাখি-শাবক

 

ভিনদেশী যেসব পাখি-শাবকেরা

গিয়েছিল ওড়ার কৌশল শিখতে

ফেরেনি নিজের বাড়ি...

আকাশ অচেনা হয়ে আটকে দিল পথ

                            দুনিয়া কাঁপানো  এক ভয়ে

 

দিন গোনে অন্যের কোটর --

আনমনা মেঘের মতো

         বিপন্ন একঝাঁক ইতি উতি ওড়ে...

ক্ষতচিহ্ন আঁকা ভোর

                 দানার অভাব দ্যাখে প্রতি ঘরে ঘরে

খিদের আগুন খোঁটে ম্যাগির প্যাকেট --

ফেরার তাগিদ নিয়ে হাপিত্যেশ ওরা

                                              জমা হয় মাঠে...

যেন ছলকে পড়া জল

                    বিন্দু- বিন্দু মিশে

                                  নিজের ব্যথার কথা বলে --

 

বেখেয়ালি উদাস সময়, তুমি দ্যাখো

অপত্য-স্নেহের যত বালিশের নিচে কান্নানদী...

বরং নক্ষত্রে হাওয়া ভরে

                            পেরিয়ে উজ্জ্বল ছায়াপথ

পাখিদের  পৌঁছে দাও শুশ্রূষার বাড়ি –-

 

প্রতিবন্ধী সময়

 

আকাশের  স্বরলিপি যে ডানায় আঁকা

তুঁতের অবাক গাছ

                     দেখে তার নিমেষ পতন --

অসতর্ক  জমি! নাকি কর্মকাণ্ডে বুঁদ

                          দামাল মেঘের দলে

                                   ডানার আকুতি খোঁজে...

 

হাসপাতালে আটতলার বেড তীব্র যন্ত্রণায় ঢাকা,

দিনের ধূসর রোদ বেয়ে

             ব্যথা আরও নেমে আসে পায়ের গভীরে...

কান্নার শিশির জমা জানলার ওপারে

দূরের ভেরির জল নদীর সীমানা আঁকে --

 

আগস্ট পনেরো, নানা উৎসব আমেজ নিয়ে

দিনভর ফুটবল মাঠে

                       গতিশীল টুর্নামেন্ট খেলে দূরে --

জখম পায়ের গোছ চুরমার বিষাদে

 

অনিবার্য ছিল বুঝি এমন আঘাত!

 

আলোয় গ্রহণ লাগা কাটা-ছেঁড়া ঘরে

পা-দুটো হাওয়ায় ভেসে ভেসে

                             যুদ্ধের দামামা শোনে --

সময় ফিরিয়ে দিলে সার যথারীতি

হাড়ের ইস্পাত কাটে যন্ত্রণা-করাতে...

উপশম ধীরে ধীরে

                        বসে এসে হুইল-চেয়ারে

 

এখন সবাই বাঁচে আতঙ্ক-কামড়ে

সময়ের পাঁক ঘেঁটে ঝিমিয়ে অসুখে

                        প্রতিবন্ধী ইহজন্ম কাটায় এভাবে...

স্বভাবে ভেজাল যত বিশল্যকরণী!

 

      

 

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন