কবিতার কালিমাটি ১০৮ |
জোনস বিচ ও নিঃশ্বাসরেখা
জোনস বিচের পথে ঝরে পড়বার আগে পাতাগুলো আগুনের স্বপ্ন নিয়ে ভাবছে। মৃত্যুর পরেও আগুন থেকে যায়--এ বোধ নিয়ে আমরা আটলান্টিকের অস্থিরতা দেখি। জলের নিচের পাথরগুলো তুমি দেখে ফেলো। যে পথে তোমার নিঃশ্বাস ছড়ানো সে পথ আমাকে চিনিয়ে দাও। আমরা ডুব দিয়ে তোমার নিঃশ্বাসরেখা অনুসরণ করি। মাছের সংলাপ-কৌশল শিখে আমরা ফিরে আসবো ঝিনুকের গুঁড়ো মেশানো সৈকতে--বাতাসে তোমার চুল উড়তে থাকবে নিঃশ্বাসের গতি নিয়ে।
তেত্রিশগুচ্ছ পালক
মেঘের অস্থিরতায় পালক গজাতে থাকে। পালকের সাথে উড়ে চলে আকাশ। মেঘ তোমাকে জেনে গেছে; তেত্রিশগুচ্ছ পালক নিয়ে তুমি উড়ছো আকাশে। আকাশের পথগুলো কৃষ্ণচূড়া জন্মাতে পারে না বলে তোমাকে পাইনি খুঁজে। তোমার পালকে মিশিয়ে রেখো গুলমোহরের রং; আকাশকে নিয়ে আমরা উড়ে যাবো আটলান্টিক অথবা আন্দামানের তীরে। জলের স্বপ্নের ভেতর খুঁজে পাবে গাঙচিলের ক্লান্তিহীনতা।
অধিবাস্তব টোপর
(শিল্পী সোমা সুরভি জান্নাতের এল্ ডোরাডোর বিভাস
অবলম্বনে)
একটি উল্লম্ব রেখা হেঁটে আসে সোনাঝুরি জঙ্গলের পাশে; ইতস্তত শুয়ে-দাঁড়িয়ে থাকা প্রাণীদের গেঁথে নিয়ে মাথায় পরে অধিবাস্তব টোপর। নৈঃশব্দ্যের ভেতর নিসর্গ স্বচ্ছ হয়ে ওঠে। চতুষ্পাদ খুলে দেখায় হৃৎপিণ্ড, সমুদয় ভালভের ভূমিকা। বাঁশ-তালের বিকৃতির ভেতর ফুটে ওঠে ভারসাম্য, ফুল-পাখি-কলার সংসর্গ সৃষ্টি করে স্থৈর্য যা ধ্বসিয়ে দেবার জন্য মানুষ প্রস্তুত। প্রাণীর মগ্নতার ভেতর আরো ঢুকে পড়ি। বাকলের ওপর ব্যালান্স ধরে রাখে কোনো চতুষ্পদ; বস্তুর সাথে তার যোগচেতনা প্রবল হয়ে এলে বাটুলের পশ্চাদ্গামী গতি রচনা করে কয়েল। কয়েল বেয়ে নেমে আসে কাঠবেড়াল--আবর্তমান বৃত্ত পূর্ণ হয় জীবনের সহজতায়। সাঁওতালি শ্রমে ধানরাশি সূর্য হয়ে ওঠে। সূর্যের ভেতর আশ্রিত চাঁদ জেনে যায় ত্রিভুজা সাঁওতাল রমণীর পুরাণকথা।
'তেত্রিশ গুচ্ছ পালক' শিরোনামের কবিতাটিও পরাবাস্তব চিত্রকল্পসজ্জিত। কৃষ্ণচূড়া বোধ হয় রক্তরেখা,পথরেখা বা রোডম্যাপ যা মানব সভ্যতাকে পথ দেখিয়ে দেয় এক মহাসাগর থেকে আরেক মহাসাগরে অগ্রসর হওয়ার। সাদা পালক এত সাদামাটা যে সভ্যতার বিকাশে তা কোনো অবদান রাখতে পারে না। রক্তরেখা একটি স্বীকৃত রোডম্যাপ বটে।
উত্তরমুছুনমোস্তফা তোফায়েল হোসেন।
মুছুনমন্তব্যে আমার নাম বাদ পড়ে গিয়েছিল।
মন্তব্যটিতে আমার নাম আসেনি;সার্ভারে সমস্যা ছিল।
উত্তরমুছুনপ্রতিটি কবিতাই অসাধারণ!খুব ভালো লাগলো উচ্চারণ করে পড়তে।
উত্তরমুছুনমন্দিরা